• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হাজীগঞ্জে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবায় আমূল পরিবর্তন আসছে

প্রকাশ:  ২০ আগস্ট ২০২০, ১৭:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

গ্রামীণ জনপদের প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা দিতে হাজীগঞ্জ উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবায় আমূল পরিবর্তন আসছে। বর্তমান সময়ে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবা একেবারে সর্বস্তরের জনগণের দোরগোড়ায় পেঁৗছে দিতে এই পরিবর্তন আনছে সরকার। ইতিমধ্যে ইউনিয়নগুলোতে অত্যাধুনিক মানের তিনতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ কাজগুলো করতে স্থানীয় সাংসদ মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, ইউএনও, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় দিনরাত কাজ করে চলছেন। ইতিমধ্যে গত সপ্তাহে স্থানীয় সাংসদ দুটি কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের ১০ শয্যা বিশিষ্ট তিনতলা তফুরেন্নেছা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এবং হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নে তিনতলা ভিত বিশিষ্ট ১তলা ভবন তৈরি শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ইতিমধ্যে ১১টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। এই কেন্দ্র ছাড়া উপজেলায় ২১টি কমিউনিটি ক্লিনিক উপজেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে।

সম্প্রতি সরকার জেলার অন্য সকল উপজেলা থেকে হাজীগঞ্জ উপজেলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এখানকার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোকে আধুনিকায়নের কাজে হাত দেয়। যার মধ্যে শুরুতে রয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট আধুনিক মানের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ। এই কেন্দ্রগুলোতে তিন বেড সংযুক্ত করা হবে। এর মধ্যে ১ জন গ্রাজুয়েশন ডিগ্রিধারী চিকিৎসক, ১ জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, দারোয়ান/নিরাপত্তা প্রহরী/আয়া রাখা হবে। পুরাতন ভবনগুলোতে একই জনবল ও একই সেবা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। এই ভবনগুলো নির্মাণ শেষে চিকিৎসাসেবা আরো সহজতর হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে রয়েছে। এর মধ্যে হাটিলা পূর্ব ইউনিয়নের ভবনের কাজ শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে। হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নে এমন ভবনের কাজ চলমান রয়েছে।

আধুনিকমানের তিনতলা ভবন বিশিষ্ট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে প্রথম ধাপে তৈরি হবে ৫টি কেন্দ্র। এগুলো হচ্ছে : বাকিলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, রাজারগাঁও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র এবং গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। এর পরেই পর্যায়ক্রমে একই নকশায় উপজেলার বাকি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলো তৈরি করা হবে। প্রতিটি ভবন নির্মাণে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। অর্থ বরাদ্দ শেষে আধুনিক মানের এই ভবনগুলোর টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। স্ব-স্ব ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পুরাতন ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলা হবে।

 


ভবনগুলোর নকশার মধ্যে রোগীদের জন্য ৩টি বেড, অপারেশন থিয়েটার, চিকিৎসক, ওয়ার্ড, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকের কক্ষ, ফার্মেসী, ব্রেস্টফিডিং রুম, কিচেন, স্টোর, ওয়েটিং রুম, মাল্টিপারপাস রুম, সীমানা প্রাচীর, বাগানসহ নানান সুযোগ সুবিধা থাকবে।

গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নে 'তফুরুন্নেছা ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র'টি ৫০ শতাংশ জমির উপর ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ক্লিনিক ও ডরমেটরী সুবিধায় চার তলা ভিতে নির্মাণ করা হয়। এই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রায় ২০টি গ্রামের ৫০-৬০ হাজার অধিবাসী স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারবে।

নব-নির্মিত দুইটি ভবনেই অপারেশন থিয়েটার, চিকিৎসক, ওয়ার্ড, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা ও পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শকের কক্ষ, ফার্মেসী, ব্রেস্টফিডিং রুম, কিচেন, স্টোর, ওয়েটিং রুম, মাল্টিপারপাস, সীমানা প্রাচীর ও বাগান রাখা হয়েছে। এই ভবনগুলো পরিচালনা করবে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর কাজ শেষ হলে রোগী কিংবা চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট কারো নূ্যনতম সমস্যা হবে না। এ ছাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নরমাল ডেলিভারী ও সিজারের হার একেবারে কমিয়ে আনতে আমরা যে ইনোভেশন নিয়ে কাজ করছি, সেই কাজ করা সহজতর হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া বলেন, গত সপ্তাহে মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি স্যার যে দুটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন, তা আমাদের জন্য মাইলফলক। এমপি স্যারের নিরলস প্রচেষ্টার কারণে হাজীগঞ্জে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।