• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ইউএইচএফপিও চাঁদপুর সদরের কোভিড-১৯ হেল্পলাইন ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে

প্রতিদিন অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ লাইভে আসছেন

প্রকাশ:  ২৩ এপ্রিল ২০২০, ০৯:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

অনির্দিষ্টকালের জন্যে চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে কীভাবে নিজেকে, নিজের পরিবারকে এবং সমাজকে রক্ষা করা যায়, সে লক্ষ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ 'কোভিড-১৯ হেল্পলাইন ইউএইচএফপিও চাঁদপুর সদর' নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলেছে। এ পেজের মাধ্যমে প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্রে চিকিৎসকগণ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ পর্যায়ক্রমে লাইভে এসে জনগণকে সচেতনতামূলক নানা পরামর্শ এবং চিকিৎসা বার্তা দিয়ে থাকেন। গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে এ কার্যক্রমটি এখনো চলমান রয়েছে। করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে চিকিৎসকদের এই লাইভ প্রোগ্রামটি অভাবনীয় সাড়া পেয়েছে। অসংখ্য মানুষ এ লাইভ প্রোগ্রামটি প্রতিদিন দেখছে এবং শেয়ার করছে।


বর্তমান পরিস্থিতিতে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে একটি অতীব প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চালু করায় জনগণের এমন অভূতপূর্ব সাড়া বলে মন্তব্য করছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সচেতন মানুষ। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সাজেদা বেগম পলিনের পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে সময়োপযোগী এ কার্যক্রমটি শুরু হয়। গত ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে এখনো পর্যন্ত এই লাইভ প্রোগ্রামটি চলে আসছে। চাঁদপুর সদর ইউএইচএফপিও ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন ছাড়াও সহকারী সার্জন ডাঃ বেনজির আহমেদ, ডাঃ নূর হোসেন বান্না, ডাঃ মুহাম্মদ মাসুদ রানা, ডাঃ সাগর কান্তি ম-লসহ অন্যান্য চিকিৎসক এ লাইভে এসে জনগণকে করোনাভাইরাস বিষয়ে সচেতন করে তুলছেন এবং নানা পরামর্শ দিচ্ছেন। এঁরা ছাড়াও অতিথি চিকিৎসক হিসেবে এ পর্যন্ত যাঁরা ভিডিওবার্তা পাঠিয়ে এ লাইভে অংশ নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ নন্দলাল সূত্রধর, আড়াইশ' শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও করোনাভাইরাস সংক্রান্ত ফোকালপার্সন ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল এবং একই হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডাঃ নূর-এ-আলম অরণ্য।

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নামে যে মহামারী বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী চলছে, এর থেকে চাঁদপুর জেলাও মুক্ত নয়। এই জেলা করোনায় সংক্রমিত জেলা বলেই জেলাটি এখন লকডাউন অবস্থায় আছে। লকডাউনকালে তো বটেই, এর আগেও অর্থাৎ ২৪ মার্চ থেকেই চাঁদপুর জেলায় অনেকটা কারফিউর মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে যায়। প্রশাসন থেকে নির্দেশনা দেয়া হয় কোনো মানুষ অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা-বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না। আর দোকানপাটের মধ্যে শুধুমাত্র ঔষধের দোকান এবং কাঁচাবাজার ও খাবারের দোকান ছাড়া অন্য সব দোকান, মার্কেট, শপিং মল বন্ধ থাকবে। পরবর্তীতে এটি আরো কঠোর করা হয় বিকেল ৫টার পর থেকে। অর্থাৎ বিকেল পাঁচটার পর থেকে শুধুমাত্র ঔষধের দোকান ছাড়া অন্য সবধরনের দোকান বন্ধ থাকবে। এছাড়া সকল ধরনের অফিস-আদালত (ব্যাংক ছাড়া), শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ দেয়া হয় আরো আগেই। এই বন্ধ দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ নিজ নিজ জায়গায় থাকবে, অতীব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা-বাড়ি থেকে বের হবে না। এই ঘরে থাকা মানুষগুলোর জন্যেই কোভিড-১৯ হেল্পলাইন ইউএইচএফপিও চাঁদপুর সদর নামে ফেসবুক পেজ চালু করা হয়। এই পেজে লাইভে এসে চিকিৎসকগণ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বেঁচে থাকতে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে থাকেন এবং আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে যেসব অসুখ সাধারণত হয়ে থাকে, সে অবস্থায় কী করণীয় এবং হাসপাতালে না এসে ঘরে বসেই যে চিকিৎসা সেবা পেতে পারে তার জন্যে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবার লাইভে যারা সংযুক্ত থাকেন তাদের থেকে করা প্রশ্নেরও তাঁরা উত্তর দেন।

এই কার্যক্রমটি এতোটাই সাড়া পাচ্ছে যে, একেকটি লাইভে ৬০-৭০ হাজার ভিউআর হিসেবে দেখা যায় এবং শেয়ারও হচ্ছে দুই হাজারেরও অধিক। এতেই বুঝা যাচ্ছে মানুষ এর দ্বারা কতটুকু উপকৃত হচ্ছে।

এ বিষয়ে ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন বলেন, এ উদ্যোগটিতে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এর দ্বারা আমরা সত্যিই অনুপ্রাণিত হচ্ছি। এটি অব্যাহত থাকবে। আমি আমার প্রিয় সহকর্মী এবং সিনিয়র চিকিৎসকগণের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ যে, তাঁরা আমার এই কার্যক্রমটিতে অত্যন্ত চমৎকারভাবে সহযোগিতা করছেন এবং নিজেরা এতে অংশ নিয়ে এটি প্রাণবন্ত রাখছেন।