যে কারণে খাবারের প্রতি আপনার অ্যালার্জি বাড়তে পারে
এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের শিশুদের মধ্যে খাবারের মাধ্যমে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার হার আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।
গত আগস্টে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় ৬ বছরের এক মেয়ে দুগ্ধজাত খাবারের অ্যালার্জিতে মারা যায়।
এ ছাড়া সম্প্রতি তিল এবং চিনাবাদাম খাওয়ার কারণে দুই ব্রিটিশ শিশুর মৃত্যুর খবর বিষয়টিকে নতুন করে সামনে আনে।
গত কয়েক দশকে পশ্চিমা দেশগুলোয় এ অ্যালার্জি প্রবণতা বেড়ে যাওয়া চোখে পড়ার মতো।
উন্নয়নশীল দেশে এ অ্যালার্জির হার কম হলেও একেবারে যে নেই তা বলা যাবে না।
জরিপে দেখা গেছে, গ্রামের চাইতে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যেই এই অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
আর ব্যস্ত নগরে কারো খাবার নিয়ে এ ধরণের বাধা নিষেধ সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে বোঝা হতে পারে।
অ্যালার্জির হার কেন বাড়ছে এবং একে মোকাবেলা করার উপায় খুঁজতে তা নিশ্চিত করতে গবেষকরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
অ্যালার্জি হওয়া না হওয়া সাধারণত আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।
শরীরের এ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত পরিবেশের নানা উপাদানের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। যেটা খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া।
শরীরের এ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বলা হয় অ্যালার্জেন। এ অ্যালার্জেন যদি কখনও সংক্রমিত হয় তা হলে নানা ধরনের অ্যালার্জির উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন- ত্বকের লাল রঙ ধারণ, চামড়ায় লাল চাকা চাকা হয়ে যাওয়া, বা শরীরের কোন অঙ্গ ফুলে ওঠা। সবচেয়ে গুরুতর ক্ষেত্রে- বমি, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট কিংবা অ্যানফিল্যাকটিক শক দেখা দিতে পারে।
শিশুরা কয়েক ধরণের খাবারে অ্যালার্জিক হয়ে থাকে সেগুলো হলো-
দুধ, ডিম, চিনাবাদাম, বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন- কাঠবাদাম, আখরোট, পাইন বাদাম, ব্রাজিল নাটস, পিক্যান্স ইত্যাদি; তিল, মাছ, বিভিন্ন খোলওয়ালা মাছ। যেমন- চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক ইত্যাদি।
করণীয় কী?
আমাদের শরীর ঠিক যে প্রক্রিয়ায় অ্যালার্জির সঙ্গে মোকাবিলা করে ঠিক একইভাবে এটি পরজীবী সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।
তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বাড়ানোর প্রতি নজর দিতে হবে।
এ ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যার কারণে শরীরের অ্যালার্জি প্রতিরোধের ক্ষমতা বেড়ে যায়।
বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পায় না। এর প্রধান কারণ হল তারা সূর্যের তাপে কম সময় ব্যয় করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ভিটামিন ডি অভাবের হার গত এক দশকে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে।
সচেতনতা ও চিকিৎসা
বর্তমান বিশ্বে খাদ্য অ্যালার্জির কোন প্রতিকার নেই। এটি পুরোপুরি নির্ভর করে খাদ্যাভ্যাসের নিয়ন্ত্রণের ওপরে।
যার অন্যতম শর্ত হল সংবেদনশীল খাবারগুলো এড়িয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে প্রতিটি খাবারের সঠিক লেবেলিং বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন গবেষকরা।
যদি আক্রান্ত হয়েই যান তাহলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নেয়াকেও তারা গুরুত্ব দিয়েছেন।
তবে প্রাথমিকভাবে অ্যালার্জি সংক্রমণ নির্ণয় করা একটি চ্যালেঞ্জ।
খবর বিবিসি