৩২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে তেল
মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ধকল কাটিয়ে চাঙ্গা তেলের বাজার। দফায় দফায় দাম বেড়ে বিশ্ববাজারে প্রায় তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে অপরিশোধিত তেলের দাম।
বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে গত নভেম্বর থেকেই। গত এক সপ্তাহে সাম্প্রতিককালের মধ্যে তেলের দামে বড় উত্থান হয়েছে। এতে ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর অর্থাৎ ৩২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠেছে তেলের দাম।
বিশ্ববাজারে গত এক সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে সাড়ে ৪ শতাংশের ওপর। ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের ওপর। হান্টিং অয়েলের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনার প্রকোপ ভয়াবহ রূপ নিলে গত বছরের ২০ এপ্রিল বিশ্ববাজারে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দরপতনের মধ্যে পড়ে তেল। সেদিন প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ঋণাত্মক ৩৭ ডলারের নিচে নেমে যায়।
রেকর্ড এ দরপতনের পরই অবশ্যই তেলের দাম বাড়তে থাকে। রেকর্ড দরপতনের ধকল সামলে গত বছরের বেশিরভাগ সময় প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৪০ ডলারের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছিল।
কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং লিবিয়ার তেল উত্তোলন বৃদ্ধি পাওয়ায় মাঝে বিশ্ববাজারে তেলের বড় দরপতন হয়। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে অপরিশোধিত ও ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়।
এ পতনের ধকল কাটিয়ে গত বছরের নভেম্বর থেকে আবার তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। অবশ্য প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৫০ ডলারের নিচে থেকেই ২০২০ সাল শেষ হয়।
নতুন বছরের শুরুতেও তেলের দামের এ বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যায়। কয়েক দফা দাম বেড়ে করোনার মধ্যে প্রথমবার ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৬০ ডলারে উঠে আসে। এর মাধ্যমে মহামারি শুরু হওয়ার আগের দামে ফিরে যায় তেল।
এরপর ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে তেলের দাম বাড়ার প্রবণতা। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম দশমিক ৫৬ ডলার বেড়ে ৬৯ দশমিক ৩৮ ডলারে উঠে এসেছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ।
অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি দাম বেড়েছে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের। শেষ কার্যদিবসে দশমিক ৩০ ডলার বেড়ে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৭১ দশমিক ৬১ ডলারে উঠেছে। এতে গত এক সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ২১ শতাংশ। মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
অন্যদিকে গত এক সপ্তাহে ৪ শতাংশ বেড়ে প্রতি গ্যালন হান্টিং অয়েলের দাম ২ দশমিক ১২ ডলারে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে মাসের ব্যবধানে হান্টিং অয়েলের দাম ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়েছে।