মস্তিষ্কের মানোন্নয়ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিল ৩৯০০ শিক্ষার্থী


আলোহা বাংলাদেশের আয়োজনে শুক্র ও শনিবার (১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে (আইসিসিবি) অনুষ্ঠিত হলো ১৭তম জাতীয় পর্যায়ের অ্যাবাকাস ও মেন্টাল অ্যারিথমেটিক প্রতিযোগিতা ২০২৫ এবং আলোহা ৩য় কনভোকেশন। দুদিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় সারা দেশের ৬০০টির বেশি স্কুল থেকে ৩ হাজার ৯০০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন, যারা আলোহা বাংলাদেশের বিভিন্ন শাখায় এ কোর্সটিতে যুক্ত আছেন এবং ৫৫০ জন আলোহা গ্র্যাজুয়েট সম্মাননা গ্রহণ করেন। ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে আলোহা বাংলাদেশ। শিশুরা কত দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সমাধানে পৌঁছাতে পারে, এই পরীক্ষার উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ৫ মিনিটের মধ্যে ৭০টি জটিল গাণিতিক সমাধান করতে বলা হয় এবং বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই উল্লেখিত সময়ের মধ্যে নির্ভুলভাবে গাণিতিক সমাধান করে ফেলে। আয়োজনের প্রথম পর্ব জাতীয় সংঙ্গীতের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আলোহা মেন্টাল অ্যারিথমেটিকের ফাউন্ডার মি. লোহ মুন সাঙ। এরপর শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানানোর পর শুরু হয় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা। মোট ৪টি ব্যাচে প্রায় ৩৯০০ শিক্ষার্থী এ ম্যাথ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
দ্বিতীয় দিন প্রথম পর্বে প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আলোহা মেন্টাল অ্যারিথমেটিকের ফাউন্ডার মি. লোহ মুন সাঙ। বিশেষ অতিথি ছিলেন আলোহা ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর মিস কিরণ মাতওয়ানি। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আলোহা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সাইফুল করিম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হায়দার চৌধুরী এবং ডিরেক্টর মো. শামসুদ্দিন টিপু। স্বাগত বক্তব্যে আলোহা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, আলোহা বাংলাদেশ গত ১৮ বছর ধরে মস্তিষ্কের মানোন্নয়নে কাজ করছে। যেহেতু বাচ্চাদের ১৫ বছর পর্যন্ত কগনেটিভ নলেজের বিকাশ ঘটে তাই বেশি বেশি এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি তাদের জন্য খুবই জরুরি।
তিনি আরও বলেন, বাচ্চারা পুরস্কার পাক বা না পাক তাদের অংশগ্রহণটাই মুখ্য। আজকের এ সফলতার জন্য শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে তিনি সাধুবাদ জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আলোহা মেন্টাল অ্যারিথমেটিকের ফাউন্ডার মি. লোহ মুন সাঙ বলেন, আমরা চাই পুরো পৃথিবী জুড়ে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিমত্তার সৃষ্টিশীল বিকাশ ঘটুক। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রতি বছর বাংলাদেশের এত ছেলে-মেয়েদের অংশগ্রহণ আমাকে বিস্মিত করে, অনুপ্রাণিত করে। আমরা চাই এ মেধাবী মুখগুলো ভবিষ্যতে দেশের উন্নতিতে অংশগ্রহণ করুক। শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেয়া হয়। এরপর আলোহা জিল্যান্ড শিক্ষার্থীদের পারফর্মেন্স, প্রেজেন্টেশন এবং সার্টিফিকেট দেয়া হয়। শেষে ফলাফল ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জাতীয় পর্যায়ে উন্নীত শিক্ষার্থীরা এ বছরের অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। এ বছর প্রতিযোগিতাটির আন্তর্জাতিক আসর বসবে কম্বোডিয়ায়। এদিন বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে আলোহা বাংলাদেশের ৩য় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে গ্রোক লার্নিং প্রেজেন্টেশন, শিক্ষকদের সার্টিফিকেট প্রদান এবং প্রায় ৭৫০ জন আলোহা গ্র্যাজুয়েট সম্মাননা গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের হেলথ কেয়ার পার্টনার উত্তরা ক্রিসেন্ট হসপিটাল এবং ইভেন্ট অ্যান্ড ষ্ট্র্যাটিজিক পার্টনার হিসেবে থাকছে হ্যাশট্যাগ কমিউনিকেশন লিমিটেড। দীর্ঘ ১৮ বছরের পথচলায় বর্তমানে আলোহা বাংলাদেশের ৬৫টি শাখায় প্রায় ২৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এই কোর্সে যুক্ত আছে। ২০০৬ সালের মার্চ থেকে এদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে আলোহা বাংলাদেশ। আলোহা আইএসও সনদ প্রাপ্ত লার্নিং সিস্টেম যা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত,মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪২টি দেশের ৬০ লাখের বেশি শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করে।