• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

খ্যাতির যত বিড়ম্বনা : অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার

প্রকাশ:  ০৯ জুন ২০২০, ১২:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

সৃষ্টিশীল মানুষ তাদের কর্মগুণে অনন্য ও অদ্বিতীয় হয়ে ওঠেন সাধারণ মানুষের কাছে। এসব কাজ তাদের জীবনে বয়ে নিয়ে আসে খ্যাতি। খ্যাতির পাশাপাশি বিড়ম্বনাও যে কম নয়, সে কথা খ্যাতিমান মানুষগুলো জানেন।

খ্যাতিমান মানুষগুলোর কিছু পাগল ভক্ত থাকে। এসব পাগল ভক্ত কোনো যুক্তি মানেন না। তাদের কাছে খ্যাতিমান মানুষের প্রতি তাদের প্রেম , ভক্তি, ভালবাসা অতি নিখাদ। ভক্তদের বিচারে তাদের প্রিয় মানুষটিই সেরা তারকা।

এই লেখার মূল বিষয় খ্যাতির বিড়ম্বনা। খ্যাতির বিড়ম্বনা তারকা মানুষদের নিয়তি। আর তারকার নাম যদি হয় শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি তা হলে খ্যাতির বিড়ম্বনা বেশী হবেই। অতিরিক্ত জনপ্রিয়তা এবং জনপ্রিয়তার চাপ সহ্য করতে হয় চোখ বুজে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ডা দীপু মনি একটি রাজনৈতিক ব্র্যান্ড। এটা তাঁর শত্রুরা উপরে প্রকাশ না করলেও ভেতর ভেতর জানে। আমার জানা মতে এ যাবতকালের বাংলাদেশের শিক্ষিত একজন শিক্ষামন্ত্রী।

একজন মানুষের খ্যাতির শিখরে উঠতে হলে তার কিছু গুনের প্রয়োজন হয়। সহনশীলতা , ঔদার্য , বিনয়াবনতা, ভদ্রতা একজন মানুষকে নিয়ে যেতে পারে রাজনীতির শিখরে। দীপু মনি তাদেরই একজন। অনেক সময় অবাক বিস্ময়ে ভাবি একজন রাজনীতিবিদ কতটুকু মার্জিত রুচী , ভদ্রতা, সৌজন্যবোধ সম্পন্ন এবং বিনয়ী হতে পারে। কিভাবে মানুষকে আপন করে নিতে হয় , কিভাবে মানুষকে মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করতে হয় দীপু মনির কাছে তা শিখতে হয়।

প্রতিনিয়ত শিখছি ঔদার্যতা দিয়ে কিভাবে মানুষকে আপন করে নেয়া যায়। ন্যায় নীতির মধ্যে থেকে কিভাবে রাজনীতি করা যায়। চরম সংকটেও কিভাবে নিজেকে বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি অবিচল থাকতে হয়। তাইতো তিনি দীপু মনি। একটি রাজনৈতিক পরিবারের জন্ম নিয়ে রাজনীতিকেই পাথেয় করে নিয়েছেন। নিজেকে সপে দিয়েছেন মানুষের কল্যাণে।

এই যে সাধারণ মানুষের ভালবাসা , শ্রদ্ধা , মমতা এগুলো অর্জন করতে হয়। অর্জন করতে হয় সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে। মানুষের দু:খ দুর্দশায় পাশে থেকে। মানুষের হৃদস্পন্দন বুঝতে হয়। ডা দীপু মনি তাই করেছে। ডা দীপু মনিরা এ সমাজের সম্পদ।

ফিরে আসি মূল কথায়। ডা. দীপু মনি এর এ খ্যাতি অনেক সময় বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দেয় তাঁর কাছে। তাঁর এ খ্যতিতে যারা ঈর্ষান্বিত তারা অনেক সময় পেছন থেকে ছুড়ি মারতে চায়। ২০১৯ সালের জানুয়ারী মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নামে ভূয়া আইডি এবং পেজে সয়লাব হয়ে যায়।

এবং সে সমস্ত আইডি এবং পেজ থেকে এমন সব বক্তব্য দেয়া শুরু হয় যা তাঁর ভক্তকুলের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি করে। অনেক সময় কোন কোন ভক্ত বিভ্রান্তিতে পড়ে সে সমস্ত পোষ্ট শেয়ার দিতে থাকে। যা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে বিব্রত করে তোলে। যে কারণে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নিজের ভেরিফাইড আইডি থেকে বলতে বাধ্য হয়েছেন তাঁর একটি ফেসবুক ভেরিফাইড আইডি এবং পেজ একটিই। বাকীগুলোর সাথে তাঁর কোন সম্পর্ক নেই।

বিটিআরসি তে অভিযোগ করে এরকম প্রায় শ দেড়েক আইডি এবং পেজ বন্ধ করার পর দুষ্টচক্র অনবরত ফেক আইডি এবং পেজ খুলেই যাচ্ছে জাকারবার্গের উদারতার সুযোগ নিয়ে। সেই সব আইডি থেকে এমন সব উদ্ভট উদ্ভট বক্তব্য প্রচার করতে থাকে যা অতি সহজে বোঝা যায় তাঁকে বিব্রত করার জন্যই দুষ্টচক্র এগুলো করছে। ফেসবুকে তাঁর ভক্ত এবং শুভানুধ্যায়ীরা যখন বুঝতে পারলো এগুলো ফেক আইডির অপপ্রচার তখন দুষ্টচক্র অন্য পদ্ধতি নিল।

এবার তারা এমনভাবে কিছু বক্তব্য ফেসবুকে নিয়ে আসলো যা সুক্ষ্মভাবে না দেখলে বোঝার কোন উপায় নেই যে এটি মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য নয়। আর মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর ভক্তকূলও দুষ্টদের এসব চাতুরতা ধরতে না পেরে নিজেরা শেয়ার দিতে থাকে। ভক্তকূলকে ভুলটি ধরিয়ে দেবার পর তারাও বুঝতে পেরেছে শিক্ষামন্ত্রীর নামে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন বক্তব্য দিয়ে তাদেরকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কথা বলার একটি আর্ট আছে। শব্দ চয়নে অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান। হবেনইবা না কেন। ছাত্র জীবনে তিনি ছিলেন বিতার্কিক। কথা বলাটা যে একটি শিল্প তা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর শব্দ চয়ন , বাক্য প্রয়োগ এবং সাবলীলতায় বোঝা যায়। আজ পর্যন্ত দেখিনি তিনি এমন কোন শব্দচয়ন করেছেন তা দৃষ্টিকটু এবং অপরকে আঘাত করে। এটিই তাঁর বৈশিষ্ট। দুষ্টরা এ যায়গাটার মধ্যেই সুকৌশলে এমন কিছু শব্দ দিয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কথা বলে প্রচার করেছে যা তরুনদেরকে আহত করে। অবশ্য এ চেষ্টায়ও তারা সফল হয়নি। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যে এমন শব্দচয়ন করতে পারেন না দেরীতে হলেও তাঁর ভক্তকুল সেটা ধরে ফেলেছে।

বিষয়টি এমন হলো কেন ।কেন বার বার এ যায়গাটায় আক্রমন। আমার ধারণা ঐ যে বল্লাম খ্যাতির বিড়ম্বনা। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবার পর একের পর এক মানুষের প্রশংসা কুড়য়েছে তাঁর কর্মদক্ষতায়। সাফল্য দেখিছে কাজে। মন্ত্রণালয়ের কাজে এনেছেন গতি। নিশ্চিত করেছেন সর্বক্ষেত্রে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।

খ্যাতি হলে তার বিড়ম্বনাও থাকবে। অনেকে খ্যাতির বিড়ম্বনা উপভোগ করেন; অনেকে এড়িয়ে চলেন, অনেকে বিব্রত হন। অনেক সময় ভক্তদের জ্বালাতন আব্দার সহ্য করেন। খ্যাতিমানরা যেন তাদের কাজ দিয়ে আরও বেশি মুগ্ধ করে তুলুন আমাদের। এটাই হোক কামনা। তবে সতর্ক থাকতে হবে দুষ্টচক্র যেন ভক্তকুলকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।

তথ্যসূত্র: রতন কুমার মজুমদার অধ্যক্ষ পুরানবাজার ডিগ্রী কলেজ চাঁদপুর এর ফেসবুক আইডি থেকে সংগ্রহীত ।

সর্বাধিক পঠিত