• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদে পাঠানো ভারতীয় যান বিক্রমের ভাগ্যে যা ঘটেছিল

প্রকাশ:  ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:০৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে চন্দ্রপৃষ্ঠ ছোঁয়ার ঠিক আগে আগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ভারতের মহাকাশযানটি চন্দ্রপৃষ্ঠে আছড়ে পড়েছিল বলে দাবি করছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

 

নাসার একটি মহাকাশযান থেকে পাওয়া ছবিতে ভারতের চন্দ্রযান বিক্রমের যেখানে অবতরণ করার কথা ছিল সেই ল্যান্ডিং সাইটটি দেখার চেষ্টা করা হয়েছে।

 

 

কিন্তু ছবিগুলো নেয়া হয়েছে বিকেলবেলা, যার কারণে সেগুলো তেমন স্পষ্ট নয়।

 

ভারত সফলভাবে চাঁদে অবতরণকারী চতুর্থ দেশ হতে পারত। মহাকাশযানটি চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে ২০ আগস্ট এবং ৭ই সেপ্টেম্বর ভারতের সময় সন্ধ্যা নাগাদ চাঁদের বুকে অবতরণ করার কথা ছিল।

 

এর এক মাস আগে সেটি পৃথিবী থেকে চাঁদের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল।

 

বিক্রম নামের এই অবতরণকারী যানটি চাঁদে নামার কয়েক মুহূর্ত আগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যেটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার কথা ছিল। শুক্রবার নাসা মহাকাশযানটির অবতরণের লক্ষ্যস্থলটির ছবি টুইট করে।

 

নাসা বলছে, অবতরণের লক্ষ্যস্থলটি চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে প্রয় ৬০০ কিলোমিটার বা ৩৭০ মাইল দূরে। যেটি আপাতত একটি প্রাচীন অংশ বলে মনে হয়।

 

নাসা আরও বলছে, ১৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের কক্ষপথের ওপর দিয়ে তাদের মহাকাশযানটি যাবার সময় উচ্চ রেজলিউশনের ছবি তুলে রাখে। তবে মহাকাশযানের চিত্র তুলতে পারেনি সেটি।

 

নাসার ব্যাখ্যা, ছবি তোলার সময়টি ছিল সন্ধ্যা। আর প্রাচীন সেই ভূখণ্ডটির বেশিরভাগ অংশই ছায়ায় আচ্ছন্ন ছিল। ধারনা করা হচ্ছে ‘বিক্রম’ সেই দীর্ঘ ছায়ার মধ্যে রয়েছে। অক্টোবরে আবারও একই পথে নাসার স্যাটেলাইটটি সেখান দিয়ে যাবে এবং যাবার সময় নতুনভাবে ছবি তুলে ল্যান্ডারটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করবে।

 

২০০৮ সালে ভারত চন্দ্রযান- ১ এর রাডারের মাধ্যমে চন্দ্রপৃষ্ঠে জলের সন্ধানে বিস্তৃত অনুসন্ধান চালিয়েছিল।

 

কী ছিল এই মিশনে?
চন্দ্রযান-২ ছিল ভারতের মহাকাশ সংস্থা ইসরো পরিচালিত সবচেয়ে জটিল কোনো মিশন। ইসরো প্রধান কে শিভান এটি উৎক্ষেপণের পর জুলাই মাসে বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক যাত্রার কেবল শুরু।’

 

ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের মাটি বিশ্লেষণ করার জন্যে ২৭ কেজি ওজনের একটি মুন রোভার বহন করছিল।

 

রোভারটির নামকরণ সংস্কৃত ভাষায় করা হয় ‘প্রজ্ঞান’। এটির ক্ষমতা ছিল ১৪ দিনে ল্যান্ডার থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে পরিভ্রমণ করে চন্দ্রপৃষ্ঠের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠানো।

 

এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল চন্দ্রপৃষ্ঠে ভূমিকম্প, পানির উপস্থিতি ও অন্যান্য খনিজের সন্ধান।

 

কেন মিশনটি তাৎপর্যপূর্ণ?
বিজ্ঞান লেখক পল্লব বাগলার মতে, চাঁদে সফল অবতরণে এর আগে মাত্র তিনটি দেশের কৃতিত্ব রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সফল হলে এটি হতো ইসরোর জন্য প্রযুক্তিগত প্রভূত অর্জন।

 

তিনি আরও বলেন, এটি ভবিষ্যতে ভারতের মঙ্গলগ্রহে মিশন চালানোর পথ অবারিত করতো এবং মহাকাশে নভোচারী পাঠানোর সম্ভাবনা উন্মুক্ত করতো।

 

এ ছাড়া ভারতের মহাকাশ অভিযান ইতিহাসে এ ধরনের মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন দুজন নারী। প্রোজেক্ট পরিচালক মুথায়া ভানিথা এবং মিশন পরিচালক রিতু কারিধাল।

 

এটিও একধরনের জাতিগত গর্বের বিষয়। জুলাই মাসে উপগ্রহটির উৎক্ষেপণ টেলিভিশন এবং ইসরোর অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলোয় সরাসরি সম্প্রচার হয়।

 

আর মিশনটি বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়েছিল, কেননা এর খরচ ছিল অত্যন্ত কম। এর চেয়ে অ্যাভেঞ্জার সিরিজের সবশেষ সিনেমা অ্যাভেঞ্জার অ্যান্ড গেমের বাজেটও প্রায়েই দ্বিগুণের বেশি ছিল।
তথ্যসূত্র : বিবিসি

সর্বাধিক পঠিত