শিশুর ঘাম বেশি হলে
শিশুর অতিরিক্ত ঘাম দেখে মা-বাবা অনেক সময় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ঘাম থেকে শরীর ভিজে ঘন ঘন ঠাণ্ডা কিংবা সর্দি লাগে বলে দুশ্চিন্তাও বেশি হয়। এ সময় মা-বাবারা কী করবেন, ভেবে পান না। একটু বড় শিশুদের ক্ষেত্রে ঘামের পরিমাণ বেশি। শিশু যখন দৌড়াতে শেখে তখন তার মধ্যে দুরন্তপনাও দেখা যায়। এর ফলে শিশুরা ঘামে। অনেক সময় নবজাতকও বেশি ঘামে। তাদের মাথাও গরম থাকে।
আসলে নবজাতকের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয় এবং তাদের শরীরে মেটাবলিজম বেশি হওয়ায় শিশুরা ঘামে বেশি। তবে ঘাম হওয়া খারাপ কিছু নয়। ঘাম বের হওয়ার সময় শরীর থেকে কিছু তাপ দূর করে। আবার এই ঘাম যখন শুকাতে থাকে তখনও শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। অত্যধিক গরম আর আর্দ্রতা হলো ঘামের কারণ। এ ছাড়া জ্বর হলেও বেশি ঘাম হয়।
অনেকে মনে করেন, সিজারিয়ান অপারেশনে শিশু জন্ম নিলে সেই শিশু বেশি ঘামে। এটি একেবারেই ঠিক নয়। ছোট শিশুকে ঠাণ্ডার ভয়ে অনেকে এত বেশি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন যে, গরমে শিশু আরও বেশি ঘেমে যায়। তাই বেশি ঘেমে যেন শিশুর ঠাণ্ডা লেগে না যায়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। ঘামে ভেজা জামা দ্রুত পাল্টে দিন।
আরামদায়ক সুতির কাপড় পরালে শিশু কম ঘামে। গরমের দিনে শিশুকে বেশি বেশি বুকের দুধ খাওয়ান। মায়েদেরও পর্যাপ্ত পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি, শরবত ইত্যাদি খেতে হবে।
জন্মগত হৃদরোগ, থাইরয়েডের সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত শিশু বেশি ঘামতে পারে। তাই ছোট শিশুরা দুধ খাওয়ার সময় কিংবা সামান্য কাঁদলেই বেশি ঘামলে, হয়রান হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যদি স্বাভাবিক তাপমাত্রা কিংবা অল্প পরিশ্রমে বেশি ঘামে, সে ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
লেখক: কনসালট্যান্ট, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্র : সমকাল।