ত্বক ও চুলের যত্নে ক্র্যানবেরী
ক্র্যানবেরী একটি দারুণ খাবার। এটি হৃদরোগের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। টকটকে লাল রঙের উজ্জ্বল গোলাকার এই ফল খেতে খুবই সুস্বাদু। দারুন খাবারের তকমা তো এই ফলের আছেই, একই সঙ্গে পুষ্টিগুণেও পরিপূর্ণ। ক্র্যানবেরীতে ভিটামিন, খনিজ লবণ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইটনিউট্রিয়েন্টস্ থাকে যা হৃদরোগের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। এছাড়াও এ ফল পাকস্থলীর প্রদাহ, মূত্রাশয়য়ের সংক্রমণ, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা প্রভৃতি নিরাময়েও সহায়তা করে। হাড় শক্ত করে, দাঁতের সমস্যা কমায় এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
সাধারণত ফল হিসেবে, জ্যাম, সস বা জুস করে ক্র্যানবেরী খেতে ভালো লাগে। এই সব স্বাস্থ্যকর দিক গুলি বাদেও ক্র্যানবেরী ত্বক ও চুলের জন্য খুবই উপকারী। এখানে দেওয়া হলো ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় ক্র্যানবেরী ব্যবহারের বেশ কয়েকটি উপায়।
১. ব্রন ও ছোপ দূর করতে আপনি কি ব্রন’র সমস্যায় ভুগছে? তাহলে ক্রানবেরী আপনার জন্য একদম ঠিক ওষুধ। জীবানু ও প্রদাহ প্রতিরধক উপাদান থাকায় ক্র্যানবেরী ব্রন ও ত্বকে হওয়া ছোপের সমস্যা দূর করে। এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন C ও থাকে যা ত্বকের ছোপ হাল্কা করতে সাহায্য করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
কিছুটা ক্র্যানবেরী জুস নিন। তুলোয় করে নিয়ে ব্রন ও দাগছোপের ওপর সরাসরি লাগান। শুকোতে দিন তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
২. ত্বকের কোষ ছিদ্র বন্ধ হওয়া আটকায়। এটা মূলত তৈলাক্ত ত্বকের জন্য। ক্র্যানবেরীতে প্রাকৃতিক অ্যাসিড থাকে যা ত্বকের কোষ ছিদ্রগুলিকে বন্ধ হতে দেয় না এবং ব্রনের সম্ভাবনা কমায়।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
কিছুটা ক্র্যানবেরী জুস নিয়ে তুলোয় মাখিয়ে নিন। সারা মুখে লাগিয়ে খানিকক্ষণ রাখুন। ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৩. হাইপার পিগমেন্টেড ত্বকের জন্য ক্র্যানবেরীতে বেশি পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যার ফলে তা ত্বকের পিগমেন্টেশন দূর করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
কিছু পরিমাণ ক্র্যানবেরী জুস আটার সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে গোল গোল করে আঙ্গুল দিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন।
ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৪.ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ক্র্যানবেরীতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
দইয়ের সঙ্গে কিছুটা ক্র্যানবেরী জুস মিশিয়ে নিন। কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন। ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের তারুন্য ফিরে পাবেন।
৫. ত্বকের দৃঢ়তা বজায় রাখেত্বকের চামড়া যাদের ঝুলে গেছে তাদের অবশ্যই ক্র্যানবেরী ব্যবহার করা উচিৎ। ক্র্যানবেরীতে থাকা ভিতামিন C ত্বকের দৃঢ়তা বজায় রাখে। ত্বকে কোলাজেন উৎপন্ন করে ফলে অক্সিজেন মাত্রা বজায় থাকে এবং আপনার ত্বক থাকে কোমল ও উজ্জ্বল।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
ক্র্যানবেরী জুস ও কমলা লেবুর জুস মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৬.স্কাল্পের চুলকানি কমায়। জীবানু ও প্রদাহ প্রতিরোধক উপাদান থাকায় ক্র্যানবেরী স্কাল্পের চুলকানি জাতীয় সমস্যার সমাধান করে। কিভাবে ব্যবহার করবেন? ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে ক্র্যানবেরি জুস মিশিয়ে নিন। মাথায় লাগিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন।
কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে ঠাণ্ডা জল দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করুন।
৭. চুলের উজ্জলতা বাড়ায়। প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও প্রোটিন থাকায় ক্র্যানবেরী জুস চুলে লাগালে চুলের উজ্জলতা বাড়ে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
মায়োনিজের সঙ্গে কিছুটা ক্র্যানবেরী জুস মিশিয়ে নিন
পুরো মাথায় এর প্রলেপ দিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ঠাণ্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
৮. প্রাকৃতিক চুলের রঙ হিসেবেও কাজ করেক্র্যানবেরী জুস প্রাকৃতিক চুলের রঙ হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলে লাল রঙের আভা প্রতিফলিত হবে। কিভাবে ব্যবহার করবেন?
কিছুটা ক্র্যানবেরী জুস নিয়ে তাতে জল মিশিয়ে নিন। মাথায় লাগিয়ে শুকিয়ে নিন। জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ভালো রঙ পেতে দুই থেকে তিন দিন পর পরই ব্যবহার করুন