• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ওয়েব সিরিজের নামে নাটকে অশ্লীলতা

প্রকাশ:  ০৫ অক্টোবর ২০১৭, ০০:২৯
পূর্বপশ্চিম ডেস্ক
প্রিন্ট

নাটক এখন আর শুধু টিভি চ্যানেলে সীমাবদ্ধ নেই। প্রযুক্তির কল্যাণে টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি তা চলে এসেছে অন্তর্জাল দুনিয়ায়ও। টিভির অনেক দর্শকই চলে গেছে ইউটিউবে। আর তারা এখন এ মাধ্যমটিতেই নাটক  দেখছেন। এই সুযোগে অনেক নির্মাতা ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান নাটক নির্মাণ করা শুরু করেছে শুধুমাত্র ইউটিউবের জন্য। 

যাকে বলা হয় ওয়েব সিরিজ। এরইমধ্যে ইউটিউবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নাটকের নামে এই ওয়েব সিরিজ। এসব ওয়েব সিরিজে সুকৌশলে দর্শকদের দেখানো হচ্ছে অশ্লীলতা। মজার তথ্য হলো টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচার অনুপযোগী নাটকগুলোই অন্তর্জাল দুনিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ‘আবাসিক হোটেল’ শীর্ষক তেমনই একটি ওয়েব সিরিজ অন্তর্জাল দুনিয়ায় দারুণ সাড়া ফেলে। সাধারণ মানুষদের আগ্রহ সৃষ্টি করা ও ভিউ বাড়ানোর জন্য ওয়েব সিরিজগুলোতে অশ্লীল দৃশ্য ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

এখনই এই অশ্লীলতা প্রতিরোধ করতে না পারলে নাটকের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে বলেও অনেকে অভিমত প্রকাশ করেন। একদিকে স্টার জলসা, স্টার প্লাসসহ বিভিন্ন চ্যনেলের প্রতি দর্শক ঝুঁকে পড়েছে। অন্য দিকে ওয়েব সিরিজগুলোতে অশ্লীলতা ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। যার কারণে বিশেষ দিবসগুলোর বাইরে দর্শক দেশীয় নাটক দেখা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ডিরেক্টর গিল্ডের সভাপতি গাজী রাকায়েত বলেন, আমরা এরইমধ্যে শিল্পীদের এই বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছি। এরপরেও যারা এই ধরনের ওয়েব সিরিজে কাজ করবে তাদের আমাদের সকল সংগঠনের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ করা হবে। আমি মনে করি এই বিষয়ে সরকারেরও পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। দেশের বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল থেকে এই ধরনের অশ্লীলতায় ভরা নানা রকম অনুষ্ঠান প্রচার করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। 

শিল্পীদের প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আগামীতে যেকোনো নাটক-টেলিছবিতে কাজের সময় যেন চুক্তিপত্র পূরণ করা হয় তা সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। চুক্তিপত্র থাকলে অনেক অমীমাংসিত বিষয় সহজে সমাধান করা যায়। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসলে তার সমাধান করা সম্ভব হয়। এই সময়ের জনপ্রিয় নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী বলেন, এক শ্রেণির নির্মাতা সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য এই ধরনের নাটক নির্মাণ করছে। স্বাধীন মাধ্যম হিসেবে অনেকে ইউটিউবকে বেছে নিচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতার অর্থ এই নয়, যা ইচ্ছে তা নির্মাণ করে প্রচার করবে। একদিকে আমাদের টিভি নাটকের দর্শক কমছে। পার্শ্ববর্তী দেশের টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালের প্রতি তাদের আকর্ষণ। তার ওপর এখন আবার এই ধরনের অশ্লীলতা বাড়তে থাকলে দর্শক আমাদের নাটক দেখা বন্ধ করে দেবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের নাটকের সোনালি ঐতিহ্য রয়েছে। বিটিভির যুগে দর্শক অনেক কালজয়ী নাটক পেয়েছে। এখনো অনেক ভালো নাটক নির্মাণ হচ্ছে। 

কিন্তু বিভিন্ন কারণে দর্শক সেসব নাটক দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দর্শকদের নাটকমুখী করতে হলে অবশ্যই নাটক থেকে অশ্লীলতা দূর করতে হবে। নাটক সংশ্লিষ্টদের মতে, চলচ্চিত্রের সেন্সর বোর্ডের মতো নাটকেও সেন্সর বোর্ড থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না কিংবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কিছু নির্মাণ হলে যেন প্রদক্ষেপ নেয়া যায় তার জন্য সেন্সরের প্রয়োজন।

সর্বাধিক পঠিত