• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মাদক কারবারে দুই জিপ গাড়ি ব্যবহার করতেন প্রযোজক রাজ

প্রকাশ:  ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১২:০৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

রাজধানীর মিরপুরে সরকারি বাংলা কলেজ থেকে বিএ পাস করেন আলোচিত প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজ। এরপর শুরু করেন গার্মেন্টস স্টক লটের ব্যবসা। সেখান থেকে গড়ে তোলেন ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সেখানে আসা-যাওয়া শুরু হয় বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনের। এরপর রাজ বিভিন্ন ক্লাবে যাতায়াত ও মাদক কেনাবেচা শুরু করেন। আর এই মাদক সংগ্রহ ও সরবরাহের কাজে নিজস্ব দুইটি জিপ গাড়ি ব্যবহার করতেন তিনি।

সম্প্রতি রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় নজরুল ইসলাম রাজের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেই অভিযোগপত্রে এমনটাই উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন। এ মামলার অভিযোগপত্রের ওপর শুনানির জন্য ২৫ অক্টোবর দিন ধার্য রয়েছে।

অভিযোগপত্রে রাজের সহযোগী সবুজ আলীকেও আসামি করা হয়েছে। অপরদিকে ঝন্টু মিয়ার পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে আপাতত মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয়েছে ১৮ জনকে। সবুজ আলী মূলত রাজের অফিসের পিয়ন ছিলেন।

jagonews24

অভিযোগপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন উল্লেখ করেন, রাজ সরকারি বাংলা কলেজ থেকে ১৯৯৩ সালে বিএ পাস করেন। এরপর তিনি শুরু করেন স্টক লটের ব্যবসা। পরবর্তীতে ওয়াসার ঠিকাদার হিসেবেও কাজ করেন। ২০১৪ সাল থেকে নাটক, সিনেমা ও বিজ্ঞাপনে বিনিয়োগ করা শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে ‘রাজ মাল্টিমিডিয়া’ নামে একটি প্রযোজক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এসময় তিনি বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে মাদকসেবন ও বেচাকেনা করতেন। মাদক কারবারের কাজে তার নিজস্ব দুইটি জিপ গাড়ি ব্যবহার করতেন।

রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) এর ২৪(খ)/১০(ক)/৩৮ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

অপরদিকে মাদক কারবারের কাজে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করায় সবুজ আলীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ৩৬(১) এর ২৪(খ)/১০(ক)/৩৮/৪১ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

এর আগে ৪ আগস্ট বিকেলে চিত্রনায়িকা পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে ওইদিন রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করে র‌্যাব সদরদপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করার কথা জানায় র‌্যাব।

একই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে নজরুল ইসলাম রাজের বনানীর বাসায় অভিযান শুরু করে র‌্যাব। পরীমনিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্যে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে রাজকে আটক করে রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে নিয়ে যান র‌্যাব সদস্যরা। রাজের বাসা থেকেও মাদক ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানায় র‌্যাব।

এরপর ৫ আগস্ট পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে র‌্যাব বাদী হয়ে একটি মামলা করে। আর রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা করে র‌্যাব। বর্তমানে রাজ কারাগারে রয়েছেন। আর জামিনে মুক্ত আছেন পরীমনি।

jagonews24

এর আগে মাদক মালায় রাজ মোট ছয়দিন রিমান্ডে ছিলেন। আর পর্নোগ্রাফি মামলায় ছিলেন চারদিনের রিমান্ডে।

সবশেষ ১৮ আগস্ট রাজকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সিআইডি। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।