জোভান-শাওন আলোচনায় না এলেও, পেয়েছে ভালবাসা-মুগ্ধতা
চারপাশে তখন 'বড় ছেলে'র একক আধিপত্য, সেটা টিভি স্ক্রিন থেকে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ভাইরাল। কয়েকদিনের তোড়জোড় আলোচনার মাঝে নিভৃতেই ছিল শাহিল আর তামিম নামের দুইভাইয়ের ভালবাসা, বন্ধন আর ভ্রাতৃত্ববোধ। শাহিল-তামিমের ব্রাদার্স আলোচনার ধারাপাতে না আসলেও ভক্ত ভালবাসায় ঠিকই মুগ্ধতা পেয়েছে।
ব্রাদার্স টু’র গল্পটা একটু বলি। শাহিল-তামিম দুই ভাই। শাহিল তামিমকে ভাই হিসেবে মেনে নিতে পারে না। শাহিলের বুকের ভেতর জমা ঘৃণার পাহাড়। অন্যদিকে তামিম ভাই বলতে পাগল। ভাইয়ের জন্য নিজের ভালোবাসার মানুষটিকেও উৎসর্গ করতে পারেন। কিন্তু তামিমের ভেতর কেন এই জমে থাকা ঘৃণা?
এমনই গল্প এবারের ঈদের নাটক 'ব্রাদার্স টু' নির্মাণ করেছেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ। এক ঘণ্টার নাটকে দর্শকের চোখে জল আনতে সক্ষম হয়েছে। ব্রাদার্স টু'র ভিত্তিটা আমাদের মধ্যবিত্ত সমাজের এক টুকরো গল্প। দুই সৎ ভাইয়ের গল্প।
শাহিলের বাবা মারা যাওয়ায় শাহিলের মা বিয়ে করেন তামিমের বাবাকে। পিঠাপিঠি দুই ভাইয়ের বয়স, স্বভাবে আবার বিপরীত। তামিম যেমন নরম তেমনি কঠিন প্রকৃতির শাহিল। কিছু জায়গায় থমকে যাবেন দর্শকরা, যেমন শাহিলের মা কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যেদিন রাতে মারা যান সেদিন তাঁর সৎ বাবা বাসার বারান্দায় পায়চারি করেছেন, মায়ের চিৎকারে তিনি বিচলিত হননি কিংবা ডাক্তারের শরণাপন্ন হননি। বিষয়টি লক্ষ্য করেছিলেন ছোট শাহিল। তার মানে দাগ কেটে যায়, জন্মে ঘৃণা। সৎ বাবার প্রতি, সৎ ভাই তামিমের প্রতি।
এই ঘৃণা বিদ্বেষের কারণে শাহিল বরাবরই সৎ বাবাকে অপমান করতো, রাস্তাঘাটে তামিমকে অপমান করতো। তারপরেও বাবা কিংবা তামিম কেউই শাহিলকে কিছু বলতো না। উলটো তামিম তার সাথে ভাই ভাই করে আরো মিশতে চেষ্টা করতো। ভার্সিটি লাইফের একটা অংশে তামিমের সাথে সখ্য তৈরি হওয়া ক্লাসমেট শখকেও শাহিলের জন্য স্যাক্রিফাইস করে।
তামিমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জোভান। শাহিলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৈয়দ জামান শাওন। শাওনের অভিনয় ছিল অনবদ্য। ফাহাদ আল মুক্তাদিরের গল্পে নাটকটিতে দুই ভাইয়ের প্রেমিকা হিসেবে অভিনয় করেছেন শখ। যেখানে শাওনের সাবলীল অভিনয়, জোভানের কান্না, ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আর শখের নৈপুন্যতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলতে না পারলেও ঠিকই কাঁদিয়েছে দর্শক-ভক্তদের।
নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ বলেন, ব্রাদার্স আমার খুব প্রিয় কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম । ফিকশনটি নিয়ে বেশ ভালো কিছু দর্শক মন্তব্য পেয়েছি। নাটক থেকে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ৮২৬টি মন্তব্য। ইউটিউবে এই মন্তব্যের মধ্যে একটি নেগেটিভ নয়, বরঞ্চ হাহাকার, ভালোবাসাময়। এটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।