চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের বৃত্তিতে চলেছে যার পড়ালেখা
অদম্য মেধাবী রায়হানের প্রকৌশলী হওয়ার দায়িত্ব নিলেন শিক্ষামন্ত্রী
চাঁদপুর সদর উপজেলার ১১নং ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের দরিদ্র অটোচালক পিতার অদম্য মেধাবী সন্তান রায়হান গাজীর প্রকৌশলী হওয়ার দায়িত্ব নিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। সন্তান প্রকৌশলী হওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী এ সংবাদ দরিদ্র বাবার জন্যে যে কতটা আনন্দের তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
রায়হান পুরাণবাজার মধূসুদন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের বৃত্তি নিয়ে শুরু হয় মাধ্যমিকে পড়াশোনা। এভাবে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে এখন পর্যন্ত চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের এ বৃত্তি তাকে দেয়া হয়। কিন্তু বরাবরই মেধাবী রায়হানের খটকা লাগে ৮ম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে ৯ম শ্রেণিতে উঠে, কোন্ বিষয় নিয়ে পড়বে রায়হান। শেষ পর্যন্ত মেধাবী রায়হান বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলো। কারণ তার স্বপ্ন প্রকৌশলী হবে। কিন্তু তাতে বাধা তার পিতার দারিদ্র্য। কারণ বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনায় অনেক খরচ। আবারো এগিয়ে আসলো চাঁদপুর রোটারী ক্লাব। রায়হান ভরসা পেলো সে বিজ্ঞান বিভাগেই পড়তে পারবে। এসএসসিতে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলো রায়হান। তারতো স্বপ্ন প্রকৌশলী হওয়ার। সফল তাকে হতেই হবে! স্বপ্ন পূরণে আরেক ধাপ এগিয়ে অদম্য রায়হান একাদশ শ্রেণিতে চান্স পেয়েছে নটরডেম কলেজে। এবার রায়হানের পরিবারের পূর্বের মতো মাথায় চিন্তার ভাঁজ পড়ে।
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের বর্তমান সভাপতি রোটারিয়ান শাহেদুল হক মোর্শেদসহ ক্লাব সদস্যরা আবারো এগিয়ে এলেন রায়হানের পড়াশোনায়। এদিকে রায়হানের নটরডেম কলেজের টিউশন ফি না হয় রোটারী ক্লাব দিবে, কিন্তু ঢাকায় থাকবে কোথায়? খাবে কোথায়?
চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি শাহেদুল হক মোর্শেদ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রোটাঃ নাজিমুল ইসলাম এমিল এ বিষয়ে আলাপ করতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চাঁদপুর-হাইচরের সংসদ সদস্য, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির ঢাকাস্থ বাসায় যান। তখন রাত সাড়ে ১১টা। অবশেষে সুযোগ হয় শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলার। রায়হানের সব কথা শোনার পরে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির প্রথম কথা ‘ওরতো আগামী সপ্তাহেই ক্লাস শুরু হবে। ওকে ২৭ ফেব্রুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় চলে আসতে বলো। ওর উচ্চ শিক্ষার সব দায়িত্ব আমি নেবো।’ যেই কথা সেই কাজ। মেধাবী রায়হান তার দরিদ্র বাবা ও চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের সভাপতি রোটাঃ শাহেদুল হক মোর্শেদ, রোটাঃ নাজিমুল ইসলাম এমিলসহ ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি মাতৃ¯েœহের পরম মমতায় হাত বুলিয়ে দিলেন রায়হানের মাথায়। সাদামাটা ভঙ্গিতে বললেন, তুমি শুধু পড়বে, তোমার প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। তোমার সব দায়িত্ব আমার। অদম্য মেধাবী রায়হান ও তার দরিদ্র বাবার চোখে আনন্দের অশ্রু, তারা আপ্লুত শিক্ষামন্ত্রীর মহানুভবতায়।