• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ফরিদগঞ্জে গত বছর ছিলো মাদক ও ডাকাতের ব্যাপক উপদ্রব

প্রকাশ:  ৩১ মার্চ ২০১৯, ১২:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ফরিদগঞ্জে গত বছর ছিলো মাদক ও ডাকাতের ব্যাপক উপদ্রব। গত বছরের (২০১৮) ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১০টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতি করা অবস্থায় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ১৮ জন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়াও একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ফরিদগঞ্জে মাদক ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পত্রিকার সূত্রমতে, গত বছর ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ প্রায় ৬ জন মাদক ব্যবসায়ীসহ বহু মাদক আটক করেছে।
    গত বছর প্রধান আলোচিত বিষয় ছিলো পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী লাল বাদশা নিহত হবার ঘটনা। ঘটনাটি ২৮ মে রমজান মাসে গভীর রাতে ঘটে। ফরিদগঞ্জের কেরোয়া গ্রামে দেশের বিভিন্ন জেলার ৭ জনকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে গোটা জেলায় এবং জাতীয় পত্রিকাগুলোও গুরুত্বসহকারে সংবাদটি প্রচার করে। ঘটনাটি ২১ অক্টোবরের।
    ইতোমধ্যে নবানির্বাচিত সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে এবং একাধিক জনসভায় মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বলেছেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলাকে মাদকমুক্ত করতে পারলে আমরা সহজেই আমাদের সামাজিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারবো। মাদক ব্যবসায়ী যেই হোক না কেন, সে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারও ব্যবহার করে  তবে এক্ষেত্রে কোনো ছাড় পাবে না।
    গত     এক বছরে ফরিদগঞ্জে ডাকাতির উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো : ১২ এপ্রিল ফরিদগঞ্জের প্রত্যাশীতে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি। ১৭ এপ্রিল ঢাকা আমিন জুয়েলার্সের চুরি হওয়া ২শ’ ১৭ ভরি সোনা ও ১১ লক্ষাধিক টাকা ফরিদগঞ্জ পৌরসভার বড়ালী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ১৮ এপ্রিল ফরিদগঞ্জের গোবিন্দপুরে গভীর রাতে ডাকাতিকালে বাড়ির লোকজন প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এতে বাড়ির ২জন লোক গুরুতর আহত হয়। ১৬ মে ফরিদগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ২ ডাকাতকে আটক করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। ৫ জুন উপজেলার কালিরবাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে একজন ডাকাতকে আটক করে পুলিশ। ২৪ জুলাই উপজেলার বর্ডার এলাকা থেকে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ২ সদস্যকে আটক করেছে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। ২৮ জুলাই জিয়া (২৫) নামের এক ডাকাত সর্দারকে গ্রেফতার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। ৫ নভেম্বর ফরিদগঞ্জে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৪ জনকে আটক করে পুলিশ।
    এছাড়াও একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ৮ জুলাই নেশা মিশ্রিত জুস খাইয়ে ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়ক থেকে ১টি সিএনজি স্কুটার ছিনতাই করা হয়। ২৫ জুলাই ছিনতাইয়ের ঘটনায় উপজেলার ৫ যুবককে আটক করে পুলিশ। ৩ এপ্রিল ফরিদগঞ্জের রুপসার নারিকেল তলায় অস্ত্রের মুখে নারীর কান ছিঁড়ে স্বর্ণের দুল ছিনতাই হয়। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ২ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
    অপ্রতিরোধ্য মরণঘাতী নেশা ইয়াবা এখন নানা অপরাধের প্রধান নিয়ামক। এই ভয়াল মাদক তারুণ্য, মেধা, বিবেক, লেখাপড়া, মনুষ্যত্ব সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিনষ্ট করে দিচ্ছে স্নেহ-মায়া, ভালোবাসা, পারিবারিক বন্ধন। ইয়াবায় আসক্ত সন্তানের হাতে বাবা-মা, ঘনিষ্ঠ স্বজন নির্মম অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। নেশাখোর মাদক সংগ্রহে ব্যর্থ হওয়ার ক্রোধে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
    গত এক বছরে ফরিদগঞ্জে মাদকের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো : ৫ এপ্রিল ফরিদগঞ্জে তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে থানা পুলিশ। ২৮ এপ্রিল ফরিদগঞ্জে সাত শতাধিক পিচ ইয়াবা উদ্ধার হয়। ২৩ জুন উপজেলার গুপ্টি থেকে মাদকসহ তাসলিমা বেগম (৩৫) নামের এক নারীকে আটক করে পুলিশ। ১১ সেপ্টেম্বর অস্ত্রসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়। ২৭ অক্টোবর ৫নং গুপ্টির বৈচাতরী গ্রামের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী কামরুলকে আটক করে থানা পুলিশ।
    ফরিদগঞ্জ থানার সদ্য সাবেক অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে বলেন, এক সময় ফরিদগঞ্জে প্রচুর ডাকাতির ঘটনা ঘটত। সেটা এখন অনেক কমে এসেছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও তেমন সফলতা আসেনি, যেমনটা আমরা চেয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে কিশোর তরুণদের বাবা-মাকে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। স্কুল, কলেজে গিয়ে মাদকবিরোধী ক্যাম্পেইন করতে হবে। সকল পেশাজীবী এবং সবশ্রেণির মানুষকে একযোগে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।

 

সর্বাধিক পঠিত