৩৪ বছর যাবৎ পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন কবির গাজী ‘করোনা শুরুর পর থেকেই পত্রিকা বিক্রি কমে গেছে।
আমাদের খুবই খারাপ অবস্থা যাচ্ছে’
ভোরের আলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন শুরু হয় তাদের। কাকডাকা ভোর থেকে পত্রিকা নিয়ে তাদেরকে ছুটতে হয় গ্রাহকের দুয়ারে। ঝড়-বৃষ্টি, গরম কিংবা শীত এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে না। তারা মানুষের অধিকার আদায়ের সংবাদ পৌঁছে দিলেও নিজেদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশ-বিদেশের খবর ঘরে ঘরে পৌঁছে দিলেও তারা রয়ে যান খবরের অন্তরালে। এদেরই একজন মোঃ কবির হোসেন গাজী।
চাঁদপুর শহর এলাকায় সংবাদপত্র বিক্রি করছেন তিনি। এখন বয়স ষাটোর্ধ্বে হলেও যুবক বয়স থেকেই এ পেশায় জড়িত তিনি। ৩৪ বছর যাবৎ খবরের কাগজ বিক্রি করে আসছেন। ১৯৮৮ সালে আল-আমিন একাডেমিতে চাকরি করার সুবাদে প্রথমে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা দিয়ে শুরু কবির গাজীর হকারি। এরপর আসলাম খানের সংবাদপত্র এজেন্টের পত্রিকা নিয়ে গ্রাহকদের পৌঁছে দিতেন। নব্বই সাল থেকে শহরের নুরুন্নবী পাটোয়ারীর এজেন্সির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত দৈনিক পত্রিকা বিক্রির পেশা ধরে রেখেছেন।
অনলাইন মিডিয়ার যুগে খবরের কাগজ বিক্রি কমে যাওয়ায় বর্তমানে গরিবি হালতেই কোনোরকমে দিন চলে যাচ্ছে তার। চাঁদপুর শহরের ১১নং ওয়ার্ডস্থ গুণরাজদি গাজী বাড়িতে স্ত্রী ও তিন ছেলে সন্তান নিয়ে তার পরিবার। তিনি জানান, করোনাকালীন সময়ে পত্রিকা বিক্রি হ্রাস পায়। অনেক অফিস, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পত্রিকা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
কবির হোসেন গাজী জানান, আগে ৩০০ থেকে ৩৫০ কপি পত্রিকা তিনি শহরের নির্ধারিত এলাকায় বিক্রি করতেন। করোনা দুর্যোগ এবং ফেসবুকের কারণে এখন তার পত্রিকা বিক্রি ২০০ থেকেও কমে গেছে। পত্রিকা বিক্রির কমিশন বাবদ যে টাকা আয় হয় তাতে সংসারের খরচ মিটছে না। ছেলেরা সহযোগিতা করায় এখনো পুরানো পেশা ধরে রেখেছেন।
কবির গাজী বলেন, এখন ইচ্ছে করলেও অন্য কিছু করতে পারি না। করোনা শুরুর পর থেকেই পত্রিকা বিক্রি কমে গেছে। আমাদের খুবই খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। তার মতে, একতরফা খবরের কারণে মানুষ পত্রিকাগুলো গ্রহণ করছে না। আগে সবদলের লোকজন পত্রিকা কিনে পড়তো। এখন যারা পত্রিকা পড়তে অভ্যস্ত শুধুই তারা পত্রিকা কিনে পড়ছেন।