• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমে চাঁদপুর জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা

ইলিশ সংরক্ষণে সকল সেক্টরকে একসাথে কাজ করতে হবে : জেলা প্রশাসক

মা ইলিশের প্রজননের সময়ে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যেতে পারে : পুলিশ সুপার প্রতিনিধি

প্রকাশ:  ০৬ অক্টোবর ২০২০, ০৯:২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফল করতে চাঁদপুর জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ৫ অক্টোবর সোমবার সকাল ১১টায় অনলাইন প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি মোঃ মাজেদুর রহমান খানের সভাপ্রধানে এবং জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকীর সঞ্চালনায় সভায় টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যবৃন্দ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, গণমাধ্যম কর্মী, মৎস্যজীবী প্রতিনিধি, বরফ কল মালিক সমিতির প্রতিনিধি, মাছের আড়ৎ মালিক সমিতির প্রতিনিধি এবং চাঁদপুর জেলার মৎস্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ভার্চুয়াল সভায় জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাই ইলিশ সংরক্ষণে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। নিষিদ্ধ সময়ে শিশু শ্রমিকের মাধ্যমে মাছ ধরা বন্ধ রাখার জন্যে জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে নদী তীরবর্তী প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম সবাইকে নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। একইভাবে তাদেরকে কাজে লাগিয়ে কোন্ নৌকা কখন মাছ ধরতে নামবে তা গোপনে সংগ্রহ করতে হবে। নদী তীরবর্তী দোকানসমূহ অবৈধ মা ইলিশ মজুদ, বেচা-কেনায় ব্যবহৃত এক কথায় শেল্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই এই সকল দোকানের তালিকা তৈরি করে দোকানসমূহ বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, নদী তীরবর্তী উপজেলাসমূহে প্রয়োজনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের রোস্টার ডিউটি দেয়া যেতে পারে। নদী তীরবর্তী অন্যান্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে ভার্চুয়াল সভা করে ফলপ্রসূ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি তাঁর বক্তব্যে বলেন, মা ইলিশের প্রজননের সময়ে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যেতে পারে। তাছাড়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা যেতে পারে।
নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ইলিশের প্রধান এই প্রজনন মৌসুমে নদীতে মা ইলিশ নিধন বন্ধ রাখার পাশাপাশি নদী তীরবর্তী মাছ অবতরণ কেন্দ্র, হাট-বাজার, আড়তে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখার জন্যে জনসচেতনামূলক সভা করতে হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা নৌ পুলিশ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতায় মৎস্য অধিদপ্তর, চাঁদপুর বিগত বছরগুলোতেও সফলতার সাথে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। তাই অন্যান্য বছরের ন্যায় বর্তমান বছরেও মা ইলিশ সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট সকলের সক্রিয় সহযোগিতা করার অনুরোধ জানাই।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ আহরণে বিরত থাকতে নদী তীরবর্তী চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার জেলেদের সহায়তার জন্যে সরকার এ বছর ভিজিএফের বরাদ্দ বাড়িয়ে ৫০ হাজার জেলে পরিবারের জন্যে বরাদ্দ করেছে যা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় উপ-বরাদ্দ করা হয়েছে।
অন্যান্য বক্তা বলেন, আসন্ন ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে গণমাধ্যম কর্মীরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে বিগত সময়ের মা ইলিশ অভিযানের গ্যাপগুলো হয়েছে, সেগুলো যাতে এ বছর না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকা প্রয়োজন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। চাঁদপুর বরফকল মালিক সমিতির প্রতিনিধি বলেন, অভিযানের ২২ দিন সকল বরফকল সার্বক্ষণিক বন্ধ রাখা যেতে পারে। বহিরাগত জেলেদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন, সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাংবাদিক আব্দুল গণি, চাঁদপুর জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক দেওয়ান। উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর সরদার, সহ-সভাপতি ওমর আলী প্রধানীয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লতিফ দেওয়ান, দপ্তর সম্পাদক মোস্তফা কামাল, মতলব উত্তরের সভাপতি সতীশ চন্দ্র বর্মণ, চাঁদপুর বরফকল মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ হাজী শাহ আলম বাদশা, জেলার কান্ট্রি ফিশিংবোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক, মৎস্যজীবী নেতা তসলিম বেপারীসহ টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী, মৎস্যজীবী প্রতিনিধি, বরফকল মালিক সমিতির প্রতিনিধি, আড়ৎ মালিক সমিতির প্রতিনিধি এবং চাঁদপুর জেলার মৎস্য বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ।