চাঁদপুর ক্রিসেন্ট হাসপাতালে অপারেশনকালে গৃহবধূর মৃত্যু
চাঁদপুর শহরের চিত্রলেখা এলাকায় ক্রিসেন্ট হাসপাতালে পিত্তথলির পাথর অপারেশন করতে গিয়ে ফাতেমা বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূর অকাল মৃত্যু হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার পূর্বে রোগীর প্রেসার, ডায়াবেটিসসহ শারীরিক অন্যান্য সমস্যা পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং এনেসথেসিয়া ভালোভাবে না করেই অপারেশন করায় মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করা হয়। নিহত গৃহবধূ ফাতেমা বেগম চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যাণপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী গ্রামের ইউসুফ গাজীর স্ত্রী। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
নিহতের বোন মাকসুদা বেগম জানান, বোনের পিত্তথলির পাথর অপারেশন করার জন্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে ক্রিসেন্ট হাসপাতাল আনা হয়। রাত ৯টায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে ডাক্তার একেএম শাহাদাত হোসাইন রুগীর অপারেশন করেন। রাত ১১টায় মুমূর্ষু অবস্থায় মাকসুদাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে হাসপাতালের কেবিনে বেডে এনে রাখা হয়। ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাতেমা। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু দালাল চক্র এনে রোগীর স্বজনদের সাথে ঝামেলা শুরু করে রাতেই লাশ হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। এদিকে ৯৯৯ কলে খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই ফারুক হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার খোঁজ-খবর নেন।
নিহত ফাতেমা বেগমের স্বামী সিলেট থেকে চাঁদপুরে আসার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। এরপর সমঝোতা শেষে মৃত্যুর ১৭ ঘণ্টা পর শনিবার বিকেলে ক্রিসেন্ট হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর লাশ নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে ক্রিসেন্ট হাসপাতলের মালিকপক্ষ সোহেল এ প্রতিবেদককে জানান, হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় রোগীর স্বজনদের সাথে সমঝোতা হয়েছে। তারা লাশ নিয়ে গেছে।
অভিযুক্ত ডাক্তার একেএম শাহাদাত হোসাইন জানান, অপারেশন করার পূর্বে রোগীকে অ্যানেসথেসিয়া দিয়েছেন ডাক্তার ইলিয়াস। তারপরে অপারেশন করে রোগীকে বিছানায় নেয়ার পর হঠাৎ তার মৃত্যুর হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ক্রিসেন্ট হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর ঘটনাটি জনৈক ব্যক্তি ৯৯৯ ফোন করে পুলিশকে অবহিত করে। পরে হাসপাতাল থেকে লাশ নামিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করলেও নিহতের স্বামী সিলেট থাকায় সমাধান হয়নি। তিনি সিলেট থেকে এসে মামলা করবে না বলে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর দিয়ে লাশ হাসপাতাল থেকে অবশেষে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরে প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা অবহেলা ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে অনেক রোগী অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন।