ফরিদগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় ছাত্রলীগের ২ কর্মী নিহত
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গরুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত এবং আহত হয়েছে ৩জন। ২৬ জুলাই রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সদরের কাছিয়াড়া গ্রামের ব্রীজের দক্ষিণ পাশে তফাদার বাড়ির সামনে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন বাবুল খন্দকারের ছেলে জিসান খন্দকার (২৩) ও একই বাড়ির হান্নান খন্দকারের ছেলে রাছেল খন্দকার (২২)। তাদের বাড়ি উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গোয়ালভাওর এলাকায়। নিহত দু'জন সম্পর্কে চাচাতো-জাঠাতো ভাই। তারা অ্যাপাচি মোটরসাইকেলে করে ফরিদগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে এই দুর্ঘটনার শিকার হন।
আহতরা একই গ্রামের পাশের বাড়ির সমবয়সী রাকিব পাটওয়ারী (২০), মামুন বেপারী ও তারেক বেপারী। এ তিনজন পালসার নামের মোটর সইকেলের আরোহী ছিলেন। স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করান। দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ চালকসহ ঘাতক ট্রাকটি পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা থেকে আটক করেছে।
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবদুর রকিব জানান, চাঁদপুরের হরিণাঘাট হয়ে ফরিদগঞ্জ দিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল গরুবাহী ট্রাক (ঢাকা মেট্টো-ট-১৮-৭৪৫১)। এটি ঘটনাস্থলে পেঁৗছালে বিপরীত দিকের দ্রুতগামী মোটরসাইকেলকে সাজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।
তিনি আরো জানান, ঘাতক ট্রাক জব্দ ও চালককে আটক করা হয়েছে। ঘাতক ট্রাকের চালকের নাম মোঃ রুস্তম (৪২)। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাওকাঠি গ্রামে তার বাড়ি। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশের এসআই নাসির উদ্দিন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চালক স্বীকার করেছে সে ঘটনার সময় ওই ট্রাকে একাই ছিলো। সঙ্গে কোনো সহকারী ছিলো না।
দুর্ঘটনার পর নিহত দুজনের লাশ ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয় এবং সেখান থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে সোমবার সকালে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। গতকাল বাদ আছর গোবিন্দপুর ঈদগাহ মাঠে উভয়ের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। জানাজায় ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তছলিম আহমেদ, জেলা পরিষদ সদস্য মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম রিপন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান সবুজ, আকবর হোসেন মনির, পৌর কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ, সাবেক পৌর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, উপজেলা ওলামালীগের সভাপতি মাওঃ মিজানুর রহমানসহ বিপুল সংখ্যক মুসলি্ল জানাজায় অংশ নেয়। জানাজার পূর্বে নিহত জিসান ও রাসেলকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান।
এর আগে মর্মান্তিক মৃত্যুর সংবাদে দুই ভাইয়ের স্বজন ও ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে ছুটে যান। এ সময় তাদের আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।