ফরিদগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই যুবককে পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই যুবককে পিটিয়ে হাত পা ভেঙে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১১ জুন বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ৩নং সুবিদপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডস্থ বাসারা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হচ্ছেন : ওই গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম বেপারীর ছেলে, সিরাজুল ইসলাম বেপারী (৩৭) ও আনোয়ার হোসেন মুন্সির ছেলে বিল্লাল হোসেন মুন্সি (৩৮)। আহতরা জানায়, পূর্ব শত্রুতা জেরে তাদের ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তারা দুজন বাসারা বাজারে নাশতা খেতে বাড়ি থেকে বের হন গাড়িচালক সিরাজুল ইসলাম (৩৫) ও বিল্লাল হোসেন (৩২)। এ সময় বাজারের পাশে নমশুদ্র বাড়ির কাছে আসামাত্র পূর্ব থেকে অবস্থান নেওয়া একই গ্রামের আমিনুল হক মজুমদারের ছেলে, রফিক মজুমদার, শহীদ উল্লা, আব্বাস, রফিকের ছেলে রাব্বি, মেহেদী, রিফাত, শহিদ উল্ল্যার ছেলে, সৈকত, মহসীন, রফিকের দুই বোন নুরজাহান ও নুরুন্নাহারসহ অজ্ঞাত আরো বেশ কজন মিলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
তাদের অভিযোগ এ সময় প্রতিপক্ষরা লোহার পাইপ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে এই দুইজনের উপর হামলা করে। এতে লোহার রড দিয়ে সিরাজ ও বিল্লালের হাত পা ভেঙে দেয় হামলাকারীরা। এছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে দ্রুত গা ঢাকা দেয় হামলাকারীর দল। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় সিরাজ ও বিল্লালকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে জরুরি বিভাগে চিকিৎসার পর তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুজাউদৌলা রুবেল জানান, আহতদের শরীরে গুরুতর আঘাত রয়েছে।
আহত সিরাজুল ইসলামের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন, বাসারা গ্রামের চিহিৃত সন্ত্রাসী রফিক মজুমদার, শহীদ উল্লাহ, রহমত উল্লাহ, আব্বাস উদ্দিন এবং তাদের সহযোগীরা তার ভাই ও বিল্লাল হোসেনের উপর হামলা করে। এসময় হামলাকারীরা লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রফিক মজুমদার, একসময় জাতীয় পার্টি। পরে দল পরিবর্তন করে জামায়াত ও বিএনপি এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে বাসারা এলাকায় একটি সন্ত্রাসী দল গড়ে তোলে। এই নিয়ে এলাকায় পুরনো আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে রফিক মজুমদারের বিরোধ চলছে। তবে কিছুদিন আগেও এই দুইজন রফিক মজুমদারের পক্ষে ছিল। পরে তারা ভুল বুঝতে পেরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। এতে প্রতিপক্ষমা ক্ষুদ্ধ হয়ে তাদের উপর এমন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। আহত বিল্লালের ভাই সুমন জানান, তার ভাই এবং সিরাজ রফিক মজুমদারের সন্ত্রাসী আচরণ ও নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এই বিষয় ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রকিব জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পক্ষকে শান্ত করেছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় থানায় কেউ মামলা দেয়নি। এদিকে, ফরিদগঞ্জের বাসারায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মহিউদ্দিন খোকা। তিনি বলেন, তার গ্রামে এমন ঘটনা সত্যি দু:খজনক। হামলার ঘটনায় দায়ীদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানান যুবলীগ নেতা খোকা।
তবে ঘটনা সম্পর্কে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ বলেছে, ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।