• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

বলাখালে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

প্রকাশ:  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

হাজীগঞ্জের বলাখাল জেএন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কারিগরি কলেজ এলাকায় অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন করার পূর্ব মুহূর্তে স্থানীয় এক বখাটের হাতে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক সড়ক অবরোধ করেছে কয়েকশ' শিক্ষার্থী। সোয়া দুই ঘণ্টা অবরোধকালে সড়কের দুই পাশে কয়েকশ' পরিবহনের কয়েক হাজার যাত্রীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আশ্বাস দেয়ার পরে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘটনাটি ঘটে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বলাখাল বাজারের বলাখাল জেএন স্কুল এন্ড কারিগরি কলেজের সামনে। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই স্থাপনাটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকগণ জানান, বিদ্যালয়ের ভবনের পাশে একটি দোকানঘর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক বছর আগে স্থানীয় আবুল খায়ের মজুমদার নামের একজনের কাছে ভাড়া দেয়। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের বরাদ্দ আসে, আর সেই ভবন নির্মাণের জন্যে ভাড়াটিয়া আবুল খায়ের মজুমদারকে ভাড়া দেয়া অংশটুকুর প্রয়োজন পড়ে বিদ্যালয়ের। সেই আলোকে এ অংশ ছেড়ে দেয়ার জন্যে বিভিন্নভাবে অনুরোধসহ আইনী প্রক্রিয়ায় যায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আবুল খায়ের মজুমদার তার দখলীয় অংশ ছেড়ে না দেয়ার কারণে একাডেমিক ভবনের কাজটি ফেরৎ যাওয়ার সময় সনি্নকটে চলে আসে। এই আবুল খায়ের মজুমদারকে উচ্ছেদের দাবিতে রোববার সকালে শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক ব্যানারে মানববন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়।

রোববার সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সরোয়ার হোসেনকে বিদ্যালয় মাঠেই প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করে বিল্লাল হোসেন নামে স্থানীয় এক যুবক। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিল্লালকে ধাওয়া করলে বিল্লাল পালিয়ে যায়। এরপরেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। মানববন্ধন বন্ধ করে তাৎক্ষণিক সড়ক অবরোধ করে। সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীর বিচার দাবি করে সস্নোগান দিতে থাকে। শিক্ষার্থীদের সাথে অবরোধে যোগ দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ এলাকাবাসী।

এদিকে ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) আফজাল হোসেন, হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেনসহ ফোর্স নিয়ে অবরোধস্থলে হাজির হন। এ সময় সরকারি এ কর্মকর্তাগণ বারবার অবরোধকারীদের সাথে কথা বলে অবৈধ দখলকারীকে তিনদিনের মধ্যে উচ্ছেদসহ শিক্ষককে লাঞ্ছনাকারী বিল্লালকে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে দুই ঘণ্টা পর সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

অবরোধ চলাকালে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের বলাখাল বাজারের দু পাশে কয়েকশ' পরিবহন আটকে পড়ে। এ সকল পরিবহনে অবস্থানকালীন কয়েক হাজার যাত্রীকে এ সময় দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে আবুল খায়ের মজুমদারের ছেলে তসলিম আলম শিশির জানান, বিদ্যালয় যেটুকু আমাদের ভাড়া দিয়েছে বিদ্যালয়ের নোটিস পাওয়ার পর সেটুকু আমরা ছেড়ে দিয়েছি। বর্তমানে আমরা যে অংশে আছি সেটুকু সড়ক ও জনপথ বিভাগের। সড়কের জমিতে আমি একা নই, আরো লোকজনের ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে, আর সড়ক বিভাগ চাইলে অন্যদের মতো আমরা ছেড়ে যাবো। তবে আমাদের এ ব্যবসা নিয়ে স্থানীয় একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, আসছে ৩ দিনের মধ্যে বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দেয়া হলে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। এদিকে অবরোধ তুলে নেয়ার কিছু পরেই অবৈধ দখলকারীর দোকানটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত