• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

স্ত্রীকে খুন করে ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা

প্রকাশ:  ১৫ জুলাই ২০১৯, ১০:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নস্থ গুলিশা গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী বেবী বেগম (৪৫) কে খুন করার পর ঘাতক স্বামী খোরশেদ পাটওয়ারী (৬০) ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল রোববার (১৪ জুলাই) ভোরবেলা এবং সকালে চাঁদপুর শহরের মিশন রোড রেললাইন এলাকায় ও সদর উপজেলার গুলিশা গ্রামে পৃথক এ দুটি ঘটনা ঘটে।
গতকাল ভোরবেলা স্ত্রী বেবী বেগমকে গুলিশা গ্রামে নিজ বসতঘরে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তিন সন্তানের জনক স্বামী খোরশেদ। হত্যা করার পর খোরশেদ চাঁদপুর শহরে এসে মিশন রোড রেলপথের ব্রিজের উপর ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিলে খোরশেদ ট্রেনের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় ব্রিজের নীচে খালে গিয়ে পড়ে। অনেক পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে খোরশেদকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। তখন হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক খোরশেদকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর জানাজানি হয় খোরশেদ বাড়িতে তার স্ত্রীকে খুন করে এসেছে। পরে পুলিশ গুলিশা গ্রামের ঘটনাস্থল থেকে একটি হাতুড়ি ও একটি স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার করে এবং পৃথক স্থান থেকে স্বামী ও স্ত্রীর দুটি মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে থানায় নিয়ে আসে।
হত্যার শিকার বেবী বেগম ফরিদগঞ্জ উপজেলার হাঁসা গ্রামের শেখ বাড়ির মৃত আবুল হাশেম শেখের মেয়ে। খোরশেদ আলম চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের পাটওয়ারী বাড়ীর মৃত আবদুল কুদ্দুছ পাটওয়ারীর ছেলে। বেবী-খোরশেদ দম্পতির ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের সকলেরই বিয়ে হয়ে গেছে।
নিহত বেবী বেগমের ভাই মফিজুল ইসলাম জানান, সকালে তার ভগ্নিপতি খোরশেদ আলম ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার পর সদর হাসপাতাল থেকে তার মৃত্যু সংবাদ আসে। দ্রুত তারা সংবাদটি দিতে বোনের বাড়িতে গিয়ে দেখেন দরজায় তালা দেয়া। পরে তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে বেবী বেগমের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান। ঠিক কী কারণে এ দুটি ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কোনো কারণ জানাতে পারেনি নিহতদের পরিবার। তবে এলাকাবাসী জানিয়েছে, প্রায়ই খোরশেদ আলম তার স্ত্রীকে মারধর করতো। নিহত দম্পতির ৩ মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় খোরশেদ তার স্ত্রীসহ একাই বাড়িতে থাকতেন।
চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্টেশনের লীডার ওসমান গণি কয়েকজন ফায়ারম্যানসহ বঙ্গবন্ধু সড়কের পাশে রেলপথের ব্রিজের নীচ থেকে গুরুতর অবস্থায় খোরশেদ আলমকে উদ্ধার করে সকাল সাড়ে ৮টায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ মিজানুর রহমান কিছুক্ষণ পরেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রব জানান, কী কারণে এমন ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাসিম উদ্দিন জানান, ঘটনার সংবাদ পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে বেবী বেগমের মরদেহ এবং খোরশেদ আলমের মরদেহ চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পারিবারিক কলহের কারণে  এ হত্যাকা- ও আত্মহত্যার ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।