• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

শিম চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক লোকমান মিয়া

প্রকাশ:  ১৫ জুলাই ২০১৯, ১০:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বিশেষ ব্যবস্থায় বছরজুড়ে অর্থাৎ ১২ মাস চাষের উপযোগী শিম (কাতলা শিম) চাষ করে অধিক পরিমাণ মুনাফা অর্জন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষক লোকমান মিয়া। এই শিম চাষ করে এখন তিনি অনেক সচ্ছলতা বোধ করছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়নের চতন্তর গ্রামে বছর জুড়ে নিজের উর্বর জমিতে শিম চাষ করেন কৃষক মোঃ লোকমান মিয়া। তিনি জানান, গত ৩ বছর পূর্বে পরীক্ষামূলকভাবে এই শিমচাষ শুরু করেন। শিমচাষ করে লাভবান হওয়ার পর থেকে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে তিনি শিম চাষ করতে থাকেন। ৩ বছর পূর্বে বেড়াতে যান পাবনায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখানে ১২ মাসের শিম চাষ দেখে তিনি উৎসাহ পান। বর্তমানে তার ৩০ শতাংশ জমিতে শিমের আবাদ করছেন।
সরজমিনে চতন্তর গ্রামে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে শত শত শিমের ফুল ফুটে আছে। ফুল থেকেই ফলন হয় শিমের। স্বাভাবিকভাবে চলতি মৌসুমে চাঁদপুরে শিমের আবাদ কোথাও চোখে পড়ে না। আর বছরের যে কোনো সময় শিম আবাদ করার বিষয়টি জানেন না চাঁদপুরের অধিকাংশ কৃষক। একমাত্র কৃষক লোকমানই পাবনা গিয়ে এই শিমের চাষ দেখে নিজের জমিতে এই নজির স্থাপন করেছেন।
কৃষক লোকমান মিয়া জানান, তিনি বেশ কয়েক বছর সৌদি আরব গিয়ে কৃষিকাজ করেন। তবে সেখানে শিম চাষ করেননি। গত কয়েক বছর আগে তার এক বোনের বাড়ি পাবনায় গিয়ে তাদেরকে ১২ মাস চাষের উপযোগী শিম চাষ করতে দেখেন। তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ না নিলেও দেখার কারণে নিজে চাঁদপুরে এসে নিজ জমিতে সেই শিমের আবাদ শুরু করেন। তার শিম গাছের মাচাগুলো দেখতে খুবই সুন্দর। বাজার থেকে মোটা সুতার জাল কিনে তা দিয়ে সারি সারি করে শিম চাষের জন্যে মাচা তৈরি করেছেন।
তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালে এই জমিতে প্রথম শিমের আবাদ শুরু করেন। তার এই জমিতে নিজের পরিশ্রম ছাড়া আবাদ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। প্রথমবার শিম বিক্রি করার পর গাছগুলো আর না কেটে পরিচর্যা শুরু করেন। ২০১৯ সালের শুরুতে এই জমিতে চাষ করা শিম বিক্রি করে প্রায় ১ লাখ টাকা উপার্জন করেন তিনি। এ সব শিম ঢাকার বাজারে বিক্রি করেছেন এবং ঢাকায় শিম বিক্রি করলে চাঁদপুরের চাইতে বেশি দাম পাওয়া যায় বলে কৃষক জানান। এখন আবারও সে শিমগাছ ফুল আর ফল দিতে শুরু করেছে। তবে সমস্যা হচ্ছে পোকার আক্রমণ। বাজার থেকে কয়েকবার কীটনাশক এনে ব্যবহার করলেও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচা গেলে আরো অধিক শিম উৎপাদনের আশা করছেন কৃষক লোকমান।
কৃষক লোকমান তার এই নতুন উদ্যোগটি আরো ব্যাপক সফলতার জন্য সরকারের  কৃষি অফিসের সহযোগিতা কামনা করেছেন। যদি তার জমিতে ১২ মাসেই এভাবে শিম উৎপাদন সফল হতে থাকে তাহলে চাঁদপুর এলাকার অন্য কৃষকরাও উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে। তারাও শিম চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবে। এতে করে চাঁদপুরের স্থানীয় মানুষের শিমের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিম পাঠিয়ে চাঁদপুরের কৃষকরা লাভবান হতে পারবে বলে এলাকাবাসীর বিশ্বাস।

 

 

সর্বাধিক পঠিত