জুন মাসের মধ্যে জেলার উন্নয়ন কাজগুলোর শতভাগ অগ্রগতি দেখতে চাই : জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান

চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মে মাসের সভা অনুষ্ঠতি হয়েছে। গতকাল রোববার ১৯ মে সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থ বছর জুন মাসে শেষ হবে। এ সময়ের মধ্যে চাঁদপুর জেলার উন্নয়ন কাজগুলোর শতভাগ অগ্রগতি আমরা দেখতে চাই। মতলব সেতুর চারপাশে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না এবং হরিণা ফেরিঘাটে চাঁদাবাজি চলবে না। প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে হবে। ঈদুল ফিতরের সময়ে শহরের যানজট নিরসনে প্রয়োজনে চাঁদপুর লঞ্চঘাট এবং কয়লাঘাট লঞ্চঘাট উভয় ঘাটে যাত্রী নামানোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে যার যার জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার জন্যে কমিটির সদস্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সভার শুরুতে বিগত সভার কার্যবিবরণী ও সিদ্ধান্তসমূহ সহ অগ্রগতির প্রতিবেদন তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান। বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি  নাছির উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সড়ক ও জনপথ, চাঁদপুর-এর নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম মুজিবুর রহমান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ হুমায়ুন কবির, হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী প্রমুখ।
চাঁদপুর নৌ-পুলিশের এসপি জমশের আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ মঈনুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ জামাল হোসেন, সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন, এনএসআই কর্মকর্তা, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুছ, মতলব দঃ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এইচএম গিয়াস উদ্দিন, বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম ইকবাল, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধরসহ কমিটির সদস্য সরকারি বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, হরিণাঘাটের অপরাধ প্রবণতাসহ সড়কে যাতে কোনো চাঁদাবাজি না হয় সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। মানুষের ঈদযাত্রা যেন শুভ হয় এবং ঈদকে ঘিরে সবদিক যেন সু-শৃঙ্খলভাবে হয় সে নিয়ে আমাদের সুন্দর পরিকল্পনা আছে। সবার সহযোগিতা নিয়ে চাঁদপুরের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখা হবে।
২৩ মে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ইফতার ও দোয়া মাহফিলের দাওয়াত দিয়ে পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে   জেলার উন্নয়ন কাজগুলো মানসম্মতভাবে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্যে সরকারি কর্মকর্তাদের আরো আন্তরিকতা বাড়িয়ে দিতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকারি সম্পত্তিগুলো রক্ষা করতে হবে। কারা নদীর পাড় দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে সেগুলো উচ্ছেদের উদ্যোগ নিতে হবে। কচুয়ার রাস্তার যে খবর পত্রিকায় এসেছে দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিন। চাঁদপুর সেচ ও মেঘনা  ধনাগোদা এ দুটি সেচ প্রকল্পের উৎপাদিত চলতি মওসুমের ধান কৃষকের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া সড়ক বিভাগের অধীন যেসব ব্রীজ-কালভার্ট করা হচ্ছে, সেগুলোর নিচ দিয়ে পানি প্রবাহ যাতে বিঘিœত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানান তিনি।
হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী তাঁর বক্তব্যে সভায় জনগুরুত্বপূর্ণ দুটি সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সমস্যা দুটি হচ্ছে পুরাণবাজার থেকে হরিণা চৌরাস্তা পর্যন্ত হাইমচর সড়কের বেহাল দশা এবং হাইমচরের ঈশানবালার নদী ভাঙ্গন। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানান।