নকল নবিসদের কলম বিরতি ॥ বাড়ছে ভোগান্তি


চাকুরি জাতীয়করণের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর সদরে বাংলাদেশ এক্সটা মোহরার (নকল নবিস) এসোসিয়েশন গত ৫মে থেকে ৭মে পর্যন্ত মানববন্ধন করেছে এবং ১৯ ও ২০ মে কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করছে। ফলে জমি রেজিস্ট্রির পরও দলিলের নকল তুলতে না পেরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে জনগণ।
সরেজমিনে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, নকল নবিসদের অধিকাংশ নারী। তারা বেতন বন্ধ থাকায় ছোট সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বাচ্চার দুধ ক্রয় থেকে শুরু করে লেখাপড়ার খরচ মিটাতে না পেরে তাদের মুখ মলিন হয়ে গেছে। নকল নবিস (এক্সটা মোহরার) দের চাকরি পে-স্কেল ভুক্ত না হওয়ায় সরকারি ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এক্সটা মোহরাররা বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও মহার্ঘ্য ভাতাসহ সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নারী এক্সটা মোহরারদের বিনা পারিশ্রমিকে মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করতে হয়।
চাঁদপুর সদর নকল নবিস এসোসিয়েশনের সভাপতি ইসমাইল মাহমুদ সাগর ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান বলেন, একজন নকল নবিসকে মাসে ৩শ’ পৃষ্ঠা লিখতে হয়। ৩শ’ পৃষ্ঠা লেখনি বাবদ সরকার জনগণের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা আদায় করেন। চাকরি জাতীয়করণ করলে ৪২তম গ্রেডে একজন নকল নবিসকে সব মিলিয়ে দিতে হবে ৮ হাজার ১২ টাকা। সরকারের অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে ৩ হাজার ৯শ’ ৮৭ টাকা। তারা আরো বলেন, এটি এমন একটি খাত যেখানে নকল নবিসদের চাকরি জাতীয়করণ করলে সরকারকে অন্য কোনো খাত থেকে অর্থ সংস্থান করতে হবে না। বরং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটিকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনয়ন করে কাজের গুণগত মান বৃদ্ধি করা সম্ভব। ১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৮৪ সালের ১৬ আগস্ট বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলে থাকাকালীন এক্সটা মোহরারদের চাকরি স্থায়ীকরণের ঘোষণা দেন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বর্তমানে এই ঘোষণা আটকে আছে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১১ জুন জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয় শান্তিপূর্ণভাবে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে তারা জানান।
চাঁদপুর জেলা রেজিস্ট্রার এসএম শামচ্ছুজ্জামান জানান, নকল নবিসদের দাবি যৌক্তিক।