চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা
লঞ্চে আনসার না থাকা এবং হাইমচরের পুলিশ কনস্টেবল হত্যার ঘটনা গুরুত্বের সাথে আলোচনা
উভয়টির বিষয়েই পুলিশ সুপারের আশ্বাস এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য


সম্প্রতি চাঁদপুর জেলায় মর্মান্তিক এবং আলোচিত ঘটনাটি ছিলো হাইমচরে মেঘনায় জেলেদের হামলায় পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ নিহত হওয়ার ঘটনা। আর চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত বেশ আলোচিত একটি সংবাদ ছিলো ‘বিভিন্ন নৌরূটের যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায়, বিগত ৩ বছর যাবৎ লঞ্চে কোনো আনসার নেই।’ হাইমচর থানার পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেন মেঘনায় জেলেদের হামলায় নিহত হওয়ার ঘটনার সংবাদ পরিবেশন ছাড়াও ঘটনার নেপথ্যে নানা বিষয় নিয়ে একাধিক অনুসন্ধানী সংবাদ পরিবেশন করা হয় চাঁদপুর কণ্ঠে।
চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত এই দুটি পর্যালোচনাধর্মী সংবাদ নিয়ে জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বেশ গুরুত্বের সাথে আলোচনা হয়। গতকাল রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই মাসিক সভাটি আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খানের সভাপ্রধানে অনুষ্ঠিত এ সভায় কমিটির সদস্য সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও মিডিয়া কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় চাঁদপুর জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা, সামাজিক নিরাপত্তাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে গতানুগতিক বিষয়ের বাইরে এক্সক্লুসিভ দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তা হচ্ছে-বিভিন্ন নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চে সশস্ত্র আনসার না থাকা এবং হাইমচরে পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ খুনের ঘটনা। লঞ্চে আনসার না থাকার বিষয়টি নিয়ে গত ৬ মে চাঁদপুর কণ্ঠে বিস্তারিত তথ্যমূলক অনেক বড় প্রতিবেদনধর্মী সংবাদ ছাপা হয়েছে। সে সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত ৩ বছর যাবৎ চাঁদপুর থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও দক্ষিণাঞ্চলীয় নৌপথে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চে কোনো আনসার নেই। এতে করে যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিন বছর আগে আনসার থাকলেও পরবর্তীতে কোনো আনসার সদস্য রাখছে না লঞ্চ মালিকরা। সে অশুভ এবং অগ্রহণযোগ্য চিন্তার কথাও তুলে ধরা হয়েছে সে সংবাদে। চাঁদপুর কণ্ঠে প্রকাশিত এ সংবাদটি গতকাল আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় চাঁদপুরের পুলিশ সুপার বেশ গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন।
পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির বিপিএম, পিপিএম বলেন, সম্প্রতি স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং যাত্রীদের থেকেও শুনেছি, লঞ্চে কোনো আনসার নেই, সিকিউরিটি থাকে না। একেকটি লঞ্চে ৩-৪ হাজার যাত্রী থাকে। গভীর রাতেও অনেক লঞ্চ হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। অথচ লঞ্চে কোনো আনসার নেই, পুলিশ নেই, সিউকিউরিটি নেই। এটি হতে পারে না। আগে আনসার ছিলো, এখন নেই কোনো? কীভাবে নূতন করে আনসার নিয়োগ করা যেতে পারে সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাইমচরে পুলিশ কনস্টেবল মোশারফ হোসেন খুন হওয়ার ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, সে ঘটনার সাথে যে যেভাবে জড়িত থাক না কেনো এগুলো আমরা ডিটেক্ট করে ফেলেছি। তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবেন। পুরো ঘটনা আমরা বের করে ফেলেছি। আসামীরা ধরা পড়েছে, কোর্টে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছে। ঘটনাটিকে একটা দুর্ঘটনা বলা যেতে পারে। তারপরও আরো তদন্ত শেষে আমরা আপনাদের বিস্তারিত জানাতে পারবো।