গ্রাম আদালতের বার্তা মাঠপর্যায়ে প্রচারে এনজিওসমূহের বিশেষ ভূমিকা বাঞ্ছনীয় : স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান


গত বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চাঁদপুরে কর্মরত বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) সমূহের প্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের নিয়ে গ্রাম আদালত বিষয়ে নিয়মিত মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ শওকত ওসমান, উপ-পরিচালক, স্থানীয় সরকার-চাঁদপুর। সভায় অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন গ্রাম আদালতের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস, স্থানীয় সরকার জেলা শাখার সহকারী পরিচালক মোঃ অলিদুজ্জামান ও সহকারী কমিশনার মোঃ মোরশেদুল ইসলাম। সভাটি পরিচালনা করেন চাঁদপুরে কর্মরত এনজিওসমূহের সমন্বয়ক মোঃ রেজ্জাকুল হায়দার খোকন। সভায় মোট ৬২টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, গ্রাম আদালতের বার্তা এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া অতীব জরুরি। কারণ, এখনো অসংখ্য মানুষ গ্রাম আদালতের বিচারিক-সেবার বিষয়ে জানে না। এজন্যে তারা কোনো বিরোধে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ-থানায় কিংবা জেলা আদালতে চলে আসেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ আদালতে দায়েরকৃত সিংহভাগ মামলাই ছোটখাট বিরোধ সংক্রান্ত যা স্থানীয়ভাবে গ্রাম আদালতে নিষ্পত্তি করা যেতো।
এ বাস্তবতায় তিনি চাঁদপুরে কর্মরত সকল বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মাঠ পর্যায়ে আপনাদের জনসম্পৃক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার সময় আপনারা গ্রাম আদালত বিষয়ক কিছু মৌলিক তথ্য জনসাধারণকে দিবেন, যাতে তারা এ বিষয়ে সচেতন হন এবং প্রয়োজনে বিচারিক-সেবা পেতে গ্রাম আদালতে আসেন। তিনি বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আপনারা দেশের উন্নয়নে সরকারের সহযোগী হিসেবে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করেন এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তাই আপনারা যদি আপনাদের চলমান কাজের পাশাপাশি গ্রাম আদালতের প্রচার-প্রসারে ভূমিকা নিতে পারেন তাহলে সমাজের অসহায় জনগোষ্ঠী সহজে ও স্বল্প সময়ে বিচারিক-সেবা পেয়ে উপকৃত হবেন।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান গণমাধ্যমের প্রশংসা করে বলেন, চাঁদপুর সহ দেশের বিভিন্ন মিডিয়া গ্রাম আদালতের সংবাদ, ফিচার ও তথ্য প্রকাশ করে সাধারণ পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছে বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ সরকারের একটি অতি জনগুরুত্বপূর্ণ সেবার বিষয়ে জানতে পারছেন এবং প্রয়োজনে এ সেবা নিচ্ছেন। আশা করি গণমাধ্যম এ ধারা অব্যাহত রাখবে এবং এভাবে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবে।
বেসরকারি সংস্থাগুলোকে তাদের চলমান কার্যক্রমের ওপর একটি মাসিক প্রতিবেদন জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে দাখিল করতে হয়। কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্যে উক্ত মাসিক প্রতিবেদনে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রচার-প্রচারণার অংশটুকু সংযুক্ত করার জন্যে গুরুত্বারোপ করা হয়। এ ব্যাপারে একটি নমুনা প্রতিবেদন নিয়ে সভায় আলোচনা হয়, যাতে পরবর্তী মাস হতে গ্রাম আদালতের প্রচার-প্রচারণার অগ্রগতির বিষয়টি প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গ্রাম আদালতের বিচারিকসেবা একটি সরকারি উদ্যোগ। এর প্রচার-প্রসারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা গ্রাম আদালতের সুফল বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই।