ফরিদগঞ্জে জমে উঠেছে বৈশাখী পোশাকের বাজার


বছর ঘুরে উৎসবের বারতা নিয়ে আবার আসছে বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের আগে এখন সবখানেই সাজ সাজ আয়োজন। নববর্ষকে বরণ করে নিতে সবাই নিজেকে সাজিয়ে নিবে সাদা-কালো-লাল রঙে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশীরা ফিরে যায় শেকড়ের সন্ধানে। ফিরে যায় নাড়ির টানে। খুঁজে ফিরে নিজেদের ঐতিহ্যকে। পয়লা বৈশাখের ছোঁয়া লাগে মানুষের পোশাকে আর খাবারে। পোশাকে দেখা যায় সত্যিকারের বাঙালিকে। বর্তমান প্রজন্ম পোশাক সংস্কৃতিতে ঝুঁকছে বেশি। অতীতে গ্রাম-বাংলায় নববর্ষ উদ্যাপন হলেও পোশাকের প্রতি এত আগ্রহ দেখা যায়নি। এখন মফস্বলের হাট-বাজারের বিপনী বিতানগুলোতে চোখ জুড়ানো সব বৈশাখী পোশাকের দেখা মেলে। ফরিদগঞ্জ বাজারে মঙ্গলবার ঘুরে ঘুরে দেখা যায় প্রায় সবগুলো দোকানেই সাজিয়ে রাখা হয়েছে বৈশাখের শাড়ি, থ্রি পিছ, পাঞ্জাবি ও টি-শার্ট।
উপজেলার কলাবাগান মার্কেটের বস্ত্র ব্যবসায়ী আরমান হোসেন সাগর জানান, ফরিদগঞ্জ বাজারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বৈশাখী পোশাক বেশি চলছে। সুতি শাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির ঐতিহ্য। পয়লা বৈশাখের এত রঙিন পোশাকের আয়োজনের মধ্যে এতটুকু কমেনি সুতি শাড়ির আবেদন। চিরায়ত বাঙালি নারীকে যেন শাড়িতেই বেশি মানায়। লাল-কালো-সাদা রঙের শাড়ি, হাতভরা কাচের চুড়ি, চোখে কাজল আর খোঁপায় গুঁজে দেয়া ফুল-এই হলো মেয়েদের নববর্ষের ষোল আনা বাঙালি সাজ। পয়লা বৈশাখে সুতি শাড়ি পরার চলটা শুরু হয় আশির দশকে। এর আগে বৈশাখী সাজে পরা হতো মূলত লাল পাড় সাদা জমিনের শাড়ি।
তারুণ্য এই বৈশাখে সেজে উঠবে রঙে রঙে, পোশাকে আর ফ্যাশনে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, এবার তরুণদের বৈশাখী পোশাকে থাকছে নানান ডিজাইন। সাদা-লাল-রঙের পাশাপাশি অন্যান্য রঙের পোশাকও এবার পরবেন তরুণ-তরুণীরা-এমনটাই জানালেন জ্যাডভান্স এপারেল্স-এর স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ মুন্না।
সিটি ফ্যাশনের দোকানীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, বৈশাখের ফ্যাশনে সালোয়ার, কামিজ ও ওড়না মিলিয়ে পরার চল এখন আর তেমন একটা নেই। ঢিলেঢালা হাতা এবং কুর্তা ও টপে নানা রকম কলারের ডিজাইন হাল সময়ে ভীষণ ফ্যাশনেবল হয়ে উঠেছে।
পাটোয়ারী বস্ত্র বিতানের দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার পহেলা বৈশাখে ছেলেদের পাঞ্জাবি দৈর্ঘ্যে খানিকটা কম থাকবে। হাতে বোনা তাঁত এবং খাদির পাঞ্জাবি চলছে এখন। গরমে আরামদায়ক হওয়ায় টি-শার্টও চলবে। বৈশাখের জন্য যে টি-শার্টগুলোতে বাংলা ক্যালিগ্রাফি এবং দেশীয় নানা মোটিফ। ক্যালিগ্রাফি আছে মেয়েদের পোশাকেও। মেয়েদের কুর্তার সঙ্গে পালাজ্জোর চেয়ে এখন পেনসিল কাট প্যান্টটা বেশি চলছে। এখন ফ্যাশনে দেশীয় ও পাশ্চাত্য ধাঁচের সমন্বয় বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। বিপনী বিতান ছাড়াও ফুটপাতের দোকানগুলোতেও বৈশাখের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। শহীদ মিনারের সামনে প্রতিদিন দোকান খোলেন শিহাব। তার সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, গত বছর প্রতিদিন ৫-৬ হাজার টাকা বিক্রি করতাম। এখন আর তেমন বিক্রি নেই। শিহাব শুধু বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি করেন। ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ২শ’ টাকার মধ্যে তার দোকানে ছেলে এবং মেয়ে শিশুদের পোশাক পাওয়া যায়।