• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

‘মাঝে মাঝে মন চায় মাইয়্যাডারে লইয়া মইরা যাই’

পঙ্গু পিতা আমান উল্যাহ প্রতিবন্ধী কন্যার চিকিৎসায় ভ্যানে চড়ে বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন

প্রকাশ:  ০৫ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 ‘মাঝে মধ্যে মনে চায় মাইয়্যাডারে লইয়া মইরা যাই, তার দুঃখ-কষ্ট আর সইতে পারছি না।’ আক্ষেপ করে কথাগুলো বললেন কচুয়া উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়নের দোয়াটি গ্রামের পঙ্গু পিতা আমান উল্যাহ। বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। একেতো পঙ্গু, অপরদিকে ঘরে স্ত্রী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে। অর্থাভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। অভাব-অনটন যেনো আমান উল্যাহর নিত্য সঙ্গী। কখনো কখনো নুন আনতে পান্তা ফুরায় তার। এমনি এক হতভাগ্য প্রতিবন্ধী বাবা যে নিজেই চলতে অক্ষম, আবার তার কাঁধে শারীরিক প্রতিবন্ধী কন্যা সন্তান।
সরজমিনে গেলে পঙ্গু আমান উল্যাহ দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের এ প্রতিনিধিকে জানান, মাত্র বারো বছর বয়সে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন সময়ে টাইফয়েড জ¦রে আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু হয়ে পড়েন তিনি। সামান্য ভূ-সম্পত্তির অধিকারী আমান উল্লাহ পঙ্গুত্বের অভিশাপ নিয়ে বেঁচে আছেন স্ত্রী, দুই মেয়ে হালিমা (২৪) ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সালমা (১২)কে নিয়ে। ৬/৭ বছর পূর্বে নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে ও এলাকার লোকজনের সাহায্য সহযোগিতায় বড় মেয়ে হালিমার বিয়ে দেন। জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে সালমা ক’ বছর পূর্ব থেকে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। প্রায়ই মাথা ব্যথা হয়। তার শরীরের যে কোনো অংশ কোনো কিছুর সাথে হাল্কা ধাক্কা খেলে তাৎক্ষণিকভাবেই সমস্ত শরীর ঝিম-ঝিমিয়ে উঠে ও প্র¯্রাব-পায়খানা হয়। সম্প্রতি তাকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে নিয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার দেখানো হয়। ডাক্তার তার মাথা স্ক্যান করাসহ বেশ কয়েকটি জটিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। এসব পরীক্ষাসহ চিকিৎসা বাবদ প্রায় দশ লাখ টাকার প্রয়োজন। আমান উল্যাহ নিজের চিকিৎসা ও বড় মেয়ের বিয়ের ব্যয়ভার নির্বাহে যে যৎসামান্য ভূ-সম্পত্তি ছিলো তা বিক্রি করে দেন। এখন তার এক চিলতে ভিটির সম্পত্তি ছাড়া আর কোনোই সহায়-সম্পদ নেই। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর থেকে মাসিক ৩০০ টাকা হারে পঙ্গু ভাতা পান। এ পঙ্গু ভাতা আর পাড়া-প্রতিবেশীদের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে কোনো রকমে সংসার চালিয়ে আসছেন। প্রায়ই স্ত্রীসহ ৩ সদস্যের পরিবারের সদস্যরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে। এর উপর ছোট মেয়ে সালমার চিকিৎসার ব্যয়ভার চালানোর চিন্তাই করতে পারছেন না পঙ্গু বাবা। এ যেনো আমান উল্যাহর উপর মরার ওপর খাড়ার ঘা।
এদিকে সালমা শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে যে চরম দুর্ভোগ পোহায়ে বাঁচার চেষ্টা করছে সে করুণ দৃশ্যে আমান উল্যাহ স্থির থাকতে পারছেন না। কোনো উপায় না পেয়ে ভ্যান গাড়িতে চড়ে এলাকার বিত্তবানদের দ্বারে দ্বারে ছুটে গিয়ে মেয়ের চিকিৎসার খরচের জন্যে অর্থ সাহায্য পাওয়ার আবেদন জানিয়ে আসছেন। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না আমান উল্যাহ। এমনি অবস্থায় কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি তার কন্যার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনে এগিয়ে আসলে ০১৮২৯১৯২৩২২ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে বিনয়ের সাথে অনুরোধ জানিয়েছেন।

সর্বাধিক পঠিত