জমে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা
১৯৯২ সাল থেকে শুরু হওয়া চাঁদপুরের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা এ বছর গৌরবের ২৭তম বর্ষে উপনীত হয়েছে। বিগত ২৬ বছরের মতো এ বছর শুরুতেই মেলা জমজমাট হয়ে উঠেছে। এ বছর বিজয় মেলা কর্তৃপক্ষ মেলায় বেশ কিছু নতুনত্ব এনেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার। মেলা কর্তৃপক্ষ শিশুদের কথা বিবেচনা করে এ কর্নারটি প্রদর্শনী স্টলের দক্ষিণ পাশে তৈরি করায় মায়েরা তাদের শিশুদেরকে নিরাপদে বুকের দুধ ও খাবার খাওয়াতে পারছে।
গত ১ ডিসেম্বর থেকে বিজয় মেলা শুরু হয়েছে। বিকেল হলেই মেলা মাঠ শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীরা মুখরিত করে রাখছে। এ বছর মেলায় বেশ কিছু নতুন স্টল এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কুমিল্লার বিখ্যাত পিঠাঘর। এই পিঠার দোকানটিতে প্রতিদিন বিকাল হলেই ক্রেতার সমাগম ঘটতে থাকে। এর কারণ হলো মেলা মাঠে পিঠার দোকানটি এ বছরই প্রথম এসেছে। দোকানটিতে হরেক রকমের বাহারী পিঠা তৈরি করা হচ্ছে ক্রেতার সামনেই। আর নির্ধারিত দামের মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। সেজন্যে বিকেল ৩টা থেকে শুরু করে রাতে মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত এখানে ক্রেতার সমাগম দেখা যায়।
বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের সেই বিখ্যাত মুখরোচক খাবার নিয়ে এসেছে আদি লোকনাথ স্টোর। এখানে বিক্রিত নিমকি, মুরলি, কদমা, বাতাসা, হরেক রকমের আচার, চিপস ইত্যাদি মুখরোচক খাবার পূর্ব থেকেই ক্রেতার মন কেড়েছে। এ বছর তাদের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের বক্তারবলি থেকে একই ধরনের পণ্য নিয়ে এসেছে হাওলাদার স্টোর। দোকান মালিক বিল্লাল হোসেন হাওলাদার জানান, আমরা চাঁদপুরবাসীকে মুখরোচক খাবার দিতে এই প্রথমবার বিজয় মেলায় এসেছি। শিশু-কিশোরদের জন্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খেলনা সামগ্রী ও কসমেটিক্স সামগ্রীর স্টল। এর পাশাপাশি রয়েছে শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে বেশ কয়েকটি ব্লেজার ও উন্নতমানের কম্বল এবং পশমী চাদরের স্টল। নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চাটখিল, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রায় ৮০টির মতো বাণিজ্যিক স্টল মেলায় এসেছে। খাবার সামগ্রীর মধ্যে লেকেরপাড় চটপটির দোকানটি বেশ কয়েক বছর ধরে চাঁদপুরবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।
বিজয় মেলা মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মুক্ত আলোচনা হচ্ছে নিয়মিত। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিজয় মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়ে থাকে। বিজয় মেলায় এ বছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনায় রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক কমান্ড, আগরতলার ত্রিপুরার সতীশ ইনস্ট্যান্ট শারদ সম্মাননা, বাংলার মুখ সাংস্কৃতিক সংগঠন, নবজাগরণ সাংস্কৃতিক সংগঠন, রক্সি মিউজিক একাডেমি, বিবেকানন্দ যুব সংঘ, উদীচী হাজীগঞ্জ শাখা, স্বাধীন বাংলা থিয়েটার, বাংলাদেশ হাওয়াইন গীটার শিল্পী পরিষদ, রংধনু সৃজনশীল নৃত্যসংগঠন, দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠন, নৃত্যধারা, স্বপ্নকুঁড়ি সাংস্কৃতিক সংগঠন, নটমঞ্চ, চাঁদপুর মঞ্চ, মৃত্তিকা মিউজিক একাডেমি, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, শারদা দেবী সংগীত নিকেতন হাজীগঞ্জ, উদয়ন সঙ্গীত বিদ্যালয়, স্বদেশ সাংস্কৃতিক সংগঠন, কচুয়া ঝিলমিল সাংস্কৃতিক সংঘ, নতুন কুঁড়ি সাংস্কৃতিক সংগঠন, পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি-পুনাক, জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ চাঁদপুর, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চাঁদপুর, নৃত্যাঙ্গন, চাঁদপুর ড্রামা, খেলাঘর জেলা কমিটি, ললিত কলা, সুরধ্বনি সঙ্গীত একাডেমি, শিশু একাডেমি, সঙ্গীত নিকেতন, চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠন, রঙের ঢোল ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চাঁদপুর।