• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

২ শিশু সন্তানসহ পরিবারের ৪ সদস্যের খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে ॥ লাখ টাকায় বাঁচতে পারে পঙ্গু মিন্টুর জীবন

প্রকাশ:  ০২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৪১
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

প্রতিবেশীর আবদার রক্ষা করতে সুপারী পাড়তে গিয়ে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের আব্বাস উদ্দিনের ছেলে মিন্টু। গত ১ বছর ধরে হুইল চেয়ারে জীবন কাটছে মিন্টুর। চিকিৎসকরা বলেছেন, মেরুদ-ের অপারেশন করতে হলে কমপক্ষে ১ লাখ টাকা দরকার। এমনিতেই মিন্টুর সংসার চলছে প্রতিবেশীদের সহায়তায়। যেদিন কিছু পাওয়া যায় সেদিন ২ শিশু সন্তানসহ ৪ জনের চুলায় রান্না চড়ে, আর যেদিন কিছু পাওয়া না যায় সেদিন না থেয়ে থাকতে হয়। যেখানে খাবার জুটানো দায় সেখানে ১ লাখ টাকা জোগাড় তো আকাশকুসুম কল্পনা ছাড়া আর কিছুই না মিন্টুর পরিবারের জন্যে।
    সরজমিনে মিন্টুর বাড়িতে গেলে মিন্টু ও তার প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের নভেম্বর মাসের শুরুর দিকের কোনো একদিন অন্যের জমিতে ৩শ’ টাকার মজুরির হাজিরা শেষে দুপুরের কিছু পরে বাড়ি এসে গোসল করার প্রস্তুতি নেন মিন্টু। এ সময় পাশের চৌধুরী বাড়ির শঙ্কর প্রসাদ রায় চৌধুরীর ছেলে পাপন রায় চৌধুরী এসে আবদার করেন তার গাছের সুপারীগুলো পেড়ে দেবার জন্য। গাছ থেকে সুপারী পাড়তে গিয়ে পড়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হন মিন্টু। আহত মিন্টুকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে নেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য একই দিন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে বেশ ক’দিন চিকিৎসা শেষে টাকার অভাবে চিকিৎসা সম্পন্ন (অপারেশন) করা ছাড়া বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেই থেকেই হুইল চেয়ারে জীবন চলছে মিন্টুর।
    মিন্টুর স্ত্রী লাকী বেগম চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, ঢাকা নেয়ার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার (মিন্টু) মেরুদ-ের হাড় তিন ভাগে ভেঙ্গে গেছে। এলাকাবাসীর সহায়তায় সেই সময় এমআরআই করানো হয়। এর পরেই পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন মেরুদ-ের অপারেশন করালে বসে কাজ-কর্ম করতে পারবে। আর অপারেশন করতে হলে সর্বসাকুল্যে এক লক্ষ টাকা লাগবে। টাকার ব্যবস্থা করতে না পারায় বাড়িতে নিয়ে আসি। তিনি এখন আগের থেকে আরো বেশি অসুস্থ। কোমর থেকে নিচের অংশ পুরোপুরি অচল হয়ে গেছে। পা গুলো পূর্বের চেয়ে চিকন হয়ে গেছে। টিউবের মাধ্যমে প্র¯্রাব করার কারণে প্র¯্রাব করার স্থানে ক্ষত অনেক বেড়ে গেছে। দৈনন্দিন ঔষধের টাকা জোগানো কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের দুর্ভাগ্য, যে পরিবারের গাছের সুপারী পাড়তে গিয়ে তিনি এমন বিপদে পড়েছেন, সেই পরিবার ঢাকা যাওয়া-আসার ভাড়ার টাকা ছাড়া আর কোনো খবরই রাখেন না।
    ‘কে কাকে কয়দিন এমনি এমনি খাওয়ায়’ এমনভাবে মনের ভাব প্রকাশ করে মিন্টুর ফুফাতো ভাই সুলতান গাজী জানান, মিন্টু পঙ্গু হয়ে যাওয়ার পর থেকে দৈনিক খাবারের চাল-ডাল এলাকার বিভিন্ন পরিবার থেকে (ভিক্ষা করে না) মিন্টুর স্ত্রী চেয়ে এনে রান্না করে। আর এভাবেই মিন্টুর পরিবারের খাবার জোটে। পরিবারটির এতো বিপদের মধ্যে কোনো ধরনের অনুদান জোটেনি মিন্টুর ভাগ্যে।
    বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী  জানান, মিন্টুর চিকিৎসার জন্য আমি কিছুটা সহায়তা করেছি। তাকে কাল (আজ রোববার) অফিসে আসতে বলবেন, তার জন্য পঙ্গু ভাতার ব্যবস্থা করেছি।

সর্বাধিক পঠিত