চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন
চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুপাশ বর্ধিত করতে গিয়ে সড়কের উপর থেকে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন না সরিয়ে কাজ শেষ করে সড়ক বিভাগ। এতে করে যে কোনো সময় ঘটতে পারে জীবনহানির মতো মারাত্মক দুর্ঘটনা। সড়ক বিভাগ বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়ে দায় সেরেছে বলেই প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। সড়ক বিভাগের এমন ঝুঁকিপূর্ণ অংশটি হাজীগঞ্জ পৌরসভার খাটরা বিলওয়াই এলাকায়।
সম্প্রতি হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বলাখাল রেল স্টেশন সড়কের পাশে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর আওতাধীন একটি সাবস্টেশন বসানো হয়। এই সাবস্টেশনের দুটি লাইনের মধ্যে ১১ হাজার ভোল্টের একটি লাইন চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তর পাশ ধরে হাজীগঞ্জ বাজারে চলে গেছে। খুঁটিগুলো বসানো ও লাইন সরবরাহ করার সময় সড়কের শোল্ডারে ছিলো খুঁটিগুলো। গত কয়েক মাস পূর্বে সড়ক বিভাগ চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দু’পাশ বর্ধিতকরণসহ উঁচুকরণের কাজ শুরু করে। বর্ধিত করাতে সড়কের এ অংশের বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো শোল্ডার থেকে একেবারে পিচ ঢালাইয়ের মধ্যে চলে আসে।
সরজমিনে দেখা যায়, ধেররায় মরহুম অ্যাডঃ তাফাজ্জল হায়দার নসু চৌধুরীর বাড়ি সংলগ্ন সড়ক বিভাগের সেতুর অংশ থেকে শুরু হয়ে সড়কের উত্তর অংশ ধরে লাইনটি সোজা মিঠানিয়া সেতু পর্যন্ত চলে গেছে। এই অংশটুকুর বেশ ক’টি খুঁটি সড়কের শোল্ডারের মধ্যে আছে, যা পাকা (পিচ ঢালাইয়ের) অংশ থেকে মাত্র ১ থেকে ২ ফুটের মধ্যে রয়েছে। আবার ধেররা মাছ বাজার, ধেররা ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের উল্টা পাশ এমনকি ধেররা তালুকদার বাড়ির সামনের খুঁটিগুলো পাকার ভেতরে ঢুকে পড়েছে।
স্থানীয় তালুকদার বাড়ির সুমন তালুকদার জানান, সড়ক বিভাগ বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো সড়কের পাশ থেকে না সরিয়ে সড়কের দু’পাশ বর্ধিতকরণের কাজ শেষ করে। আর এতে করে হাজীগঞ্জ বাজারে চলে যাওয়া লাইনটির বেশ ক’টি খুঁটি সড়কের পাকা অংশের মধ্যে চলে আসে। এটা সড়ক বিভাগের এক ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার মধ্যে পড়ে। স্থানীয় খান বাড়ির কামরুল ইসলাম খান বলেন, সড়কের মধ্যে চলে আসা কংক্রিটের তৈরি এই খুঁটিগুলোর কোনো একটিতে যাত্রীবাহী কিংবা ভারী পরিবহনের আঘাত লাগলে কী ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
স্থানীয় সেলিম বেপারী ওরফে সেলিম কন্ট্রাক্টর চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, সড়কের পাশ থেকে খুঁটি না সরিয়ে এভাবে সড়কের বর্ধিতকরণের কাজ কীভাবে করা হলো তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা জোর দাবি করছি, সহসাই সংশ্লিষ্টজনরা বিষয়টি সু-নজরে নিয়ে সড়কের উপর থেকে খুঁঁিট সরিয়ে নিবেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সড়ক বিভাগের হাজীগঞ্জ সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম ফারুক জানান, সড়ক থেকে খুঁটি সরিয়ে নিতে আমরা প্রশাসনিকভাবে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। সড়ক বিভাগ এ বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করেনি এমনটা জানিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চাঁদপুর-১-এর জেনারেল ম্যানেজার কেফায়েত উল্যাহ জানান, আমাদের লাইনটি নির্মাণের সময় সড়ক থেকে নিরাপদ দূরত্ব রেখেই খুঁটি স্থাপন করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে সড়ক বর্ধিত করতে গিয়ে খুঁটিকে সড়কের অভ্যন্তরে এনে লাইনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে ফেলা হয়েছে। তবে সরজমিনে তদন্ত করে ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটিগুলো সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া নেয়া হচ্ছে।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ.স.ম. মাহবুব উল আলম লিপন চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, এটা এখন ঝুঁকিপূর্ণ লাইনে পরিণত হয়ে গেছে। কোনো কারণে এখানে দুর্ঘটনা ঘটলে যাত্রীসাধারণের ক্ষতির সাথে পৌরবাসীও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তড়িতভাবে ব্যবস্থা না নিলে দুর্ঘটনার জন্য সড়ক বিভাগ আর বিদ্যুৎ বিভাগ দায়ী থাকবে।