ফরিদগঞ্জে ১টির পরিবর্তে সরকারি ৬টি গাছ কর্তন
ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে একটি মৃত সরকারি সেগুন গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো উপজেলা প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার একটি মাধ্যমে ৬টি মূল্যবান গাছ কাটার নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ওই গাছগুলো কাটা শুরু করেছেন ঠিকাদার নাছির উদ্দিন হাজী। এই গাছ কাটার দ্বৈতনীতির যৌক্তিকতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম জানান, উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে একটি মৃত সরকারি সেগুন গাছ রয়েছে। উক্ত গাছটি অপসারণের বিষয়ে তিনি সভায় আলোচনা করেন। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে বিধি মোতাবেক সর্বসম্মতিক্রমে গাছটি অপসরাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরবর্তীতে ৪ অক্টোবর তা রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্ত হয়।
কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার গত ১১ নভেম্বর তার স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে একটি গাছের স্থলে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে থাকা মূল্যবান ৪টি মেহগনি ও ২টি সেগুন গাছ কর্তন করতে উক্ত ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, কর্তন করা গাছগুলো দিয়ে নবনির্মিত উপজেলা হলরুমের ফার্নিচার তৈরি করা হবে। একই সাথে কর্তন করা গাছগুলো ফাইল করার জন্যে মের্সাস নাঈম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নাছির উদ্দিন হাজীকে অনুমতি প্রদান করেন।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নাছির উদ্দিন হাজী তার লোকজন দিয়ে ওই গাছকাটা শুরু করেছেন। এ সর্ম্পকে নাছির উদ্দিন হাজী এ প্রতিনিধিকে বলেন, দৈনিক শ্রমিক হাজিরার ভিত্তিতে আমাকে ৬টি গাছ কাটার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে।
এ সর্ম্পকে উপজেলা প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার সাংবাদিককে জানান, উপজেলা পরিষদের পূর্বের মাসিক সভায় একটি মৃত গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়। তবে হলরুমের আসবাবপত্র তৈরির জন্যে ওই গাছটিসহ আরো ৫টি গাছ কাটার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যারের উপস্থিতিতে আরেকটি সভায় সিদ্ধান্ত হয়। সামনের সভায় তা রেজুলেশনভুক্ত করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার একটি গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, মূলত উপজেলা হলরুমের ফার্নিচার তৈরির জন্য আরো ৫টি গাছ কাটার আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সামনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং রেজুলেশন হাতে পাওয়ার আগেই সরকারি গাছগুলোর সঠিক মূল্য নির্ধারণ ছাড়াই উপজেলা প্রকৌশলী একটি গাছের পরিবর্তে ৬টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত অদৃশ্য ক্ষমতাবলে দিয়ে দিয়েছেন।