• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হাজারো ভক্তের প্রজ্জ্বলিত আলোয় আলোকিত পুরাণবাজার লোকনাথ মন্দির ও আশ্রম

নিজকে কখনো দুর্বল ভাববেন না, সরকার আপনাদের পাশে আছে : পুলিশ সুপার মোঃ জিহাদুল কবির পিপিএম

প্রকাশ:  ১২ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

পুরাণবাজার লোকনাথ মন্দির ও আশ্রমের ২২ তম ঘৃত প্রদীপ প্রজ্জ্বলন উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী উৎসবের শেষদিন সন্ধ্যায় হজারো ভক্ত নর-নারীর প্রজ্জ্বলিত ঘৃত প্রদীপের আলো আলোকিত হয়ে উঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। গত ১০ নভেম্বর শনিবার দুপুরের পর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত  হাজারো ভক্ত নর-নারী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর সন্তুষ্টি কামনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের লক্ষ্যে লোকনাথ মন্দির ও আশ্রমে উপস্থিত হন। সন্ধ্যায় উপস্থিত সকলে একই সময় দেশ ও জাতির কল্যাণ ও নিজেদের সুখ-শান্তি কামনা করে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। এ সময় প্রদীপের আলো, ধূপের ধূয়া আর শ্রীমদ্ভাগবত গীতার অমৃত বাণীতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য সৃষ্টি হয়। জয় বাবা লোকনাথ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। ভক্ত হৃদয় একাগ্রচিত্তে প্রার্থনা জানান শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর রাতুল চরণে। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন পুলিশ সুপার মোঃ জিহাদুল কবির পিপিএম, মডেল থানার অফিসার ইনচার্জসহ আমন্ত্রিত অতিথিবর্গ। তাঁদেরকে স্বাগত জানান মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ। এক সাথে এত নারী পুরুষের প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও সুশৃঙ্খল আয়োজনসহ সুন্দর পরিবেশ দেখে অতিথিবৃন্দ অভিভূত হন।
সুন্দর আয়োজনের জন্যে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, এমন সুন্দর আয়োজন দেখে আমি সত্যিই অভিভূত। আমরা সকলেই যদি ন্যায় পথে থেকে আমাদের জীবন পরিচালনা করি, তাহলে আমাদের সকলের জীবনই সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে এবং আমরা সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো। আমরা সকলেই এই দেশের নাগরিক, তাই সকলের অধিকার রয়েছে রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার। আপনারা নিজেদেরকে কখনো দুর্বল ভাববেন না। সরকার আপনাদের পাশে আছে।  আপনারা যখনই কোনো সমস্যা মনে করবেন আমার কাছে আসবেন। প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আমার দরজা সকল সময় খোলা রয়েছে। আমি সর্বাত্মাকভাবে সহযোগিতা করবো। সকলের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে কেউ অন্যায় করবেন না এবং অপরকে অন্যায় করার সুযোগ দিবেন না। আমরা যে যেই ধর্মের অনুসারী হই না কেন সকল ধর্মের মূল লক্ষ্যই এক-মানুষকে ভালোবাসা, মানুষের কল্যাণ সাধন করা, অন্যায় পথ পরিহার করা ও সৎ পথে পথ চলা। তাহলে আমাদের মাঝে এতো বিভেদ কেন? আমাদের সকল বিভেদ ভুলে গিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে, দেশকে ভালোবাসতে হবে, সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের উন্নয়নে সকল অপকর্ম থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইব্রাহিম খলিল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সন্তোষ চন্দ্র দাস, চাঁদপুর হরিবোলা সমিতির সভাপতি অজয় কুমার ভৌমিক, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ রনজিত রায় চৌধুরী, শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ। লোকনাথ মন্দির ও আশ্রম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তন্ময় বণিকের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন মন্দির ও আশ্রম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সাহা, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক রোটাঃ রিপন সাহা, সহ-সভাপতি প্রমোদ কুমার দাস, পরেশ মালাকার, হরিপদ দাস, প্রভাষ সাহা, তাপস দত্ত, মানিক সাহা, যুগ্ম সম্পাদক অরুপ রতন দাস, সুবল ঘোষ, বিশ্বনাথ ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ অজিত সাহা, সদর উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি তপন সরকার, চাঁদপুর শহর কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি লিটন সাহা, সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর দাস, চাঁদপুর জেলা লোকনাথ সেবক সংঘের সভাপতি সুমন সাহা, সহ-সভাপতি রনি পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক হৃদয় সাহা বিনু, কোষাধ্যক্ষ কাকন সরকার প্রমুখ। প্রদীপ প্রজ্জলন অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন কেদারনাথ চক্রবর্তী (কেদু কর্তা)। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শেষে একযোগে সারিবদ্ধভাবে প্রজ্জ্বলিত প্রদীপ মন্দির সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এ সময় প্রজ্জ্বলিত ভাসমান প্রদীপের আলো অন্ধকার দূরীভূত করে নদীর বুক আলোকিত করে তোলে। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে  থেকে শত শত মানুষ তা অবলোকন করেন। এ সময় এক ধর্মীয় অনুভূতির সৃষ্টি হয়। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শেষে উপবাসী ভক্তবৃন্দসহ সকলের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। দিনব্যপী আয়োজিত পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল ধর্মীয় অনুভূতি ও উৎসবের আমেজ।

 

সর্বাধিক পঠিত