পরিবহন ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরমে ॥ হরিণা ফেরিঘাটে অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাক
সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘন্টা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও চাঁদপুরে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ ছিলো। রাস্তায় সীমিত আকারে চলাচল করেছে অটোবাইক।
রাস্তায় কোনো গণপরিবহন চলাচল না করায় অব্যাহত রয়েছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ কর্মজীবী অনেকের পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। এদিকে সড়কে পরিবহন শ্রমিকরা যাতে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে না পারে সেদিক লক্ষ্য রাখার জন্যে গতকাল চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন ছিলো।
ধর্মঘটের ২য় দিনেও বিভিন্ন সড়কে পরিবহন শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বহরিয়া দুলাল খান মার্কেটের সামনে এবং লক্ষ্মীপুর পশ্চিম শ্রীরামপুরে গাছ ফেলে শ্রমিকদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। গতকালও চাঁদপুর পৌর বাস টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। ধর্মঘটের দরুণ চাঁদপুর-শরিয়তপুর ফেরি রুটের দুই পাড়ে অসংখ্য পণ্যবাহী গাড়ি আটকে আছে। সরজমিনে হরিণা ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পুরো ফেরি টার্মিনাল মাঠ জুড়ে ট্রাক আর ট্রাক। শ্রমিকরা জানায়, ধর্মঘট চলছে, তাই ঘাটে দুদিন যাবৎ আছেন। তবে ফেরি চলাচল অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় সংসদে সদ্য পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবি আদায়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর। সড়কে কোনো ধরনের গণপরিবহন না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে চাকুরিজীবী ও শিক্ষার্থীরা। জীবনের তাগিদে অনেকে মানুষ হেঁটে গন্তব্যে যান। অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, ভ্যান, রিক্সা চললেও তা যাত্রী তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। এ ক্ষেত্রে আবার এসব পরিবহনে ভাড়াও বেড়েছে কয়েকগুণ। জনদুর্ভোগ চরমে উঠলেও এখন পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোনো আভাস মিলছে না। আজ মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ধর্মঘটের সময়সীমা শেষ হবে।
এদিকে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা বলছেন, দাবি না মানলে ফের ৯৬ ঘন্টার ধর্মঘটে যাবেন তারা। উল্লেখ্য, এ সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি হচ্ছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান।