• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

জেন্ডার ও গ্রাম আদালত বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মশালা

গ্রাম আদালতের বিচার প্রক্রিয়া নারীবান্ধব ও ভয়মুক্ত করতে হবে : জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান

প্রকাশ:  ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান বলেছেন, গ্রাম আদালতের বিচার প্রক্রিয়া নারীবান্ধব ও ভয়মুক্ত করতে হবে। আইনের দৃষ্টিতে প্রত্যেক নাগরিক সমান। তাই সবাই আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকার রাখে। সমতার এই বিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত। বর্তমান সরকার সাংবিধানিক অঙ্গীকার অনুসরণ করে নারীদের উন্নয়নের জন্যে বিভিন্ন আইন ও নীতি প্রণয়ন করেছে। কিন্তু বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থায় নানা কারণে নারীরা এখনও অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে। ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও নারীদের জন্য বিভিন্ন বাধা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেলেও এখনো নারীদেরকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
    গতকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেন্ডার ও গ্রাম আদালত বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সচেতনামূলক দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ মাজেদুর রহমান খান এসব কথা বলেন।
    তিনি আরো বলেন, নারীদের সম-সুযোগ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে ২০১১ সালে প্রণীত হয়েছে জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি। আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়ও সমতার ভিত্তিতে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত করার নির্দেশনা সংযুক্ত হয়েছে। এছাড়াও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাধারণ জনগণের কাছে ন্যায়বিচারকে সহজ করতে এবং মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালতকে কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন। সব শ্রেণির মানুষ যাতে ন্যায় বিচার পায় সেজন্যে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
    স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ শওকত ওসমানের সভাপ্রধানে কর্মশালায় বিশেষ  অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং ভারপ্রাপ্ত জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মোঃ মোস্তফা শাহরিয়ার খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান ও চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী।
    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং ভারপ্রাপ্ত জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মোঃ মোস্তফা শাহরিয়ার খান বলেন, প্রথাগতভাবে স্থানীয় জনগণ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্যে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারস্থ হয়। এই অভিজ্ঞতার সূত্র ধরেই স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এলাকার ছোটো-খাটো বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সালে গ্রাম আদালত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। তাই সাধারণ জনগণের বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গ্রাম আদালতকে আরো বেশি সক্রিয়করণ জরুরি। তিনি এজন্যে সকলকে নিজ নিজ পক্ষ থেকে অর্থবহ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান।
    বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচারিক প্রতিকার লাভের ক্ষেত্রে নারী ও অন্য সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। গ্রাম আদালতের প্যানেল সদস্য হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতেও সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গ্রাম আদালতের সেবা নারী-পুরুষ সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছে দিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।  
    কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউএনডিপি’র জেন্ডার স্পেশালিস্ট কামরুন্নেসা নাজলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর নিকোলাস বিশ্বাস। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের বিজ্ঞ বিচারক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার, জেলা পুলিশের কর্মকর্তা, সরকারের বিভিন্ন লাইন ডিপার্টমেন্টের জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান ও নারী সদস্য, আইনজীবী, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ ৬০ জন এ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পরিচালিত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন এ কর্মশালাটির আয়োজন করে।
ছবি-২২
বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক মন্টু পাটওয়ারী আর বেঁচে নেই
আজ সকাল ১০টায় ময়দার মিল মাঠে জানাজা

    চাঁদপুর কণ্ঠ রিপোর্ট ॥ চাঁদপুরের স্বনামধন্য রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, সকলের প্রিয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ শামছুল হক মন্টু পাটওয়ারী আর বেঁচে নেই। তিনি গতকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে------রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৬৩ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও আত্মীয়-স্বজনসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে যান। আজ সকাল ১০টায় চাঁদপুর শহরের নতুনবাজার বাগাদী রোডস্থ রহমান ফ্লাওয়ার মিল (ময়দার মিল) মাঠে মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার নামাজে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভাইকে উপস্থিত হওয়ার জন্যে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে এবং জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অনুরোধ জানিয়েছেন।
    মন্টু পাটওয়ারীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০ অক্টোবর শনিবার ভোরে তিনি দক্ষিণ গুণরাজদীস্থ তাঁর নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এদিন সকালেই তাঁকে ঢাকাস্থ ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস-এ অধ্যাপক ডাঃ দীন মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২৩ অক্টোবর মঙ্গলবার তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি এ পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন। মৃত্যুর সময় তাঁর পাশে ছিলেন তাঁর প্রিয়তমা সহধর্মিণী এবং বড় ছেলে পার্থ। মরহুমের ছোট ছেলে বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে গতকাল বিকেলের ফ্লাইটে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন।
    শামসুল হক মন্টু পাটওয়ারীকে ঢাকা নিউরোসায়েন্সেস-এ ভর্তি করানোর পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখেন এবং নিজে উপস্থিত থেকে তদারকি করেছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি। মঙ্গলবার রাতেও দীপু মনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ে গিয়ে মন্টু পাটওয়ারীর সর্বশেষ অবস্থা জানেন। গতকাল তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শুনে ডাঃ দীপু মনি খুবই মর্মাহত হন এবং মন্টু পাটওয়ারীর সাথে তাঁর নানা স্মৃতির ছবিসহ ফেসবুকে মৃত্যুর সংবাদসহ শোকবার্তা পোস্ট করেন।
    মন্টু পাটওয়ারীর মরদেহ গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর নিজ বাড়ি চাঁদপুর শহরের দক্ষিণ গুণরাজদী পাটওয়ারী বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তখন তাঁর বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনসহ শোকার্ত অনেক মানুষের ভিড় ছিলো। সন্ধ্যার পর পর মন্টু পাটওয়ারীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকেই তাঁকে শেষবারের মতো এক নজর দেখার জন্যে তাঁর বাড়িতে ছুটে যান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, সহ-সভাপতি মোঃ ইউসুফ গাজী, ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু, আব্দুর রশিদ সর্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের পাটওয়ারী, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুলসহ আরো অনেকে। রাতে তাঁর মরদেহ বেগম জামে মসজিদের হিমঘরে রাখা হয়।
    বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক মন্টু পাটওয়ারী একজন সদালাপী ও স্পষ্টবাদী লোক ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক, ধর্মীয় ও সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকা-ের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদে দলমত নির্বিশেষে অনেকেই শোকাহত হন। মন্টু পাটওয়ারী একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন।

 

সর্বাধিক পঠিত