চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম সফিউল্লাহর আজ ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী
চাঁদপুর ও ফরিদগঞ্জে কর্মসূচি
আজ ২৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এম সফিউল্লাহর ১০ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৮ সালের এইদিনে তিনি চাঁদপুর শহরস্থ তাঁর নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে চাঁদপুর শহরে ও ফরিদগঞ্জে কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল এবং স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।
আজ বাদ আসর চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকাস্থ মরহুমের নিজ বাসায় মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। এ মিলাদ মাহফিল ও স্মরণসভায় সকলকে উপস্থিত থাকার জন্যে মরহুমের কন্যা ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাজেদা কাকন অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়া মরহুমের গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জের ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়নস্থ বারপাইকা গ্রামে আজ সকাল থেকে কোরআনখানি অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আসর বাড়ির মসজিদে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে মরহুমের আত্মীয়স্বজনসহ সকলকে উপস্থিত থাকার জন্যে অনুরোধ জানিয়েছেন মরহুমের ছোট ভাই ওয়ালী উল্লাহ ও ভাগিনা জিএস তসলিম।
সংক্ষিপ্ত জীবনী : মরহুম এম সফিউল্লাহ ১৯৪৬ সালে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বারপাইকা গ্রামের মুন্সী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব জীবন কাটে ফরিদগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করার পর চাঁদপুর সরকারি কলেজে পড়ালেখা করা অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। কলেজজীবন শেষ করে তিনি ৬০-এর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ১৯৬৯ সালে তৎকালীন ইকবাল হল বর্তমানে শহীদুল্লা হলের ভিপি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে মাস্টার্স শেষ করার পর ৭০-এর গণআন্দোলনে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। ৭১’র ২৫ মার্চ কাল রাত্রিতে শহীদুল্লা হল থেকে হানাদার বাহিনীকে ঠেকানোর জন্যে বিভিন্ন পরিকল্পনায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এরপর এপ্রিলের ১ম সপ্তাহে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের জন্যে দেশ ত্যাগ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে এসে বিভিন্নস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার হিসেবে সফল ও বীরযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেন।
যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তিনি তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র ২৭ বছর বয়সে তিনি ফরিদগঞ্জ থেকে নৌকা মার্কায় এমপি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। ৯০’এর স্বৈর শাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৯২ সালে তিনি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদগঞ্জ আসন থেকে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ৩৫ বছরের বর্ণাঢ্য ও সফল রাজনৈতিক জীবন শেষে ২০০৮ সালের ২৫ অক্টোবর সকলের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ২ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন।