কঠোর নজরদারিতে প্রশাসন, তবুও নিধন হচ্ছে মা ইলিশ
প্রশাসনের কঠোর নজরদারির মধ্যেও চাঁদপুরের ইলিশ প্রজনন নদী এলাকায় হামলে পড়েছে জেলেরা। দিন-রাত রুটিনমাফিক নদীতে অভিযান পরিচালনা করছে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স। কিন্তু জেলেরা প্রশাসনের অভিযান এড়িয়ে মা ইলিশ নিধন করে চলছে। এবার ইলিশের প্রজনন এলাকায় প্রচুর মাছ যেমন ধরা হয়েছে, তেমনি প্রশাসনের অভিযানে রেকর্ড সংখ্যক আটক জেলেকে সাজাও দেয়া হয়েছে। বিপুল পরিমাণে জালও ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু তবু মা ইলিশ নিধনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কতিপয় জেলে।
ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও পদ্মা-মেঘনার বিভিন্ন পয়েন্টে অবাধে মা ইলিশ নিধন চলছে। দিনরাত জেলেরা কারেন্ট ও ছান্দিজাল নিয়ে মা ইলিশ নিধনে হামলে পড়ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ২২ দিনের অভিযান মা ইলিশ রক্ষায় নয়, ইলিশের প্রজনন ধ্বংস করার জন্যে হচ্ছে। এ অভিযানকে ঘিরে প্রশাসনের কিছু লোক এবং সোর্সরা লাভবান হওয়া ছাড়া কাজের আর কাজ কিছুই হচ্ছে না।
বিভিন্ন কারণে জেলেরা মা ইলিশ নিধনের সুযোগ পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক ব্যক্তি জানায়, দিনের বেলায় এবং সন্ধ্যার পর থেকে ভোরবেলা পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর চিহ্নিত স্থানগুলোতে ইলিশের হাট বসছে। ইলিশ ধরে একটা জেলে নৌকা নদীর পাড়ে আসা মাত্রই মুহূর্তের মধ্যে সেখানে ভিড় জমে যায় অসংখ্য মানুষের।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মতলব উত্তর, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জেলে নদীতে নামছে এবং মা ইলিশ নিধন করছে। এছাড়া চাঁদপুর শহর লাগোয়া রণাগোয়াল, ইজতেমা মাঠের পাশে, দোকানঘর গুচ্ছগ্রামের খাল, সাখুয়া খাল, বহরিয়া, লোধেরপাড়, লক্ষ্মীপুর চেয়ারম্যানঘাট, নন্দেশখার খাল, নন্দীর দোকান, চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর, বাংলাবাজার এলাকার অসংখ্য জেলে আইন অমান্য করে ইলিশ শিকার অব্যাহত রেখেছে।
৭ থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ মাছের ডিম ছাড়ার সময়। তাই সারাদেশে এ ২২ দিন মা ইলিশ ধরা, বিক্রি ও মজুদ এবং পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদপুর ও শরীয়তপুর জেলার প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ধরা হচ্ছে মা ইলিশ। জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা ইলিশ। বাজার দরের চেয়ে অনেক কম মূল্যে জেলেরা মাছ বিক্রি করছে আড়তদার, পাইকারসহ সাধারণ ক্রেতাদের কাছে। আড়তদাররা অল্প টাকায় মাছ কিনেছে বলে জানান এলাকাবাসী।