• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

দারোগার মানিব্যাগ চুরি করে ধরা খেলো চৌকিদার

প্রকাশ:  ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:১৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

দারোগার মানিব্যাগ চুরি করতে গিয়ে ধরা খেলো চৌকিদার। সর্বশেষ দারোগা ওই চৌকিদারকে ক্ষমা করে দিলেও চুরির অভিযোগে ওই চৌকিদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। আর এসবই সম্ভব হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদে লাগানো সিসি ক্যামেরার কল্যাণে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এমন ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের একেবারে অভ্যন্তরে।
    বাকিলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী জানান, দুপুরের দিকে একটি সড়ক পরিদর্শনে গেলে বেলা বারোটার দিকে হাজীগঞ্জ থানার এএসআই কামাল আমাকে মুঠোফোনে ফোন দিয়ে অবস্থান জানতে চান আর পরিষদে এসেছেন বলে জানান। এ সময় ওই অফিসার আমার ব্যক্তিগত টয়লেট ব্যবহার করে তিনি তার দায়িত্বে চলে যান। বেলা প্রায় দেড়টার দিকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ফের ফোন করে জানান আমার টয়লেটের বেসিনের উপর তার মানিব্যাগটি ভুলে রেখে গেছেন। তাৎক্ষণিক আমি বেসিনে গিয়ে দেখি মানিব্যাগটি সেখানে নেই। ইতিমধ্যে ওই কর্মকর্তা পরিষদে এসে পৌঁছান। এ সময় আমরা বেশ কয়েকজন মিলে মানিব্যাগটি খুঁজে পাইনি।
    এই জনপ্রতিনিধি আরো জানান, কে মানিব্যাগ নিয়েছে এমন কাউকে না পেয়ে পরিষদের টয়লেট ও তার সামনের দরজায় লাগানো সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখা শুরু করি। নির্দিষ্ট সময়ের ফুটেজে দেখা যায়, ওই কর্মকর্তা টয়লেট ব্যবহারের বেশ কিছু পর টয়লেটে এককভাবে ঢুকে পরিষদে কর্মরত চৌকিদার মোঃ সেলিম মিয়া। এ বিষয়ে সবার উপস্থিতিতে সেলিমকে বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে সে বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে। এক পর্যায়ে আমি সেলিমের টয়লেটে যাওয়া ও আসার সময়ের সিসি ক্যামেরা ফুটেজকে জুম করে দেখতে শুরু করলাম। এ সময় দেখা যায়, সেলিম টয়লেটে যাওয়ার সময় প্যান্টের পকেট স্বাভাবিক ছিলো, আর বেরিয়ে আসার সময় সময় প্যান্টের ডান পাশের পকেটটি বেশ ফুলে রয়েছে। টয়লেট থেকে বের হয়ে সেলিম যায় পরিষদের দরবার হলের পাশে ছোট রুমে। সেখানে থেকে বেরিয়ে আসার সময় সেলিমের প্যান্টের পকেটটি সেই পূর্বের মতো স্বাভাবিক দেখা যায়। এভাবে বেশ কয়েকবার দেখার পরেই নিশ্চিত হই সেলিম কিছু লুকিয়েছে সেই ছোট রুমে গিয়ে। এরপরেই ওই রুমে লোকজন দিয়ে খুঁজে ওয়েস্টেজ কাগজের নিচ থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তার মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিক চৌকিদার সেলিম প্রকাশ্যে একবার দারোগার কাছে আরেকবার আমার কাছে ক্ষমা চাইতে শুরু করে।
    এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটোয়ারী বলেন, ওই ছেলেকে (চৌকিদার) দারোগা ক্ষমা করে দিলেও আমি এ বিষয়ে পরিষদে বৃহস্পতিবার মিটিং ডেকেছি, আর এই চৌকিদারকে আমি পরিষদে রাখছি না।  কারণ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সম্পদ একজন চৌকিদারকে পাহারায় দিয়ে যেতে হয়। আর সেই চৌকিদার যদি চোর হয় তাহলে তো তাকে এখানে রাখার কোনো সুযোগ নেই।
    এ বিষযে হাজীগঞ্জ থানায় কর্মরত এএসআই কামাল হোসেন বলেন, ওই ব্যাগে আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজগপত্র ছিলো। ভাগ্য ভালো চেয়ারম্যানের বুদ্ধিমত্তায় মানিব্যাগ ফিরে পেয়েছি, আর ওই চৌকিদার তো আসলে গরিব লোক, তাই তার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই।