মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপন সাধারণ সভা
বাংলাদেশের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা ১৯৯২ সাল থেকে চাঁদপুরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর এ মেলাটির গৌরবের ২৭ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নবপ্রজন্মের কাছে তুলে ধরা, চাঁদপুরের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্বিলিত বই প্রকাশ, চাঁদপুরে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি যাদুঘর নির্মাণ করার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠকে ঘিরে বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর বিজয় মেলা উদ্যাপনের লক্ষ্যে গতকাল ১৩ অক্টোবর শনিবার জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মেলার উপদেষ্টা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল ও বিজয় মেলার স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদের সাথে আলোচনা করেই এ সভার আয়োজন করা হয়। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ অসুস্থ থাকার কারণে সভায় উপস্থিত হতে পারেননি। যার ফলে তিনি বিজয় মেলা উদ্যাপন কমিটির চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মহসিন পাঠান ও মহাসচিব হারুন আল রশীদকে সভা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। সে মতেই বিজয় মেলার ২০১৭ সালের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মহসীন পাঠানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব হারুন আল রশীদের সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, ১৯৯২ সাল থেকে চাঁদপুরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাসব্যাপী বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই মাঠটি মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করে আছে। ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে যে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়েছিলেন সেই ভাষণের পর চাঁদপুরের মুক্তিযোদ্ধারা সংঘটিত হয়ে এই মাঠটিতে প্রথম প্রশিক্ষণ শুরু করেন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে মাঠের সম্মুখভাগের সড়কটিকে মুক্তিযোদ্ধা সড়ক হিসেবে নামকরণ করা হয়। পশ্চিম পাশের সড়কটিকে সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরীর নামে নামকরণ করা হয়। রেলওয়ে লেকের উপর নির্মাণ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ‘অঙ্গীকার’। স্বাধীনতার এতসব স্মৃতি বহনকারী স্থানটিকে ঘিরেই বিগত ২৬ বছর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে এসেছে। এ বছর একই স্থানে মেলার গৌরবের ২৭ বছর উদ্যাপনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এই মেলাকে সর্বাত্মকভাবে সার্থক করে তুলতে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডাঃ দীপু মনি এমপি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা যেখানে চাইবে সেখানেই বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বক্তাগণ উপরোক্ত কথাগুলো তুলে ধরেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাস্টার, স্টিয়ারিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ বদিউজ্জামান কিরণ, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা অজিত সাহা, মাঠ ও মঞ্চের আহ্বায়ক ইয়াহিয়া কিরণ, সদস্য সচিব জাফর ইকবাল মুন্না, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদের সভাপতি পীযুষ কান্তি রায় চৌধুরী প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক ইল্শেপাড়ের প্রধান সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমন, চাঁদপুর সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক কে.এম. মাসুদ, কণ্ঠশিল্পী কৃষ্ণা সাহা, অনিতা নন্দী, তাহমিনা হারুন, মনোজ আচার্র্যী, জহির উদ্দিন বাবর, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ আমির উদ্দিন ভূঁইয়া মন্টু, সাংবাদিক মিজান লিটন, খোকন কর্মকারসহ বিজয় মেলার সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রায় দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী। বিজয় মেলার উপদেষ্টা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল ও বিজয় মেলার স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তীতে বিভিন্ন কমিটি গঠন করে ফেসবুক ও স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে জানানো হবে।