পদ্মা-মেঘনায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেদের ইলিশ নিধন ॥ সদরের বেশ ক’টি স্পটে ইলিশ বিক্রি
চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধন করা হচ্ছে। ইলিশের প্রধান প্রজনন রক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করতে একশ্রেণির জেলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নদীতে জাল ফেলে মা ইলিশ শিকার করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে যখন সাগর ও নদী উত্তাল, তখন ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পদ্মা-মেঘনায় ডিম ছাড়ার জন্য আসে। আর এ সুযোগটা বেশি কাজে লাগায় জেলেরা। শত শত জেলে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে ইলিশ নিধনে মেতে ওঠে। বুধ, বৃহস্পিতবার এবং গতকাল শুক্রবার বিপুল পরিমাণে মা ইলিশ চাঁদপুরের জেলেরা নিধন করেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মেঘনার পশ্চিম পাড়ের রাজরাজেশ^র চর এলাকা ও শরীয়তপুর-চাঁদপুরের নৌ-সীমানার পদ্মা নদী থেকে শুরু করে সদর উপজেলার ইব্রহীমপুর ইউনিয়নের চরফতেজংপুর, গুচ্ছগ্রাম চর, আলুবাজার, ঈদগাহ বাজার, লক্ষ্মীরচর, সাখুয়া খাল, জাফরাবাদ, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের রামদাসদী খাল, দোকানঘর, গুচ্ছগ্রাম, বহরিয়া, লোদেরপাড়, নন্দেশ খাঁর খাল, হানারচর ইউনিয়নের নন্দীর দোকান, গোবিন্দিয়া, চান্দ্রা ইউনিয়নের আখনের হাট, বাখরপুর গ্রামের নদীর পাড়, জ¦ীন গাছতলা, তরপুরচ-ী ইউনিয়নের আনন্দবাজার, কল্যাণপুর ইউনিয়নের নদীর পাড় ও হাইমচরের বিভিন্ন এলাকা জুড়ে মাছ ধরা হচ্ছে। উল্লেখিত এলাকার নদীর পাড়ে পাড়ে সন্ধ্যার পর, মধ্যরাতে এবং ফজর নামাজের পর ইলিশ বিক্রির উৎসব চলে। বস্তায় বস্তায় ইলিশ মাছ আবার ঢুকে পড়ছে গ্রামে গ্রামে। ফরিদগঞ্জসহ আশপাশে সকালে প্রচুর ইলিশ ফেরি করে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সাইজের এক হালি ইলিশ ৮/৯’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নদীতে নৌ পুলিশ এবং উপরে ফাঁড়ি ও থানা পুলিশের তৎপরতা জোরদার করা না হলে অভিযানের এই সময় জেলেরা তাদের স্বার্থের জন্যে ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরতেই থাকবে বলে সচেতন মহলের অভিমত। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দৃষ্টি কামনা করা হয়।
এদিকে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে গতকাল ১২ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাস্কফোর্স ৪টি মোবাইল কোর্ট ও ২টি অভিযান পরিচালনা করে ৩ জেলেকে আটক করার পর প্রত্যেককে একবছর করে কারাদ- দিয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ৩৪ হাজার মিটার জাল ও ১০২ কেজি ইলিশ। এ ঘটনায় ৩টি মামলা হয়েছে। প্রতিদিনই নদীতে প্রশাসনের অভিযান চলছে এবং মাছ ধরার অপরাধে জেলে আটকও হচ্ছে আবার ইলিশ শিকারও চলছে।