• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মাছঘাটে ভাটি অঞ্চলের ইলিশের রাজত্ব

ভরা মওসুমেও ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ নেই

জেলেদের আহরিত ইলিশের বেশি দামের সুফল পাচ্ছে বেপারী, আড়তদার ও চালানীরা

প্রকাশ:  ০৩ অক্টোবর ২০১৮, ১০:২৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া এই ত্রিনদীর মিলনস্থলের জনপদ চাঁদপুরকে বলা হয় ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’। ইলিশকে নিয়ে এ জেলাকে ব্র্যান্ডিংও করা হয়েছে। সেই ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ নেই। তবে নামা অঞ্চলের ভেল্কা ইলিশের রাজত্ব এবং রমরমা ব্যবসায় চাঙ্গা চাঁদপুর মাছঘাট। স্থানীয় নদীতে ইলিশ না পাওয়ার খরা কাটছে না। এখনও হতাশ এখানকার জেলেরা। অনেক জেলে তাদের এলাকায় ইলিশের দেখা না পেয়ে চলে যায় ভাটি অঞ্চলে। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে চলবে মা ইলিশ রক্ষার অভিযান। তাই চাঁদপুরের জেলেরা নামা তথা ভাটি অঞ্চলে ইলিশ শিকার করে এলাকায় ফিরে আসতে শুরু করেছে। ১ অক্টোবর হরিণাঘাটের প্রায় অর্ধশত জেলে ভাটি অঞ্চল থেকে ফিরে এসেছে। আসার সময় তারা কিছু মাছও নিয়ে আসে বলে হরিণাঘাটের ক্ষুদ্র আড়তদার মনির শেখ জানিয়েছেন।
    অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত এক মাস যাবৎ নোয়াখালীর হাতিয়া ও দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার উপকূলীয় নদী ও সাগরে ব্যাপক ইলিশ ধরা পড়ছে। জেলেদের আহরিত প্রচুর ইলিশে এখন চাঙ্গা চাঁদপুর মাছঘাট। আড়তদার, বেপারী ও চালানী কেউই দম ফেলার সময় পাচ্ছে না। জেলের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ এবার ধরা পড়ায় নামার সেই ভেল্কা মাছে সয়লাব ইলিশের রাজধানী চাঁদপুর। চাঁদপুর ঘাটে ইলিশের ভরপুর আমদানি হওয়া সত্ত্বেও মাছের দাম তুলনামূলক কমছে না। ভরা মওসুমে এখনও ঘাটে সাইজের ইলিশের কেজি ১২শ’ থেকে ১৪শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ কেজির নিচে ৮-৯শ’ ও ৬-৭শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৭-৮শ’ টাকা থেকে ৯শ’ ও হাজার টাকা। এই দামে একটি ইলিশ ক্রয় করা সাধারণ মানুষের জন্যে খুবই কষ্টসাধ্য। শুধু মেহমান আসলে মাঝে মধ্যে একটা ইলিশ কিনতে পারে। তা না হলে জাটকার চাইতে একটু বড় পোনা ইলিশেই ভাগ্য জুটে তাদের। দাম কিছুটা কম নামার ইলিশ অর্থাৎ ভাটি অঞ্চলের ৪/৫ দিনের বরফ দিয়ে আনা ভেল্কা মাছের। সিজনেও দাম বেশি হওয়ায় হতাশ সাধারণ মানুষ। আড়ত থেকে মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে পাইকাররা ইলিশ কিনলেও এর সুফল সাধারণ ইলিশ ক্রেতারা পায় না। চাঁদপুরঘাট থেকে পাইকাররা সিংহভাগ মাছ কিনে অন্যত্র চালান করে দিচ্ছে।  শুধুমাত্র দাম কম পচা ইলিশের। ১৪-১৫ হাজার টাকা মণ, যার কেজি পড়ে সাড়ে তিনশ’ থেকে পৌনে চারশ’ টাকা। জাটকার চাইতে সামান্য বড় তাও চারশ’ টাকা কেজিতে কিনতে হয়।
    পুরাণবাজারের মিষ্টি ব্যবসায়ী সুমন দে (৩৫) জানান, ইলিশের ভরপুর মওসুমে ইলিশের দাম যথেষ্ট বেশি। এই সময় মাছের দাম কম থাকার কথা, ছোট ইলিশও খেতে হলে ৫/৬শ’ টাকা লাগে। ইলিশের দেশে ইলিশের এমনই করুণ অবস্থা।  
    সরজমিনে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল ১ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের রাজধানীখ্যাত চাঁদপুর মাছঘাটে ভেল্কা ইলিশের রমরমা অবস্থা। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার মণ লোকাল ও নামার ইলিশ আড়তে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। প্যাকিং করে হাজার-বারোশ’ ককশীট ও কাঠের বাক্স সড়ক, রেল ও নদীপথে চালান হচ্ছে। প্রতিটি ককশীটে ৪০ থেকে ৫০ কেজি এবং কাঠের বাক্সে ২ মণ মাছ থাকে। বরফ ব্যবসায়ী হাজী আরব আলী জানান, মাছের সিজন হওয়ায় চাঁদপুরের ৮টি বরফ কলই এখন পুরোদমে বরফ উৎপাদন করে সরবরাহ করছে। বরফের কোনো সঙ্কট নেই। তিনি বলেন, বরফের ক্যান আমরা মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছে ২শ’ টাকায় বিক্রি করছি। নামার মাছটা বেশি আসায় প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার ক্যান বরফ লাগছে এবং মাছ কম হলে ১২শ’ ক্যান বরফ যায়।
    এদিকে একটি সূত্র জানায়, আড়তদারদের কাছ থেকে দাদন নেয়ার কারণে জেলেরা তাদের আহরিত মাছের সঠিক দাম পায় না । রোদ বৃষ্টি, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস এবং মৃত্যুর ভয় উপেক্ষা করে জেলেরা সাগর ও নদীতে ইলিশ শিকার করলেও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। ইলিশের চড়া দামের সুফল পাচ্ছে বেপারী, আড়তদার ও চালানীরা। চাঁদপুর থেকে চালানীদের মাধ্যমে চাঁদপুর থেকে সীমান্ত এলাকায় ইলিশ পাচারও হচ্ছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ঘাটে যে পরিমাণ মাছ আসে চিহ্নিত ক’জন মৎস্য ব্যবসায়ী চালানীর নাম করে সমুদয় মাছ  তারাই কিনে নেয়। এমনকি যারা আড়তদার তারাই আবার মাছ কিনে বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেয়। ইলিশ ব্যবসায় চিহ্নিত কিছু লোকই বেশি লাভবান হয়। লোকাল মাছের সাথে নামার ইলিশ মিশিয়ে বিক্রি করায় অনেকে প্রতারিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। চাঁদপুরের ইলিশ বলতে বরিশালের পর লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুর নদী এলাকায় যে মাছটা পাওয়া যায় সেটা লোকাল ইলিশ হিসেবে গণ্য হয়। এই মাছটা চাঁদপুরেই বেশি দেখা যায়। টাটকা মাছ হওয়ায় খেতেও সুস্বাদু। এজন্যে এখানকার ইলিশের দেশে-বিদেশে এতো কদর ও সুনাম। ইলিশের জন্যে অনেক মানুষ দেশের দূর-দূরান্ত থেকে চাঁদপুর মাছঘাট পরিদর্শনে আসেন এবং যাবার সময় ইলিশ কিনে নিয়েও যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদপুরের তুলনায় ঢাকা-চট্টগ্রামে ইলিশের দাম কম।
    চাঁদপুর ঘাটে জেলেদের আহরিত ইলিশ বাণিজ্যে এবার রমরমা অবস্থা যাদের তারা হলেন নান্টু-কাদির, আনোয়ার গাজী, হাজী আঃ মালেক খন্দকার, বাবুল হাজী, গফুর জমাদার, দেলু খা, ছোট সিরাজ চোকদার, খালেক বেপারী, ইয়াকুব খান, মোস্তফা-শরীফ, সাগর চোকদার, হাজী শাহজাহান বেপারী, লালু, শাহজালাল বন্দুকশী, ইউসুফ বন্দুকশী, মুনছুর বন্দুকশী, বিল্লাল কাজী, মিজান শেখ, বাদশা মাল, আজিজ, ছানা, হাজী কুদ্দুছ খা, শবেবরাত সরকার, কালু ভূঁইয়া, উত্তম দে, ইকবাল বেপারী, মাসুদ, জামাল খাঁসহ আরো কয়েকজন। এদের মধ্যে অনেকে দীর্ঘদিন যাবৎ পচা মাছের ব্যবসা করছেন এবং মানুষকে পচা মাছও খাওয়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চিহ্নিত কয়েকজন আছেন যাদের মাছের চালান সীমান্তবর্তী এলাকায়ও যাচ্ছে। এসব তথ্য মাছঘাটে অনুসন্ধান করে জানা যায়।
    ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে ইলিশের দাম বেশি কেনো, এবার মাছ ধরা পড়ছে, চাঁদপুরে কোনো কোনো জায়গার ইলিশ ঘাটে আসে ইত্যাদি বিষয়ে জানার জন্যে কথা হয় জেলে, বেপারী, আড়তদার, মৎস্য ব্যবসায়ী, চালানী ও মোকামিদের সাথে। আরো কথা হয় জেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথেও। বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে চাঁদপুর মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায় হাজী মালেক খন্দকার, গফুর জমাদার, বাবুল হাজী, শবেবরাত সরকার, ছোট সিরাজ চোকদার, ওহাব মালসহ অন্যান্য আড়তে নদীপথে ফিশিং বোট ও ট্রলারে দক্ষিণ অঞ্চল হতে নামার  ১০/১২ ঝুড়ি ও সড়কপথে উপর দিয়ে আরো ৫/৬ ঝুড়ি ডোলের ইলিশ আড়তে তোলা হয়। লোকালেও বেশ কিছু মাছ এসেছে। সবদিকের ইলিশে চাঙ্গা তখন মাছঘাট। নামার বলতে দক্ষিণাঞ্চলের সামরাজ, ঢালচর, চরফ্যাশন, দৌলত খাঁ, হাতিয়া, আলেকজান্ডারসহ সাগর মোহনায় গত এক সপ্তাহ যাবৎ প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ায়, দাদনের সেই মাছ ভালো দাম পাবে বলে এখানে নিয়ে আসা হয় সেই ইলিশ। আড়তের সামনে স্তূপ করে রাখা বড়, মাঝারি ও ছোট সাইজের ইলিশের প্রকাশ্যে নিলাম ডাকা হচ্ছে। ২৫ হাজার, ২৬ হাজার, ২৭ হাজার পাঁচশ’ আর নাই। ওই মাছটা ওজন দেয়, পাইছে নান্টু-কাদির। এভাবেই সেখানে পাইকারী বাজারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। ঘাট থেকে মাছ কিনে মোকামে সরবরাহকারী দেলু খার মোকামী মোঃ আলফু মিয়া (৫০) জানান, পনের-বিশ বছর ধরে ঢাকা-আখাউড়া ইলিশের মোকাম করছেন। মাছ অইলে কেরিং করে সেখানে মাছ পৌঁছাইয়া দেন। এ বছর ইলিশের সিজন ভালো যাচ্ছে না। মাছ ভরপুর থাকলে মাছের দাম কমে। এখন যে পরিমাণ মাছ হয় তাতে অন্য সময়ের চেয়ে কেজিতে এক/দেড়শ’ টাকা ইলিশের দাম কমেছে।
    চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি আলহাজ¦ মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া জানান, মাছের দামের সাথে ইলিশের বাড়ির কোনো সম্পর্ক নাই। লোকালে মাছ খুবই কম। নোয়াখালীর হাতিয়া, সোনাপুর, বরগুনার পাথরঘাটা, পটুয়াখালীর কুয়াকাটা, ভোলার দৌলত খাঁ, সামরাজ, ইলিশা, তজুমদ্দিন, শশীগঞ্জসহ নামার কিছু মাছ আসাতেই ঘাটে আমরা কিছুটা নিঃশ^াস ফেলতে পারছি। গতবারের তুলনায় এবার ২০ ভাগ মাছও আমদানি হয়নি। নদ-নদীতে মাছ কম পাবার কারণ হিসেবে এই মৎস্য ব্যবসায়ী দুষলেন জাটকা ও ডিমওয়ালা ইলিশ মাছ নিধনকে। সরকারের মা ইলিশ এবং জাটকা রক্ষার ৩ মাসের অভিযান সফল না হওয়ায় ইলিশের এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। যেখানে এই সময় মাছঘাটে ঢোকা যেতো না, আমরা দম ফালানোর সময় পেতাম না, এখন ঘাটে ২০/৩০ মণ হবে না মাছ আসে। স্থানীয় মাছটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল থাকায় সিজনে দাম কমছে না। এক ওড়া জাটকায় ৫০ ওড়া ইলিশ হতো এবং একটি ইলিশ ১৮ লাখ রেণু ছাড়ে। জাটকা ও মা ইলিশকে রক্ষা কার্যক্রম সফল হলে নদীতে মাছে-পানিতে সমান থাকতোÑএটাই বাস্তবতা। কিন্তু আমরা তা রক্ষা করতে পাছি না বলেই আজকে ইলিশের এই সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।
    চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি রোটারিয়ান আব্দুল বারী জমাদার মানিক জানান, এবার ইলিশ মওসুম স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জন্যে ভালো যাচ্ছে না। আর কয়েকদিন পর মা ইলিশের উপর অভিযান। মওসুমের শেষদিকে যখন কিছু  ইলিশ পাবো বলে আশা করছি, তখনই আমাদের দেশে মাছ না ধরার অভিযান থাকবে। সেই সুযোগ কাজে লাগাবে ভারতীয় জেলেরা। তার মতে, বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় ঢুকে ভারতীয় জেলেরা বিপুল পরিমাণে ইলিশ ধরে নিয়ে যাবে। যারাই অভিযানের সময়টা নির্ধারণ করেছেন তারা সঠিক সময় নির্ধারণ করেননি। অভিযানের সময়টা আরো এক সপ্তাহ পিছানো দরকার ছিলো।
    ইলিশ ব্যবসায়ী আনোয়ার গাজী জানান, ভোলার সাগর মোহনায় এমনভাবে

জাল ফেলা হচ্ছে চাঁদপুরের নদী এলাকায় মাছটা আইতে পারছে না। গফুর জমাদার মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী মিজান শেখ জানান, এবার মাছের আমদানি খুবই কম, মাছ বেশি হলে দাম কমবে। ভাদ্র-আশি^ন ইলিশের ভরপুর মওসুম। অথচ চাঁদপুরের নদীতে মাছ নাই। প্রতি সপ্তাহে এক-দুইদিন আড়ত ইলিশ শূন্য থাকছে। এবার মাছের উৎপাদনই কম হয়েছে। ইলিশ চালানী মেজবাহ মাল জানান, চাঁদপুর থেকে সারাদেশে ইলিশ সরবরাহ হয়। এবার চাঁদপুরের নদীতে মাছই নাই। আড়তদার হাজী কুদ্দুছ খাঁ জানান, সিজনে তুলনামূলক মাছ কম। মাছ কমের কারণে দাম বেশি। চালানী ও সমিতির পরিচালক খালেক বেপারী জানান, নদীতে এখন আর আগের মতো ইলিশ নেই। এখান থেকে এই সময় প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ইলিশ মোকামে পাঠানো হতো। এবার চাঁদপুরঘাট গোয়ালন্দ হয়ে গেছে।
    চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত সরকার জানালেন চাঁদপুরে ইলিশের দাম বেশি হবার কারণ। তিনি বলেন, নোনা পানির ইলিশের রূপালি রঙের সঙ্গে লালচে আভা থাকে। আর চাঁদপুরের মিঠাপানির ইলিশের রঙ চকচকে রূপালি হয়। এর স্বাদই খুব মজাদার। যারা এখানকার ইলিশ খেয়েছে, তাদের কাছে অন্য জায়গার ইলিশ ভালো লাগবে না। জেলে, বেপারী ও নদীর পাড়ের ঘাটে চাঁদপুরের প্রায় দেড়শ’ আড়তদার রয়েছে। আমাদের ১শ’ কোটি টাকারও বেশি অর্থ দাদন দেয়া আছে। এই দাদন সরাসরি জেলে, দূরের ঘাটের আড়তদার এবং বেপারী যারা ঘুরে ঘুরে মাছ কিনেন তাদের কাছে দেয়া আছে।
    জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, নোয়াখালীর হাতিয়ার ওই জায়গায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সেখানকার মাছ আসতে হলে পরিবহন খরচ বেশি পড়ে এ কারণে মাছের দাম কমছে না। নদীর নাব্যতা সংকট, বিভিন্ন স্থান দিয়ে চর পড়েছে। পানি ও ¯্রােতের পরিমাণ কম। সাগর মোহনা হয়ে মাছ উপরে আসতে পারছে না। এজন্যে লোকালে মাছটা খুবই কম পাওয়া যাচ্ছে।
    হরিণাঘাটের জেলে ইব্রাহীম, আখনেরহাটের শরীফ মাঝি, হাসান মাঝি, ইব্রাহীমপুর ঈদগাহবাজারের জেলে নৌকার মহাজন জসিম রাঢ়ি জানান, এবার পুরো বর্ষায় নদী খালি যাচ্ছে। সারাদিন জাল বেয়ে ২/৩ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারছে। তাতে ১০ জন মানুষের প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। মাছের খোঁজে চাঁদপুরের প্রায় ৮০ জন জেলে জাল-নৌকা নিয়ে ভাটির দেশে চলে গেছে। নামার অঞ্চলের দৌলত খাঁ, মির্জাখাল, সরেজগঞ্জ, হাতিয়া, মতিরহাট, তুলাতলি ওইসব এলাকায় গিয়ে তারা ইলিশ শিকার করছে। সেখানেও ভালো নেই এখানকার জেলেরা। অভিযানের আগে কিছু মাছ পাওয়া যায় কি না এই আশায় নদীতে আছেন আমাদের স্থানীয় জেলেরা।
    


সূত্র : চাঁদপুর কন্ঠ

সর্বাধিক পঠিত