বড়স্টেশন মোলহেডের ইলিশ ভাষ্কর্যের সুন্দর্য রক্ষার্থে বস্তায় বোতল ভর্তি স্তূপ সরাতে মোবাইল কোর্ট
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৩০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট
বড়স্টেশন মোলহেডের পর্যটন কেন্দ্রের
ইলিশ ভাষ্কর্যের সুন্দর্য রক্ষার্থে বস্তায় বোতল ভর্তি স্তূপ সরাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে।গতকাল ২৬ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকালে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে এই বোতল সরানোর জন্য ভ্রাম্যমান অাদালতের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়।এতে চাঁদপুর জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়।চাঁদপুরে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপণায় এবং চাঁদপুর পৌরসভার সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে জেলা ব্রান্ডিং পর্যটন কেন্দ্র।ব্রান্ডিংয়ের পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণার পর থেকেই এর সুন্দর্য বাড়ানোর জন্য একে একে নেয়া হচ্ছে ব্যাপক কার্যক্রম।ত্রিহোইল গাড়ী ৫ টাকা এবং ৪ বা এর বেশি চাকার গাড়ী ১০ টাকা দিয়ে টোকেনের মাধ্যমে পর্যটন কেন্দ্রে নির্দিষ্ট স্থানে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।রক্তধারা থাকার পাশাপাশি বানানো হচ্ছে সেলফি জোন ইলিশ ভাষ্কর্য।কিন্তু ইলিশ ভাষ্কর্যের পাশেই যেন দূর্গন্ধময় বস্তায় করে ভাঙ্গচুর বোতল স্তূপকারে রাখা রয়েছিলো এতদিন।যা পর্যটন কেন্দ্রের মোলহেডের সুন্দর্য নষ্ট করছে বলে পরিবেশবিদ ও সচেতনরা মনে করতেন।এ নিয়ে বিভিন্ন সময় পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি প্রকাশ হলে জেলা প্রশাসন থেকে এই সব ভাঙ্গচুর ও বস্তায় ভর্তি স্তূপাকার বোতল পর্যটন কেন্দ্রে রাখা যাবে না বলেও
সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।পরে ভাঙ্গচুর কর্তৃপক্ষের সময় চাওয়ার প্রেক্ষিতে এগুলো সরানোর জন্য ওদের মৌখিকভাবে সময় বেধে দেওয়া হয়েছিলো।কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও এই সব দূর্ঘন্ধময় বস্তা ভর্তি বোতল ও ভাঙ্গচুর পরিবেশসহ মোলহেডের সুন্দর্য নষ্ট করে যাচ্ছিলো বলেই জেলা প্রশাসন এগুলো সরাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে।এতো দিন এখানে গিয়ে দেখা যেতো,পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশ পথেই প্লাস্টিকের বস্তায় করে অাবার কোথায় ছড়ানো ছিটানো বা রোদে শুকানো অবস্থায় বোতল ও প্লাস্টিকজাত ভাঙ্গচুরে পর্যটন কেন্দ্রের সেলফি জোনের পাশাপাশি রাখা রয়েছে।এ অবস্থায় সেলফি জোনের পাশে পর্যটন কেন্দ্রের একটি হোটেলকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এই সব বোতল রেখে ঢেকে ফেলা হয়েছে।এতে বড়স্টেশনে সুন্দর্য মারাত্মকভাবে নষ্ট হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জেলা প্রশাসনের কাছে বার বার অভিযোগ করতো।সবশেষ অাসছে পর্যটন দিবসের অায়োজন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত হয়েই জেলা অাওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অাবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল ক্ষোব প্রকাশ করে বলেন, বড় স্টেশনের সুন্দর্য ফিরিয়ে অানতে পর্যটন কেন্দ্রে রাখা এই সব নোংরা স্তূপাকার বস্তা ভর্তি বোতল ও ভাঙ্গচুর দ্রুত সরানোর ব্যবস্থার করতে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দ্রুতই প্রয়োজন।এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান এই বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে খাতায় টুকে রাখতে অন্য একজনকে নির্দেশ দিতেও দেখা যায়।এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অাব্দুল্লা অাল মাহমুদ জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন,অামরা জেলা প্রশাসনের পক্ষে মোলহেডের পর্যটন কেন্দ্রে এই বস্তা ভর্তি বোতল ও ভাঙ্গচুর পরিষ্কার করতে গিয়েছিলাম।তখন ওরা(ভাঙ্গচুর কর্তৃপক্ষ) নিজেদের অসহায় দাবি করে এগুলো সরানোর জন্য অামাদের কাছে সময় চায়।অামরা তখন ওদের অবস্থান বিবেচনা করে মৌখিকভাবে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিজেরাই যেন এগুলো সরিয়ে নেয় এই বলে সময় বেধে দিয়ে চলে অাসি।তিনি অারো জানিয়েছিলেন,এখন এত সুন্দর করে বলার পরও যদি ওরা না মানে তাহলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পাওয়া মাত্রই অামরা যেকোন সময় এইসব ভাঙ্গচুর সরিয়ে মোলহেডের সুন্দর্য ফিরাতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবো।অামরা বস্তাযুক্ত বোতল সরিয়ে ওই জড়াজীর্ণ হোটেলটি অাবার নতুন অাঙ্গিকে চালু করার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো।এদিকে অাগের দিনের কথার পরই নির্ধারিত বেধে দেওয়া সময় ২৫ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়ার পর পরই ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খানের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অাব্দুল্লা অাল মাহমুদ জামানের নেতৃত্বে পর্যটন কেন্দ্রে বস্তা ভর্তি স্তূপাকার বোতল সরাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।এ সময় অারো উপস্থিত ছিলেন,
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও অাইসিটি) মোঃ মঈনুল হাসান,সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হীরামনি,পৌর ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী শাহলম বেপারীসহ পুলিশ সদস্যবৃন্দ।মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে এসে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অাব্দুল্লা অাল মাহমুদ জামান সাংবাদিকদের জানান,বড় স্টেশনের মোলহেড হলো চাঁদপুরের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র।এখানে দেশী-বিদেশী পর্যটক অাসে।কিন্তু প্রবেশ পথে এই সব থাকলে তা স্বাস্থ্যহানী এবং সুন্দর্যের ওপর ব্যপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতো।তাই পর্যটন কেন্দ্রের সুন্দর্য রক্ষার্থে ও চাঁদপুরবাসীর দির্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতেই এটা বেদখল করতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এটি দখল মুক্ত করছি।তিনি সাংবাদিকদের অারো জানান,এখানে অাজকের পর কোন বোতল ভর্তি বস্তা থাকবে না।অার ওই পরিত্যক্ত হোটেলটি পুনরায় একটি ফুড কর্ণার হিসেবে চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।এ সময় ওই জায়গার স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর হাজী শাহলম বেপারী সাংবাদিকদের জানান,অামরা এই পৌরসভার পক্ষে জেলা প্রশাসনকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে সাহায্য করছি।অাপাতত এই সব বস্তা ভর্তি বোতল সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।পরবর্তীতে এখানের ইটের জরাজীর্ণ দেয়াল ভেঙ্গে ফেলা হবে এবং নতুন অাঙ্গিকে জায়গার সুন্দর্য বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।এদিকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এই সব নোংড়া ময়লা বস্তার স্তূপ সরানোর জন্য প্রশাসনের নেতৃবৃন্দকে স্থানীয়দের উৎসাহ নিয়ে প্রশংসা করতে দেখা গেছে।