১০ম প্রাণ ফ্রুটিক্স চতুরঙ্গ ইলিশ উৎসব-২০১৮ উদ্বোধন
ইলিশের কারণে চাঁদপুর বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের অংশীদার : অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান
‘ইলিশের বাড়িতে ইলিশ উৎসব না থাকলে একটি অপূর্ণতা থেকে যেতো, যা চতুরঙ্গের এ আয়োজনে পূর্ণতা পেয়েছে’
বর্ণাঢ্য আয়োজন এবং বর্ণিল পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ১০ম প্রাণ ফ্রুটিক্স চতুরঙ্গ ইলিশ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ দিনব্যাপী এ উৎসবের শুভ সূচনা জেলা শিল্পকলা একাডেমী মঞ্চে বিকেল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী পর্বে উৎসবের আহ্বায়ক কাজী শাহাদাত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান বলেন, চাঁদপুর বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের অংশীদার। যার প্রধানতম কারণ হচ্ছে, জাতীয় মাছ এবং জাতীয় অর্থনৈতিক সম্পদ ইলিশের বাড়ি এই চাঁদপুরে। ইলিশের বাড়িতে ইলিশ উৎসব না থাকলে একটি অপূর্ণতা থেকে যেতো, যা চতুরঙ্গের এ আয়োজনে পূর্ণতা পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের পর্যটনে ইলিশ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এ সম্পদ রক্ষায় যার যার অবস্থান থেকে সচেতনভাবে কাজ করতে হবে। মা ইলিশ এবং জাটকা রক্ষায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ বাস্তবায়নে জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি ইলিশ উৎসবের সফলতা কামনা করেন।
উদ্বোধনী পর্বে র্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোঃ মিজানুর রহমান। বক্তব্য রাখেন কোস্টগার্ড চাঁদপুর-এর প্রধান লেঃ কমান্ডার এনায়েত উল্যাহ, প্রাণ-আরএফএল কর্মকর্তা নাজমুল আহসান ও মৎস্যজীবী নেতা শাহআলম মল্লিক। সমাপনী বক্তব্য রাখেন চতুরঙ্গের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়–য়া প্রমুখ।
র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শিল্পকলার সামনে এসে শেষ হয়। র্যালি শেষে অনুষ্ঠিত খুদে গানবাজ প্রতিযোগিতা শেষে খুদে বিতার্কিকদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি বিতর্ক। ‘ইলিশ রক্ষায় আইন নয়, সামাজিক আন্দোলনই অধিক কার্যকর’ বিষয়ের পক্ষ দল ছিলো চাঁদপুর রেলওয়ে কিন্ডারগার্টেন এবং বিপক্ষ দল ছিলো উত্তর শ্রীরামদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় তাদের বিতর্ক পরিবেশন করে। মডারেটর রাসেল হাসানের সঞ্চালনায় এ পর্বে সভাপ্রধানের বক্তব্যে অ্যাডঃ বদিউজ্জামান কিরণ চাঁদপুরে বিতর্কের প্রাণপুরুষ কাজী শাহাদাতের অবদান তুলে ধরে জেলাব্যাপী বিতর্কের প্রসারে তাঁর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং উভয় দলকেই বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর অতিথিবৃন্দ খুদে বিতার্কিকদের হাতে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ‘ইলিশ বিষয়ক গোল টেবিল বৈঠক’। বৈঠকে অতিথিদের ব্যাজ পরিয়ে দেন চতুরঙ্গের সদস্যরা। এরপর জেলে প্রতিনিধি হিসেবে তছলিম বেপারী, শাহআলম মল্লিক এবং সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান সুমন, নাট্যকার জাহাঙ্গীর আলম হৃদয় ও জাহাঙ্গীর ভূঁইয়াকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। গোল টেবিল বৈঠকের আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ মাঈনুল হাসান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি উৎসব দীর্ঘ ১০ বছরব্যাপী পরিচালনা করে আসাটা সত্যি সফলতার স্বাক্ষর। ইলিশ জাতীয় ব্র্যান্ড। তাই ইলিশ নিয়ে চতুরঙ্গের সাফল্য দেখে অন্যান্য সংগঠন এগিয়ে আসবে বলে আশা করছি। এ পর্বে উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াছ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন সভাপ্রধান অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার।
সবশেষে শিশু একাডেমি চাঁদপুর এবং রংধনু সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।