৪৫ ফিট উচু গাছের উপর ওঠে শুয়েছিল এক যুবক
চারঘন্টা পর অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার
তোমরা এই গাছটা কাট্ছ না কেন? গাছে আমারে ডাকে এই কথা স্ত্রীকে বলে সাব্বির গাজী (২২) নামে এক যুবক রাতের অন্ধকারে শ্বশুর বাড়ির প্রায় ৪৫ ফুট উঁচু একটি রেইন্ট্রি গাছের উপর ওঠে দুই ডালে শুয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশ ও এলাকান সাহসী লোকজনের সহাতায় ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অতঃপর ওই যুবককে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
১৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে নয়টার সময় চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার মধ্যশ্রীরামদীতে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটে। রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত তিনি গাছের উপরের ডালে শুয়ে ছিলো। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ সেখানে জড়ো হয়ে গাছের উপর শুয়া অবস্থায় এমন দৃশ্য সরজমিনে অবলোকন করেছে। এ সময় উপস্থিত অনেকে আল্লাহকে স্মরণ করে উচ্চস্বরে দোয়া দরুদ পড়েন।
চাঁদপুর বিদ্যুৎ বিভাগের লেডার (মই) যন্ত্রের সাহায্যে দক্ষিণ ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান স্থানিয় জাহিদ, কয়েস ও ফারুকের সহযোগিতায় গাছের উপর শুয়ে থাকা লোকটিকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ছাব্বির গাজীকে চিকিৎসার জন্য ঘটনার রাত পৌনে ২টায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত ছাব্বির মধ্যশ্রীরামদীর মৃত আবু কালাম গাজীর ছোট ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের ধারনা জ্বীনের আছর বা পেঁচার ডাক শুনে এ ঘটনা ঘটেছে এবং অলৌকিক শক্তিতে ওই যুবক গাছে এভাবে শুয়েছিল।
তার মা জোসনা বেগম জানান, শিশু বয়সে দুই ছেলে সুজন ও ছাবিবরকে রেখে স্বামী মারা যান। অনেক কষ্ট করে ছেলেদের বড় করেছেন। ছাব্বিরকে পাশাপাশি এলাকায় ছয় মাস আগে বিয়ে করান। ঈদের আগে সে মায়ের কাছ থেকে শ্বশুর বাড়িতে আসে। পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করত। তার মা আরো জানায়,আগে ছেলের কোন রোগ ছিল না।কি থেকে এ ঘটনা হলো আল্লাহ জানে।
ছব্বিরের স্ত্রী সীমা জানায়, মাগরিবের পর থেকে তার স্বামী আবল তাবল কথা বলতেছিল। তোদের বাড়ির গাছটা কেটে ফেল, আমারে ডাকে। ননদ ও বড় ভাই বিল্লালের স্ত্রীকে সাথে নিয়ে সাথী আক্তার তাঁর স্বামী ছাব্বিরকে আটকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কোন কিছু বুঝে উঠতেই বাড়ির পাকের ঘরের উপরে উঠে দ্রুত গাছে ওঠে যায় এবং শার্ট প্যান্ট পড়া অবস্থায় গাছের এক ডালে আরেক ডালে ভর করে শুয়ে থাকে।আমাদের ডাক চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরাসহ আশপাশের লোকজন ছুটে আসে এবং পুলিশ ও ফায়ার স্টেশানে খবর পাঠায়।
পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর আঃ রশিদ জানান, একজন লোক স্ত্রী ও স্বজনদের সাথে আত্মাধিক কথাবার্তা বলে বাড়ির গাছে উঠে শুয়ে আছে।ঘটনাটি স্থানিয় লোকজন আমাকে জানালে আমি ফায়ার স্টেশনকে জানাই।
চাঁদপুর দক্ষিণ (পুরাণবাজার)ফায়ার স্টেশানের সিনিয়র স্টেশান অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান,খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমরা দেখি বিপদজনক অবস্থায় অনেক উঁচু একটি গাছের উপর একজন লোক শুয়ে আছে।চাঁদপুরের ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ফাঁড়ি পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় দুই ঘন্টা চেষ্টার পর ওই লোকটিকে জীবিত উদ্ধারে সক্ষম হন।