চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধের হরিসভায় আবারো মেঘনার ভাঙ্গন ॥ জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু
আবারো মেঘনার ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে চাঁদপুর শহর রক্ষাবাঁধের পুরাণবাজার হরিসভা পয়েন্টে। গতকাল ৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে হরিসভা রাস্তার পাশে মতুরা কাছারি বাড়ির পেছন থেকে মরণ সাহার বাড়ি পর্যন্ত শহর রক্ষাবাঁধের প্রায় ৬০ মিটার ব্লকবাঁধ নদীতে তলিয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে সেখানে ভাঙ্গন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী ঘটনাটি হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্স সভাপতি ও চাঁদপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়কে অবহিত করলে তিনি সরজমিনে চেম্বারের সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষকে সাথে নিয়ে ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শন করেন। পরে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ হরিসভা এলাকা রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড-চাঁদপুরের কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে পাউবো চাঁদপুরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হানসহ অন্যরা ভাঙ্গন স্থান পর্যবেক্ষণ করেন এবং ওই স্থানটি রক্ষায় সেখানে সংরক্ষণে থাকা বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার নির্দেশ দেন। নদীভাঙ্গন বিষয়টি স্থানীয় এমপি, জেলা প্রশাসন, পৌর মেয়রসহ নেতৃবৃন্দকেও জানানো হয়েছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার অর্চনা সাহা ও মালতি দে জানান, সকাল ৭টায় গোসল করতে এসে স্থানীয় দীপক মাস্টার প্রথমে দেখতে পান তাদের বাড়ির পেছনে যে ব্লকবাঁধ দেয়া হয়েছে, সেখানে নীচ থেকে উপরের সারি পর্যন্ত বিছানো ব্লকবাঁধ ফাঁক হয়ে আস্তে আস্তে নদীতে দেবে যাচ্ছে। হরিসভা লোকনাথ মন্দিরের পাশের দোকানদার মানিক সাহা জানান, হরিসভা মন্দিরের নদী ঘাটলা ব্লক দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড করে দেয়, সেটির অস্তিত্ব নেই। স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন আর্টের স্বপন ও মাঠা বিক্রেতা মাধব ঘোষ জানান, এ নিয়ে হরিসভা এলাকাটি মেঘনার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে ৭বার। সম্প্রতি ৩বার ভাঙ্গন হলে ৩বারই পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন স্থানে কাজ করিয়েছে। কিন্তু সেখান দিয়েই আবার নদী ভাঙছে। এবার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। হরিসভা রাস্তার মোড় হতে রণাগোয়াল বকাউল বাড়ি পর্যন্ত এ এলাকাটি নদীর ভাঙনের মুখে এখন মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে।
শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের অধ্যক্ষ বিশাল গোবিন্দ দাসাধিকারী জানান, হরিসভা কমপ্লেক্সে সাতটি মন্দির। আশপাশে বিরাট বসতি এলাকা। রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসা ও গণকবর রয়েছে। নদী ভাঙ্গনের ভয়াবহতা নিয়ে আমরা এখন খুবই শঙ্কিত। পানি উন্নয়ন বোর্ড সঠিকভাবে কাজ না করায় এখানে শহর রক্ষা বাঁধ বার বার ভাঙছে। তিনি বলেন, এতোগুলো পরিবার কোথায় থাকবে, কোথায় যাবে জনমনে এ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারের কাছে এলাকাটি রক্ষার দাবি জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান বলেন, বর্ষা মৌসুমে পুরাণবাজার এলাকায় নদীর পরিস্থিতি ভালো না। প্রবল ঘূর্ণিস্্েরাত প্রবাহিত হয়। হরিসভা পয়েন্টে নদীর গভীরতা অনেক। সেখানে স্কাউরিং বেশি হওয়ায় প্রায় ৬০ মিটার ব্লকবাঁধে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা জরুরি ভিত্তিতে স্টকে রাখা বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলছি। আজকে সাখুয়া থেকে ব্লক এনে এখানে ফেলবো। আশাকরি প্রটেকশান দিতে পারবো। সরকার অপ্রতুল বরাদ্দ দেয়ায় পুরাণবাজারের নদীভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কাজ করাতে পারছেন না বলেও জানান পাউবোর এ কর্মকর্তা।
সূত্র : চাঁদপুর কণ্ঠ