কচুয়ায় ডাক্তারের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু ॥ থানায় মামলা
কচুয়া উপজেলায় ডাক্তারের অবহেলায় হালিমা বেগম (৩৫) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তিনি চাঁদপুর জেলার পাশর্^বর্তী কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার দেওকামা গ্রামের সাব্বির মিয়া ওরফে সিব্বির মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আবুল কালাম গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ তার অভিযোগটি আমলে নিয়ে চিকিৎসাজনিত অবহেলার দায়ে ৩০৪ (ক)/৩৪ ধারায় একটি মামলা রুজু করে। যার নং ৪।
কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আতাউর রহমান ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ মামলাটি আমলে নিয়ে নিহতের লাশ পোস্টমর্টেমের জন্যে চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করেছে। এছাড়া তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেফতারে জোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ আগস্ট হালিমা বেগমের প্রসব ব্যথা দেখা দিলে কচুয়া উপজেলার মিয়ার বাজারস্থ হাসিমপুর ফয়েজুন্নেছা হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক তার পরীক্ষা শেষে সিজারিয়ান অপারেশন করে বাচ্চার প্রসব ঘটায়। কন্যা সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা অবনতি দেখে কর্মরত চিকিৎসক ওই কন্যা সন্তানটিকে কুমিল্লার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে প্রেরণ করে। কন্যা সন্তানটি ওই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতি হালিমা বেগমকে ডাক্তারী পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা দিয়ে তার স্বামীর বাড়িতে প্রেরণ করে। বাড়িতে প্রেরণের পর থেকে হালিমা বেগমের পেটের ব্যথা বাড়তে থাকে। পরে তার স্বজনরা তাকে পুনরায় ওই হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার পরীক্ষা শেষে তার জরায়ুতে টিউমার আছে বলে ঔষধ লিখে দেন। ডাক্তারী পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবনের পরেও হালিমা বেগমের পেটের ব্যথা ভালো না হওয়ায় তার স্বামী সাব্বির মিয়া গত ২৯ আগস্ট কুমিল্লা শহরস্থ মনোহরপুর আদর্শ হাসপাতালে ভর্তি করান। এ সময় কর্মরত চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে রোগীর অভিভাবকে জানান, তার পেটের ভেতরে একটি কাপড়ের গজ (সার্জিক্যল মব) রয়েছে। যার ফলে পেটের ভিতরে পচনের সৃষ্টি হয়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে তার অপারেশন করা প্রয়োজন। নিহতের স্বজনরা ডাক্তারের পরামর্শ মতে আবারো অপারেশনের অনুমতি দিলে দ্বিতীয় বারের মতো তার অপারেশন করা হয় এবং তার পেটের ভিতর থেকে বড় আকারের ১টি কাপড়ের গজ (সার্জিক্যল মব) বের করেন। পরবর্তীতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে হালিমা মারা যান। নিহত হালিমা বেগমের তিনটি পুত্র সন্তান রয়েছে।