• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

কয়েকশ’ গজের মধ্যে দুটি কোরবানির পশুর হাট ॥ দেড়শ’ দোকান বন্ধ

প্রকাশ:  ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৭:২১ | আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৭:২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
কোরবানির পশুর হাট
প্রিন্ট

হাজীগঞ্জ ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার সীমান্তবর্তী বাজারের দুই অংশে মাত্র কয়েকশ’ গজের মধ্যে দুটি কোরবানির পশুর হাট বসায় ইজারাদারের অবৈধ প্রভাবে বন্ধ থাকে প্রায় দেড়শ’ চলমান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পরে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বকাউলের হস্তক্ষেপে বন্ধ রাখা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হয়। ঘটনাটি ঘটে গতকাল শনিবার হাজীগঞ্জের চেঙ্গাতলী বাজারে।  
জানা যায়, হাজীগঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে হাজীগঞ্জ আর মতলব দক্ষিণ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে ওঠে চেঙ্গাতলী বাজার। এই বাজারের ৯৫ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হাজীগঞ্জ উপজেলার অংশে। চেঙ্গালতী বাজার হিসেবে বাজারের অবস্থান থাকলেও মতলব উপজেলার অংশে রয়েছে মাত্র কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তবে মতলব উপজেলায় বাড়ি এমন ব্যবসায়ী মূল বাজারে ব্যবসা করছে প্রায় দেড়শ’। শুধুমাত্র বাজারটি ভাগ করে দিয়েছে বোয়ালজুড়ি খাল।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, এই বাজারের হাজীগঞ্জ অংশে সরকারিভাবে কোরবানি পশুর হাটের জন্যে অস্থায়ীভাবে ইজারা দেয়া হয়ে থাকে।  প্রায় শত বছর ধরে চেঙ্গাতলী বাজারে পশুর হাট ইজারা প্রদান করে আসছে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়। কিন্তু এবার একই বাজারে মতলব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকেও ইজারা প্রদান করার কারণে একই বাজারের কয়েকশ’ গজের মধ্যে দুটি কোরবানির পশুর হাট বসে।
মতলব উপজেলা অংশে পশুর হাট বসার কারণে হাজীগঞ্জ অংশের ইজারাদার স্থানীয় আব্দুল হাইয়ের রোষানলে পড়েন মতলব উপজেলায় বাড়ি বাজারের এমন স্থায়ী ব্যবসায়ীরা। এদিন সকালে আব্দুল হাই নিজে ঘোষণা দিয়ে এবং লোক পাঠিয়ে মতলব বাড়ি অথচ বাজারের স্থায়ী ব্যবসায়ী এমন প্রায় দেড়শ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত দেন। এরপর থেকে একইদিন দুপুর পর্যন্ত বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার বিষয়টি স্বীকার করে আব্দুল হাই জানান, চেঙ্গাতলী বাজার শতবছরের পুরানো। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে বাজারের হাজীগঞ্জের অংশে কোরবানির পশুর হাট বসে থাকে। গত বছর থেকে একই বাজারে এবং একইদিনে মতলবের অংশে কোরবানির পশুর হাট বসে। এ নিয়ে ওইসময় হট্টগোল দেখা দেয় এবং মতলবের অংশ থেকে মাছ, মাংস ও কাঁচাবাজার হাজীগঞ্জের অংশে চলে আসে। পরবর্তীতে মতলবের ব্যবসায়ীদের অনুরোধে এবং দুই উপজেলার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় সিদ্ধান্ত হয় মাছ, মাংস ও কাঁচাবাজার যেখানে ছিলো সেখানেই থাকবে এবং মতলবের অংশে কোরবানি পশুরহাট বসবে না। কিন্তু সে সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে মতলব অংশে এবারো একইদিনে এবং একই সময়ে কোরবানির পশুর হাট বসে।
এদিকে মতলব অংশের ইজারাদার চিরায়ু গ্রামের বাসিন্দা স্থানীয় ইউপি সদস্য বারেক মেম্বার মুঠোফোনে জানান, আমি সরকারিভাবে ইজারা নিয়েছি। আর দুইটা দুই উপজেলার বিষয়। আমি ইজারা আনার পর থেকে চেঙ্গাতলী বাজারের ইজারাদার আঃ হাইসহ আরশাদ সিদ্দিক আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে আর আমাদের এলাকার সকল দোকানে তালা মেরে দিয়েছে।
মতলবের ব্যবসায়ী জিয়া স্টোরের স্বত্বাধিকারী জিয়াউর রহমান , মেসার্স পাটওয়ারী স্টোরের স্বত্বাধিকারী মোঃ শাহ আলম, ফারিহা ইলেকট্রনিক্সের স্বত্বাধিকারী জহিরুল ইসলামসহ বেশ ক’জন ব্যবসায়ী জানান, আমরা মতলবের ব্যবসায়ীরা এলাকাবাসীসহ আমাদের ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ চেঙ্গাতলী বাজারের মতলবের অংশে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর জন্যে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি। তারপরও যদি পশুরহাট বসে, তাহলে আমাদের কী করার আছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জের দ্বাদশগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বকাউল জানান, দোকান বন্ধের বিষয়টি জানার পর আমি সাথে সাথে চেঙ্গাতলী বাজারে আসি এবং উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে বন্ধ করা দোকানঘরগুলো খোলার ব্যবস্থা করি।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া জানান, বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। এ বিষয়ে কেউ উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেনি। তাদের পক্ষ
থেকে অফিসিয়ালি অবহিত করা হলে পরবর্তীতে দুই উপজেলা প্রশাসন বসে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

সূত্র : দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ।

 

সর্বাধিক পঠিত