• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

শোকাবহ পরিবেশে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভা

শোককে শক্তিতে পরিণত করে জাতির জনকের দেখানো পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অঙ্গীকার

প্রকাশ:  ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০১:৪৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 শোক আর বিন¤্র শ্রদ্ধায় জাতীয় শোক দিবসে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেছে চাঁদপুর জেলাবাসী। হৃদয় নিংড়ানো শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে জাতীয় শোক দিবসের সকালে চাঁদপুর শহরের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অঙ্গীকারের পাদদেশে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুলে ফুলে ভরিয়ে দেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় শোককে শক্তিতে পরিণত করে জাতির জনকের দেখানো পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন আলোচকবৃন্দ। জঙ্গিমুক্ত অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়াসহ সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ও তাঁরা ব্যক্ত করেন।
    আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ দীপু মনি। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা, তাঁর পরিবার ও জাতীয় চারনেতা সহ সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, খুনি চক্র অবৈধ ক্ষমতা দখল করার জন্য জাতির জনককে হত্যা করেনি। যদি তা করা হতো তাহলে তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতো। তাঁর পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যা করতো না। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করে দেয়া, স্বাধীন বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তানী রাষ্ট্রে পরিণত করা। তাই তারা জাতির জনককে হত্যা করে ক্ষান্ত হননি, হত্যা করেছে তাঁর পরিবারসহ জাতীয় চার নেতাকে। তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তাঁর অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে চিরতরে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল, কিন্তু তা তারা পারেনি। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা পিতার স্বপ্ন পূরণে, দেশের মানুষের আশা আকাক্সক্ষা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশ আজ শিক্ষা, সংস্কৃতি, খাদ্য, স্বাস্থ্যসহ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ আজ নতুন নতুন উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে, দেশ আজ স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করছে, আমরা মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছি। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। বুলেট ট্রেন, পাতাল ট্রেন চালু করাসহ দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবার নতুন নতুন পকিল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। দেশের মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের পথে যখন ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন তখন দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিএনপি, জামাত নতুন নতুন ষড়যন্ত্র করে চলছে। তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে যখন কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা রাজপথে, তখন তারা এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য হিংসাত্মক রাজনীতির খেলায় মত্ত হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তারা তাতে সফল হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাত্র-ছাত্রীদের সব দাবি মেনে নিয়েছেন। ন্যায়সঙ্গত যে কোনো দাবি মেনে নেয়ার মনমানসিকতা আমার নেত্রীর রয়েছে। তবে কোনো অন্যায়ের সাথে আপস নয়। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির জনক আমাদের মাঝে নেই। তবে তাঁর আদর্শ, উদ্দেশ্য সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমাদের মাঝে রয়েছে। শোককে শক্তিতে পরিণত করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব-আজকের জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
    জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খানের সভাপ্রধানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ জিহাদুল কবির পিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ¦ নাছির উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ মঈনুল হাসান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিয্দ্ধাা ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, জেলা মুুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার মোঃ ইয়াকুব আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ আখন্দ ও সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী। চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবিদা সুলতানার যৌথ পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী অধ্যাপিকা মাসদুা নূর খান, পৌর মহিলা কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াছ ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতাউর রহমান পারভেজ। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, অঙ্গ ও সহযোগী  সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে শোকসভার স্থল ছিলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ। অনেকেই মিলনায়তনের ভেতরে স্থান না পেয়ে বাইরে অবস্থান নেন এবং পিনপতন নীরবতার মধ্য দিয়ে জাতির জনকের অবদানের কথা শোনেন।


সূত্র : চাঁদপুর কণ্ঠ