• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

তাদের ভুলে যাননি এসপি শামসুন্নাহার

প্রকাশ:  ১৪ আগস্ট ২০১৮, ০৮:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 সময় ২০১৬ সালের ২৪ নভেম্বর। কাতার প্রবাসী স্বামী নজির আহম্মদের  সাথে অভিমান করে এক বছরের শিশু ওমর ফারুকসহ তিন সন্তানকে ঘরে রেখেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন গৃহবধূ আছমা। সংবাদটি যথারীতি থানা পুলিশের মাধ্যমে ও পরদিন স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে দৃষ্টিগোচর হয় চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের। কেনো এই আত্মহনন? এ খবর জানতে শামসুন্নাহার ছুটে যান ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৪নং ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের চাপরাশির বাড়িতে। সেখানে আছমার আত্মহননের পর তার রেখে যাওয়া শিশু সন্তান ওসমান, আয়েশা ও ওমর ফারুককে দেখে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মাকে হারানো শিশুদের কান্নার রোল পুরো এলাকাকে প্রকম্পিত করে তোলে। চোখে জল আসে পুলিশ সুপারসহ অনেকেরই। সে সময় পুলিশ সুপার এ তিন শিশুর দায়িত্ব নেন। তিনি ঘোষণা দেন এই শিশুরা যাতে দুর্ভোগের শিকার না হয়, সে দিকসহ সকল কিছুই তিনি দেখবেন।
    সে থেকে নিজে না আসতে পারলেও নিয়মিত ওসমান, আয়েশা ও ওমর ফারুকদের খোঁজ খবর নিতেন। সর্বশেষ ১১ আগস্ট শনিবার ফরিদগঞ্জ থানার নতুন ফটকের উদ্বোধন শেষে সন্ধ্যার পর তিনি ছুটে যান গজারিয়া গ্রামে ওমর ফারুকদের কাছে। এ সময় তিনি তাদের বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী কিনে দেন। খোঁজ নেন কীভাবে চলে তাদের দিনলিপি। তিনি নজির আহম্মদের দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে অবুঝ এই তিন শিশুকে নিজের সন্তানের মতো দেখভাল করার অনুরোধ জানান। এ সময় তিনি উপস্থিত থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ আলম, পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব কুমার দাস, ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান সোহেলকে তাদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখার জন্যে বলেন। তিনি বলেন, আমি যেখানেই থাকি না কেন, আমি তাদের দেখভাল করবোই। শুধু আপনারা তাদের যে কোনো সমস্যার বিষয়ে আমাকে জানাবেন।
    এভাবেই গ্রামের একটি নিভৃত পল্লীতে ভালোবাসার বীজ অঙ্কুরোদগম করার আরেকটি নজির দেখালেন বিদায়ী চাঁদপুরের পুলিশ সুপার। অনেকেই বলেন, এসপি আসবেন এসপি যাবেন। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু  এসপি শামসুন্নাহার যে অন্য সকলের চেয়ে একটু ভিন্নতর তার প্রমাণ তিনি দিয়ে গেলেন।

সূত্র : চাঁদপুর কণ্ঠ