চাঁদপুর শহরে বাড়ছে বসতি ॥ বিলুপ্ত হচ্ছে পুকুর ও ডোবা, নালা, খাল, বিল
প্রাণ খুলে গোসলের আনন্দ হারাচ্ছে মানুষ
প্রায় বিলুপ্তির পথে চাঁদপুর শহরের বিভিন্নস্থানের পুকুর, দীঘি, ও ডোবা নালা, খাল বিল। একসময় শহর ও শহরের বাইরে বিভিন্নস্থানে চোখে পড়তো ছোট, বড় অসংখ্য দীঘি, পুকুর ও ডোবা নালা। আর ওইসব পুকুরে মানুষজন প্রতিদিন নিয়মিত আনন্দের সাথে তৃপ্তি মিটিয়ে গোসল করতো। কিন্তু দিনবদলের পরিবর্তনে ধীরে ধীরে চাঁদপুর শহরের সেই পুকুরের ঐতিহ্য যেনো হারিয়ে যাচ্ছে।
আগের তুলনায় এখন আর শহরের বিভিন্নস্থানে তেমন কোন ছোট বড় দীঘি বা পুকুর চোখে পড়েনা। চাঁদপুর শহরে হাতে গনা কয়েকটি পুকুর থাকলেও সেগুলোতে গোসল করার মতো উপযোগী না। কারন বর্তমানে শহরে যে ক,টি পুকুর রয়েছে সেগুলোর বেশির ভাগই আর্বজনা ও ময়লা পানিতে নিমর্জ্জিত।
গত কয়েক বছর ধরে ওইসকল পুকুর ও দীঘি গুলো ভরাট হয়ে বিলিন হয়ে গেছে তার ঐতিহ্য। কয়েক বছর পূর্বে শহরের যেসব পুকুরগুলো ভরাট হয়ে গেছে, সে পুকুরগুলো হলো, পালপাড়া বর্তমান আল- আমিন স্কুলের স্থানটি, রেলওয়ে হকার্স মার্কেট লেক, বাসস্ট্যান্ট জামে মসজিদ পুকুর, চাঁদপুর আদালত পাড়া পুকুর ও চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়াম দীঘিসহ শহরের আরো বেশ কিছু পুকুর ও ডোবা ভরাট হয়ে গেছে।
তবে যে সব পুকুরগুলো এখনো শহরে টিকে আছে তার মধ্যে জোড় পুকুর নামক পুকুরটিই সবচেয়ে আলোচিত। এর বাইরে রয়েছে, বাসস্ট্যান্ট শেরে-ই বাংলা ছাত্রাবাস পুকুর, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ পুকুর, টিবি হাসপাতাল পুকুর, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম পুকুর, রেলওয়ে ক্লাব রোড পুকুর, কাঁচা কলোনী ও ফায়ার হাউস বালুর মাঠ পুকুর। এসব পুকুর গুলো এখনো ঐতিহ্য ধরে রাখলেও পুকুর গুলোর বিশুদ্ধ পানির ঐতিহ্য ঠিকই হারিয়ে গেছে। কারন শহরে বসতি বেড়ে গিয়ে বিভিন্ন বাসা বাড়ির ময়লা আর্বজনার পানি গুলো ওইসকল পুকুরে পড়ে তার পানি দূষিত হচ্ছে। আর এসব পুকুরের পানি দূষিত হওয়ার কারনে শহরবাসি আগের তুলনায় এখন আর প্রান খুলে আনন্দের সাথে পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে গোসল করার মজা পাচ্ছেননা।
গত কয়েক বছর ধরে শহরে মানুষের বসতি বেড়ে যাওয়ায় শহর এবং শহরের নিকটতম স্থানে অনেক ডোবা নালা, খাল বিল ভরাট হয়ে গেছে। শহরে যতই মানুষের বসতি বাড়ছে ততোই বিভিন্ন ডোবা, নালা, খাল, বিল পুকুর ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এভাবেই দিনে দিনে বিলুপ্ত হওয়ার পথে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন পুকুর ও ডোবা নালা, খাল, বিল।
শহরের সচেতন মহলের অনেকের সাথে এসব পুকুরের বিষয়ে কথা হলে তারা বলেন, মানুষ যদি সচেতন হয় তাহলে চাঁদপুর শহরে পুকুরের ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হবে। যেসব পুকুর গুলো এখনো টিকে আছে সেগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। শহরবাসি সচেতন হলেই শহরের পুকুরের ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব হবে। কারন বিভিন্ন ডোবা, নালা ও পুকুর ভরাট না করে খাস জমিতে বাড়ি নির্মান করতে হবে। সে সঙ্গে পুকুরে ময়লা আর্বজনা না ফেলে তারা যদি সেগুলো নির্দিষ্টস্থানে ফেলে একদিকে যেমন পরিবেশ সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে পুকুরের পানিতে ময়লা আর্বজনা না পড়লে তার পানি বিশুদ্ধ হওয়ার কারনে আবারো হারানো দিনের মতো শহরবাসি পুকুরের পানিতে গা ভিজিয়ে প্রান খুলে গোসল করতে পারবে।